
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ফতুল্লায় নয়ন হত্যাকান্ডে নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনার বিরুদ্ধে উঠে এসেছে বিভিন্ন অপকর্মের আমলনামা। গায়ের গঠন ও সুন্দর হওয়ার সুবাদে নারীলোভী পুরুষদের কাছে ছিলো সে প্রিয়। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পিলকুনি এলাকাকে কয়েকটি নাদুস-নুদুস মেয়ে নিয়ে বাসাবাড়িতেই শুরু করে দেহ ব্যবসা। বিভিন্ন খদ্দেরের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমেই সে উক্ত ফ্লাটে নিয়ে আসতেন এবং চালাতের দেহব্যবসা। এ কাজে তাকে বিগত আওয়ামীলীগের সময়ে সহযোগিতা করতো সমাজের বিশেষ কিছু ব্যক্তি ও কতিপয় নেতা। এভাবেই ধীরে ধীরে টাকার উপর লোভ হলে আসে সাবিনার। এরপর যুক্ত হয় মাদক ব্যবসায়। স্থানীয়দের দেয়া তথ্যে জানা যায় যে, গাড়ি চুরি ও মাদকসহ প্রায় ১০টি মামলা রয়েছে সাবিনার হাতে নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার নয়নের। সাবিনাকে বিয়ের পর থেকে ১ম স্ত্রীর সাথে একটু দুরত্ব হলেও মাঝে মধ্যে যোগোযোগে থাকতেন। সে সময়ে নয়নের মাদক বিক্রির টাকাগুলো সাবিনার কাছেই রাখতো। নিহত নয়নের বাবা বলেন, তিন বছর পুর্বে একটি মাদক মামলায় নয়নের জামিনে বিষয়ে উচ্চ আদালতে আমি যাই। কিন্তু সুচতুর সাবিনা উচ্চ আদালতের সেই আইনজীবির কাছে গিয়ে তার কাছে নয়নের মামলার ফাইলটি চাইলে বিজ্ঞ আইনজীবি নয়নের বাবা সাথে যোগোযোগ করে সেই মামলার নথিপত্র সাবিনাকে বুঝিয়ে দেন। মামলায় জামিনের পরিবর্তে উল্টো তিন বছরের সাজা লাগিয়ে আমার ছেলেকে জেলে পাঠান এ সাবিনা। সে সময় সাবিনার কাছে নয়নের সাড়ে লাখ টাকা রক্ষিত ছিলো। গত মাসের ১৯ তারিখে আমরা নয়নকে জামিনে বের করি। এর সেই টাকা নিয়েই ঝগড়া হলে সাবিনা নয়নকে বলেন যে,সেই টাকা কুমিল্লায় একজনের কাছে জমা আছে। সেই টাকা আনতে কুমিল্লা যাবে এ মর্মেই নয়ন সেদিন সাবিনার বাড়িতে গিয়েছিলো। এ কথাগুলো বলেই অঝড়ে কান্না শুরু করেন নিহত নয়নের বৃদ্ধপিতা। এদিকে নয়ন জেলে থাকার সময় অন্যতম মাদক ব্যবসায়ী রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল,চয়নগংদের সাথে মাদক বিক্রির সিন্ডিকেটে পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে উঠে সাবিনা। তবে একাধিকসুত্রে জানা যায়, ৭০ লাখ টাকার একটি হেরোইনের চালান নিয়েই নয়ন-সাবিনা দ্বন্ধ দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যায় সাবিনা। সেই হেরোইনের সাথে যুক্ত ছিলো ঠোঙ্গা রাসেল, সাবিনার জামাতা জহির, চয়নসহ একাধিক মাদক বিক্রেতা। ঘটনার আগে গত শুক্রবার বিকেলে সাবিনার জামাতা জহিরের মুঠোফোনে ১মস্ত্রীর বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন নয়ন। নয়ন বাসা থেকে বের হয়ে জহিরের সাথে কথা বলে সাবিনার বাড়িতে যান। গত রবিবারে নয়ন হত্যাকান্ডের পুর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত সাবিনার বাড়িতে অবস্থান করেছেন। তবে স্থানীয়দের ধারনা ৩ লাখ টাকা নয় হোরোইনের বড় চালান নিয়েই সাবিনাগংদের পরামর্শক্রমেই নয়নকে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক স্থানীয় অনেকে বলেন, নয়ন হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাবিনার জামাতা জহিরের নাম না থাকাটাও একটা রহস্যজনক বিষয়। কারন সাবিনার মাদক বিক্রির অন্যতম পার্টনার হচ্ছে জামাতা জহির। নয়নের অনুপস্থিতিতেই অপর মাদক ব্যবসায়ী ঠোঙ্গা রাসেলের সাথে পরকিয়ার সর্ম্পকে জড়ায় সাবিনা। সাবিনার জামাতা জহিরের আপন বড়ভাইও কিন্তু দাপা ও ষ্টেশন এলাকার একজন চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী। তারা আরও জানান,সাবিনার মাত্রাতিরিক্ত অর্থলোভের কারনে বলি হতে হয়েছে নয়নকে। আমরা চাই নয়ন হত্যাকান্ডের বিষয়ে সাবিনা বড় মেয়ের জামাই জহিরের সর্ম্পৃক্ততা রয়েছে শতভাগ। তাকে যদি গ্রেফতার করে রিমান্ডে আনা হয় তাহলে সেই ৭০ লাখ টাকার হোরোইন এবং হত্যাকান্ডে আর কোন মাদক ব্যবসায়ী সর্ম্পক্ত রয়েছে তাও দ্রæত বের হয়ে আসবে। এদিকে নয়ন হত্যকান্ডে সাবিনা ও তার মেয়ে সুমনা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাতের আদালতে তারা এ জবানবন্দি দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান জানান, হত্যার দায় স্বীকার করে সাবিনা ও তার দুই মেয়ে সুমনা বিস্তারিতভাবে হত্যাকান্ডের মূল ঘটনা, জড়িতদের নাম এবং লাশ গুমের চেষ্টার বর্ণনা দিয়েছেন। পুলিশ জানায়, নিহত নয়ন তিন বছর কারাগারে থাকাকালীন সময়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ান রাসেল ওরফে ঠোঙা রাসেল। তারা একসাথে ইয়াবা সেবন করতেন। নয়ন কারাগার থেকে বেরিয়ে বিষয়টি জানতে পারলে দাম্পত্য কলহ চরমে ওঠে। গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে নয়নের সঙ্গে এ নিয়ে তুমুল ঝগড়ার একপর্যায়ে সাবিনাকে মারধর করে মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন নয়ন। এর আগে সাবিনা অন্য একটি মোবাইল দিয়ে রাসেলকে বাসায় আসতে বলেন। নয়ন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় গেটের সামনে রাসেলের সঙ্গে মুখোমুখি হন। তখন দু’জনের মধ্যে ঝগড়া বাধে। এরপর রাসেল ও সাবিনা নয়নকে টেনে ফ্ল্যাটের ভিতরে নিয়ে যায়। রুমের ভেতরে কালো হাতলযুক্ত স্টিলের লাঠি দিয়ে নয়নের মাথায় একাধিক আঘাত করে অচেতন করে ফেলা হয়। এরপর সুইচ গিয়ার ও ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়।হত্যার সময় সাবিনার প্রথম স্বামীর ঘরের দুই মেয়ে সুমনা ও সানজিদা পাশের রুমে ছিল। পরে সাবিনা বড় মেয়ে সুমনাকে নানির বাসায় ও ছোট মেয়ে সানজিদাকে পরিচিতজনের বাসায় রেখে আসে। রাতে সাবিনা ও রাসেল ফের বাসায় ফিরে যায়। পরদিন সন্ধ্যায় রাসেল তার পরিচিত চয়নকে ঘটনাটি খুলে বলে। চয়ন লাশ গুমের আশ্বাস দেয়। তারা দোকান থেকে হ্যাকসো বেøড, স্কচটেপ ও ইয়াবা কিনে বাসায় ফিরে আসে। এরপর সাবিনা, রাসেল ও চয়ন তিনজনই লাশের পাশে বসে ইয়াবা সেবন করে। পরে হ্যাকসো বেড দিয়ে নয়নের পা দুটি বিচ্ছিন্ন করে শরীরের অংশ ড্রামে ভরে এবং পা দুটি প্লাস্টিক ও কস্টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় তোষকের ভেতরে লুকিয়ে রাখে। লাশ ফেলার জন্য তারা জালকুড়ি এলাকা থেকে একটি অটোরিকশা ভাড়া করে দক্ষিণ শিয়াচর মাওয়া মার্কেটের পেছনের ঝোপে ড্রামটি ফেলে আসে। পরে চয়ন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ড্রামভর্তি লাশটি উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনসহ জড়িত সাতজনকে প্রেফতার করে পুলিশ।
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জে আইনের শাসন কড়াকড়ি ভাবে প্রয়োগ না হওয়ার ফলে শহরে চলাচল সাধারণ নগরবাসীর জন্য এক বিড়ম্ভনা। শহরে ব্যটারি চালিত ইজিবাইক দিন দিন বাড়ছে। ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় পথচারিরা ফুটপাত ব্যবহার করতে পারছেন না। বন্ধন ও উৎসব বাসগুলি চেম্বার রোডের পুরোটাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দখল করে রাখে। রাত ৮টার পর থেকে শহীদ […]
মোবায়েদুর রহমান ক্ষমতার করিডোর থেকে যেসব পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো শুনে মনে হচ্ছে, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সেটি শেষ পর্যন্ত হয়তো কেটে যাবে। ঐকমত্য কমিশনের কার্যকালের সর্বশেষ মেয়াদ ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু জুলাই সনদ বাস্তবায়ন শেষ মুহূর্তে আটকে যাওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা স্বয়ং বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছেন। তার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দেশে এমন […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯