আ’লীগে দুরত্ব আরো বাড়ছে!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগে দুর্বার গতিতে নেতাদের মধ্যে দুরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে একই দলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেয়ায় নিজ দলের নেতাদের মধ্যে দুরত্ব বাড়তে শুরু করেছে। সকলেই নৌকা প্রতীক পাওয়ার আশায় মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দিয়েছে। বিগত সময় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিনা ভোটে পদ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করা হয়েছে। এবার তা ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের প্রক্রীয় শুরু হয়। আর এ সুযোগে এক দলের মধ্যেই এ পর্যন্ত সভাপতি পদেই ১০ জনকে মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দেয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। তবে এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে এমন গুঞ্জনও চলছে শহরময়। তবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। তিনি যাকে মনোনয়ন দিবেন তিনি পাবেন নৌকা প্রতীক। তবে নৌকা না পেলেও কেহ কেহ সতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে লড়বেন এমনট্ওা শুনা যাচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত কি হয় তা সময়ই বলে দিবে। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসাবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই, সহ- সভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবু চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, শ্রমিক লীগ নেতা মতিন মাস্টার, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আরজু রহমান ভ’ইয়া, নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের স্পেশাল পিপি ও আওয়ামীলীগ নেতা রাকিব উদ্দিন এবং সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান। মনোনয়ন যুদ্ধে নেমে এ সকল নেতাদের মধ্যে দুরত্ব বাড়তে পারে এমনটাই আশঙ্কা করছেন তৃনমূল। তবে সকল প্রার্থীই এক বাক্যে বলে যাচ্ছেন, শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে সকলেই কাজ করবেন। যদি একজন প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় আর তাকে সন্মান জানিয়ে সকলেই নিজ নিজ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় তবে আর বোঠের প্রয়োজন হয় না। তখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী বিজয়ী হয়ে যাবেন। আর তা হবে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান। যেহেতু জেলা পরিষদ নির্বাচনে একমাত্র আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি তাতে করে গণতন্ত্র রক্ষা হলো না। সেই বিনা ভোটের চেয়ারম্যানের তকমা নিয়ে পাঁচটি অতিবাহিত করতে হবে। এছাড়াও চির প্রতিদ্বন্দ্বি উত্তর মেরুর শামীম ওসমান ও দক্ষিণ মেরার মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী সোনারগাঁয়ের সম্মেলনে এক মঞ্চে বসলেও তাদের মধ্যে দুরত্ব অনেক। কেহ কারো সাথে কথা বলেনি। সেই মঞ্চে দু’জনেই নিজ নিজ অবস্থা জানান দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। সেই মঞ্চে মেয়র আইভী বলেছিলেন, আইভী বলেন, সোনারগাঁয়ে কি এমন হয়েছে যে বার বার এখানে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে হবে। নারায়ণগঞ্জে না হয় কারণ ছিল যে জোহা কাকার ছেলেকে (সদর-বন্দর আসনের এমপি সেলিম ওসমান) দিতে হবে। কিন্তু সোনারগাঁয়ে যার নাম ছিল না, নিশানা ছিল না তাকে কেন দিতে হবে। সোনারগাঁয়ের আওয়ামী লীগের নেতারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না নারায়ণগঞ্জের হস্তক্ষেপের কারণে। এখন অনেকেই অমুক ভাই তমুক ভাইয়ের নামে স্লোগান দেয়। কিন্তু ক্ষমতা না থাকলে আর কেউ থাকে না। তারা ভেসে যাবে। তাই স্লোগান দিতে হবে আমাদের দলের ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে। একই মঞ্চে সাংসদ শামীম ওসমান বলেছিলেন, কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জে জনসভা ডেকেছিলাম। সেটা অনেকেরই পছন্দ হয়নি। তারা বলেছিল শামীম ওসমানের জনসভা। আমি শেখ হাসিনার কর্মী শেখ হাসিনার কর্মী হয়েই মরতে চাই। ভাইয়ে ভাইয়ে অনেক বিরোধ থাকে। সকলের কাছে অনুরোধ জানাতে চাই, আসুন ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা এক থাকি। কারণ বাংলাদেশ বাঁচাতে হবে। সেজন্য শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে হবে। আমরা খেলবো সমস্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে। এই দুই নেতার অনুসারিদের মধ্যে রয়েছে অনেক দুরত্ব। এ দুই নেতা রয়েছেন কে কাকে ঘায়েল করে মাঠে টিকে থাকবেন। সর মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ দুরত্ব আগে থেকেই থাকলেও আবার যেন নতুন করে তা প্রমারিত হচ্ছে এমনটা ধারণা করছেন তৃনমূল নেতাকর্মীরা। এভাবেই ক্ষমতার লাড়াইতে আওয়ামীলীগে বিরোধ চলছে যুগ যুগ ধরে। এর যেন শেষ নেই।