আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | ভোর ৫:৩২

গ্রেফতার আতঙ্কে না’গঞ্জ বিএনপি!

ডান্ডিবার্তা | ০৮ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট কেন্দ্র ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর ফলে গত কয়েকদিন ধরে ঘরছাড়া রয়েছেন বিএনপি। তাদের পরিবারও রয়েছেন আতঙ্কে। অনেকেই আবার তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। তবে কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী যেকোনো কর্মসূচি একের পর এক সফলভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন জেলা বিএনপি। সবাই উপস্থিত হতে না পারলেও কর্মসূচিগুলোতে আগের মতোই রেকর্ডসংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটছে। এর ফলে শত শত মামলা, গ্রেফতারের পরও রাজপথমুখী জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ভাষ্য, তারা এসব মামলা, গ্রেফতারে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে, গ্রেফতার করে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। তারা এসব এখন ভয় পান না। যতোই বাধা আসুক তারা তাদের কর্মসূচি সফল করতে ঐক্যবদ্ধ। দেয়ালে তাদের পিঠ ঠেকে গেছে তাই তারা এখন এইসব নিয়ে চিন্তা করছেন না। তারা চলমান এই আন্দোলন সংগ্রাম যেকোনো মূল্যে সচল রাখতে মরিয়া। এর আগে, গত ২৯ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান করতে চাইলে তাতে পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটতে থাকে। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ রাবার বুলেট ছুটতে থাকেন। দুই পক্ষের এই সংঘর্ষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) গোলাম মোস্তফাসহ পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হোন। পাশাপাশি বিএনপির ২২ নেতাকর্মী আহত হোন। কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হোন। গুরুতর আহত হোন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু। পুলিশের গুলিতে তার এক চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। আরেক চোখ ঠিক হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। আহত শহীদুল ইসলাম টিটুর বিষয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা সার্বক্ষণিক আহত টিটুর খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে জানা যায়। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, শান্তিপূর্ণভাবে তারা সেদিন মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ নির্বিচারে হামলা করে আমাদের নেতাকর্মীদের আহত করেছেন। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, সেদিন বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে তারা ৭১ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। পুলিশ-বিএনপির নেতাকর্মীদের এই সংঘর্ষের ঘটনায় ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন ও তার দুই ছেলে কাউন্সিলর সাদরিল, কৃষক দল নেতা রিফাতকেও এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরের নামও রয়েছে এজাহারে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মুমিনুল হক বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন। এতে ঘটনাস্থল থেকে আটক ৭ জনসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এইচএম আনোয়ার প্রধান (৪৭), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য মো. জসিম উদ্দিন (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ২নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. ফারুক (৪৫), মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান (৪২), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য ইউসুফ আলী (৬০), গজারিয়া থানা ছাত্রদলের সভাপতি মাহাদী ইসলাম বাবু (৩৫), মুন্সিগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সভাপতি মো. আবুল হাসেম (৩৪), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মো. মাজেদুল ইসলাম (৫৮), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি জিএম সাদরিল (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন (৪৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীন (৪৭), জামায়াতে ইসলামের সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক (৩৮), সিদ্ধিরগঞ্জ ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ আলী, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি মো. সুবেদ আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান পলাশ (৩৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুব দল সদস্য আনোয়ার হোসেন সানি (৩৮), জাকির হোসেন (৪৫), মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক রাকিবুর রহমান সাগর (৩৬), আতিক টেম্পু আতিক (৪২), মো. আতিকুর রহমান প্রধান (২৩), কামরুল হাসান সেন্টু (৪০), জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মো. রিফাত (৩০)। এদিকে গত বছরের ১৫ নভেম্বর মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আহবায়ক হওয়ার পর থেকেই তার নেতৃত্বে বিএনপি দল আগের তুলনায় সুসংগঠিত এবং রাজপথমুখী হতে শুরু করেছে। তাই তাকে দমানোর জন্য এইসব মামলা, গ্রেফতার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ধারণা, এই ঘটনার জের ধরে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এই আতঙ্কে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনসহ মামলার আসামিরা ঘরছাড়া রয়েছেন। নেতাকর্মীরা নিজ এলাকায় অবস্থান করলে যেকোনো অজুহাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করতে পারেন। সেজন্য তারা এখন অন্য এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে এই মামলা দায়ের হওয়ার পর জেলা বিএনপি যে কয়টি কর্মসূচি পালন করেছে এগুলোতে মামলার অধিকাংশ আসামি উপস্থিত ছিলেন। এর আগে এই মামলার পরদিন জেলা বিএনপির গণসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, কৃষক দলের সদস্য সচিব কায়সার রিফাতসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। ওই গণসমাবেশে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বক্তব্যকালে বলেন, কার নির্দেশে মামলা হয় তা আমাদের সবারই জানা। আমাদের রক্তচক্ষু দেখাবেন না। আপনাদের রক্তচক্ষুকে আমরা এখন ভয় পাই না। গিয়াসের এই কথাতেই স্পষ্ট জেলা বিএনপিকে এখন আর দমিয়ে রাখা সম্ভব না। তাদের আটকানোর চেষ্টা করা হলে তারা আরও দুর্বার গতিতে সামনের পথে এগিয়ে যাবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা