আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১০:৩২

আ’লীগ-বিএনপিতে উত্তপ্ত না’গঞ্জ

ডান্ডিবার্তা | ০৭ আগস্ট, ২০২৩ | ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নানা ঘটনা-অঘটনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বছরের আরেকটি মাস। জুলাই মাসজুড়েই প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ঘিরে উত্তপ্ত ছিল নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। দুই দলের নেতৃবৃন্দের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, মামলা-গ্রেফতার পুরো মাসজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এর আগে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ কয়েকটি দাবি আদায়ে গত কয়েকমাস ধরেই একের পর এক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নারায়ণগঞ্জের সফলভাবে কর্মসূচি পালন করার মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি। এদিকে গত ২৮ জুলাই সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করে বিএনপি। যে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। এই মহাসমাবেশ থেকে পরদিন অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করে বিএনপি। অন্যদিকে ২৮ জুলাই বিএনপির কর্মসূচির পাশেই বায়তুল মোকারমের দক্ষিণ গেটে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিয়ে তারুণ্যের জয়যাত্রা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এই কর্মসূচিতে একেএম শামীম ওসমান হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বিশাল শোডাউন করে ঢাকায় তাক লাগিয়ে দেন। বৃষ্টিতে ভিজে স্লোগানে স্লোগানে মাতোয়ারা করেন নেতাকর্মীদের। তার স্বয়ং উপস্থিতি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে তোলে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলাটি রাজধানী লাগোয়া হওয়ায় ঢাকায় যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের। দেশের যেকোনো রাজনৈতিক ইস্যুতে নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকেই সবার আগে ঘন্টা বাজতে শুরু করে। অন্যদিকে গত বছরের শুরু থেকে বিএনপি জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হতে শুরু থেকেই তর্জন গর্জন শুরু করেন শামীম ওসমান। গত ২৯ জুলাই সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের তুমুল সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় পুুলিশের কয়েকজন সদস্য থেকে শুরু করে আহত হোন বিএনপির ২২ নেতাকর্মী। তবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, শান্তিপূর্ণভাবে তারা সেদিন মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ নির্বিচারে হামলা করে আমাদের নেতাকর্মীদের আহত করেছেন। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, সেদিন বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে তারা ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। জানা যায়, এ ঘটনায় টিটু ছাড়াও আহত হোন বিএনপির আরও ২১ নেতাকর্মী। তবে তারা বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। এদিকে আহত শহীদুল ইসলাম টিটুর বিষয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা সার্বক্ষণিক আহত টিটুর খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে জানা যায়। পুলিশ-বিএনপির নেতাকর্মীদের এই সংঘর্ষের ঘটনায় ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন ও তার দুই ছেলে কাউন্সিলর সাদরিল, কৃষক দল নেতা রিফাতকেও এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরেরও নামও রয়েছে এজাহারে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মুমিনুল হক বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন। এতে ঘটনাস্থল থেকে আটক ৭ জন সহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ৪০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এইচএম আনোয়ার প্রধান (৪৭), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য মো. জসিম উদ্দিন (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ২নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক মোঃ ফারুক (৪৫), মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান (৪২), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য ইউসুফ আলী (৬০), গজারিয়া থানা ছাত্রদলের সভাপতি মাহাদী ইসলাম বাবু (৩৫), মুন্সিগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সভাপতি মো. আবুল হাসেম (৩৪), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মো. মাজেদুল ইসলাম (৫৮), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি জিএম সাদরিল (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন (৪৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীন (৪৭), জামায়াতে ইসলামের সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক (৩৮), সিদ্ধিরগঞ্জ ২নং ওয়ার্ড বিএনপির মোহাম্মদ আলী, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি মো. সুবেদ আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান পলাশ (৩৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুব দল সদস্য আনোয়ার হোসেন সানি (৩৮), জাকির হোসেন (৪৫), মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক রাকিবুর রহমান সাগর (৩৬), আতিক টেম্পু আতিক (৪২), মো. আতিকুর রহমান প্রধান (২৩), কামরুল হাসান সেন্টু (৪০), জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব মো. রিফাত (৩০)। এর আগে চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে যুবদলকর্মী শাওন প্রধান নিহত হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির পরিস্থিতি কিছুদিন গরম ছিল। তখন সংঘর্ষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২ সেপ্টেম্বর ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৫ হাজার জনকে আসামি করে দুটি মামলা করে পুলিশ। এরপর কিছুদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও নবনির্বাচিত জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে উত্তেজনা আবার বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে গত ১০ ডিসেম্বর ১০ দফা দাবি নিয়ে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ, আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙ্গচুর, বিএনপির বিরুদ্ধে ১০টি মামলা নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা