আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ২:৪০

না’গঞ্জ যুবদলে বিভাজন শুরু

ডান্ডিবার্তা | ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দীর্ঘদিন পর নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলেও শুরুতেই দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোন্দল দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তিনজনের এই আহবায়ক কমিটিতে সদস্য সচিব মশিউর রনিকে মাইনাস করে আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নিজের ছবি দিয়ে ব্যানার ফেস্টুন বানিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন খায়রুল ইসলাম সজিব। এর ফলে দলের কমিটি গঠনের কয়েকদিনের বেলাতেই ভাঙনের আভাস দেখা দিয়েছে দলটির মধ্যে। তবে মশিউর রহমান রনির সঙ্গে খায়রুল ইসলাম সজীবের এই বিরোধ নতুন কোনো বিষয় নয়। এর আগে তারা দুজনই জেলা ছাত্রদলের নেতৃত্বে থাকাকালীন সময়েও একাধিকবার এমন বিরোধে লিপ্ত হয়েছিল। যা এখন জেলা যুবদলেও দেখা দিয়েছে। তবে এই বিরোধের জন্য শুধুমাত্র খায়রুল ইসলাম সজীব একাই দায়ী। জানা যায়, বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেল তিনটায় ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সজিবের নেতৃত্বে সোনারগাঁ থানা যুবদলের শোডাউনটি নটরডেম কলেজ হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে রাজধানী সুপার মার্কেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় পুরো শোডাউনের ব্যানার, ফেস্টুনে শুধুমাত্র সাদেক এবং সজীবের ছবি ছিল। কোনো ফেস্টুনেই জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির ছবি ছিল না। শোডাউনের এই ছবি পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন যুবদলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, এই কমিটি হওয়ার আগে জেলা যুবদলকে একা আগলে রেখেছিলেন মশিউর রহমান রনি। অথচ নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন হওয়া মাত্রই মশিউর রহমান রনিকে মাইনাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এই কোন্দল দলের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না এমনটাই মনে করছেন নেতাকর্মীরা। তাই এখনই খায়রুল ইসলাম সজীবের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামীতেও তিনি এমন কর্মকা- আবারও ঘটাতে পারেন এমনটাই মনে করছেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। এর আগে, গত মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের তিন সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন কমিটির অনুমোদন দেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক পদে আছেন সাদেকুর রহমান সাদেক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজীব ও সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি। এদিকে, গত ৩১ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জেলা যুবদলের সবাইকে ব্যানার ‘ফেস্টুনে তিনজনের ছবি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি লিখেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের নেতৃবৃন্দের অবগত করছি, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার করেন তাহলে অবশ্যই তিনজনের ছবি সমন্বয় করে দিবেন, ধন্যবাদ।’ কিন্তু আহবায়কের নির্দেশনা অমান্য করে সংগঠনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে খায়রুল ইসলাম সজিবের এ ধরনের কর্মকা- সংগঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এর আগে মশিউর রহমান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এবং খায়রুল ইসলাম সজীব সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় রনিকে বারবার অপমান অপদস্থ করতে এবং নেতাকর্মীদের কাছে হেয় করতে বিদ্রোহীদের নিয়ে মিশনে নেমেছিলেন। শুধু তাই নয় তখন জেলা ছাত্রদলের বাকি থাকা ইউনিট কমিটিগুলো যেন না হয় সেজন্য নানা অজুহাতে কমিটিতে স্বাক্ষর করতেন না সজীব। পরবর্তীতে জেলা বিএনপির সাথে অঙ্গ সংগঠনের বৈঠকে না থেকে বিদ্রোহীদের দিয়ে রনিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন সজীব। আর এ পরিকল্পনায় ফতুল্লা বিএনপির ও জেলা বিএনপির একজন সদস্য পেছন থেকে কলকাঠি নাড়েন বলে অভিযোগ উঠেছিল। নিজের স্বাক্ষর করা ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের মাঠে নামিয়ে তাদেরকে দিয়ে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করানোর পেছনেও সজীবের হাত রয়েছে বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিল। অভিযোগের পরও বিদ্রোহীদের সাথে একাধিকবার দেখা গিয়েছিল সজীবকে। এছাড়া ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের বিদ্রোহী কমিটির সমন্বয় সাগর সিদ্দিকির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করেছিলেন সজীব। পরবর্তীতে জানা যায়, নিজের স্বাক্ষর করা ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এবং নিজের সভাপতি মশিউর রহমান রনিকে অপদস্থ করার মিশন নিয়ে সজীবের কাজ করার পেছনে কাজ করেছিল সোনারগাঁ থানা ছাত্রদলের কমিটি। কমিটি সজীব নিজের আয়ত্তে রাখতে এবং সেখানে রনি ও অন্যানদের কোন প্রভাব যেন না থাকে সেজন্য চাপ সৃষ্টি করতেই এ কাজ করেছিলেন সজীব। বর্তমানে জেলা যুবদলে প্রবেশ করে তিনি আবারও এমন কর্মকা- ঘটানো শুরু করেছেন। এর ফলে সজীবকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এর আগে, গত বছরের ১৬ মার্চ কেন্দ্রীয় যুবদলের তৎকালীন সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিন সদস্যবিশিষ্ট জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তখন কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোলাম ফারুক খোকনকে যিনি বর্তমানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আর সদস্য সচিব করা হয় মশিউর রহমান রনিকে। এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর গোলাম ফারুক খোকন জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের দায়িত্ব লাভ করেন। অর্থাৎ তিনি জেলা বিএনপিতে যুক্ত হওয়ার পর থেকে জেলা যুবদলের মূল দায়িত্ব পড়ে সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির উপর। তিনি একাই ওই সময়ে দলকে সামলিয়ে যান। গোলাম ফারুক খোকনের অনুপস্থিতি তিনি কাউকে টের পেতে দেননি। জেলা বিএনপির প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে তার নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক যুবদলের নেতাকর্মী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে আসতেন। রনির বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর অনুপ্রেরণা দিয়ে যায় জেলা যুবদলের অন্যান্য নেতাকর্মীদের। কিন্তু নতুন কমিটিতে বিতর্কিত সজীবের আগমনে যুবদলের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা শঙ্কা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা