না’গঞ্জে বাম নেতারা নিরব

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গণ অনকেটাই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। একদিকে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে বিএনপি দফায় দফায় তাদের চলমান ১ দফা দাবির আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক শান্তি সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। আবার ইসলামী আন্দোলনসহ জামায়েত ও বিশাল বড় বড় সমাবেশ পালন করে যাচ্ছে। কিন্তু বিগত দিনে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের পছন্দের রাজনীতি বাম গণতান্ত্রিক জোট বিশাল আকারে লোক জমায়েত করে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে পারছে না। যার কারণে বাম রাজনীতির কোন ভবিষ্যত দেখছে না নেতৃবৃন্দ। যার কারণে দেশের সাধারণ জনগণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির সাথেই বেশি ঝুঁকছে। অপরদিকে বাম গণতান্ত্রিক জোট দেশের সাধারণ জনগণের সাথে তাদের সম্পর্ক বিগত দিন থেকে এখন অনেকটাই কমতির দিকে। যার কারণ বলে অনেকেই মনে করছে বামের নেতৃবৃন্দরা সাধারণ জনগনের প্রতি আস্থা আনতে ব্যর্থতার প্রমান দিচ্ছেন। অপরদিকে বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন জোটে একত্রিত হয়ে ব্যাপক আন্দোলনের রূপ গঠন নিয়ে চিন্তা করছে ও তা রাজপথে প্রয়োগ করছে কিন্তু বাম গণতান্ত্রিক জোট কোন বড় বিরোধী দলের সাথে জোট না হয়ে একা একা একটি আলাদা শক্তি প্রয়োগের বেড়াজালে আটকে পরে এখন কর্মীবিহীন হয়ে পরছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিএনপি রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জে দফায় দফায় সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে এরই মাঝে ১ দফা দাবি সরকারের পদত্যাগ নিয়ে ও তাদের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তাদের সাথে বিভিন্ন জোটের বিরোধী দলগুলো সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এছাড়া ও সরকারের বিরুদ্ধে নানা আল্টিমেটাম ও দিয়ে যাচ্ছে অপর দিকে আওয়ামী লীগ তাদের গদি রক্ষাত্বে বর্তমানে বিএনপি ও বিরোধী সকল দলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তারা ও সমাবশে, মহাসমাবেশ, শান্তি সমাবেশ ইত্যাদি বড় বড় কর্মসূচির ডাক দিয়ে যাচ্ছে। যাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গণ অকেটাই উত্তপ্ত। এদিকে দেশের আরেক বিরোধী দল যা স্বাধীনতার পর ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছিলেন সে দল বামগণতান্ত্রিক জোট দেড় দশক সময় ধরে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা নামে একটি জোটের মাধ্যমে আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই আন্দোলনে তার একদিকে যেমন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না তাই সমর্থন ও আর আগের মতো বেশি পাচ্ছে না। যার কারণে বাম দলের নেতাকর্মীরা নিজেরা বিকশিত হতে পারছে না। এদিকে তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো বড় কোন আন্দোলন রাজপথে দেখাতে এখনো এমন শক্তি করতে পারেনি বলে দাবি তাদের এছাড়া ও তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে কোনভাবেই বিশ্বাস করে না। তারা মনে করে এই দুই-দলই ক্ষমতার লোভে পরে রাজনীতি করে যাচ্ছে তা ছাড়া দেশের জনগণের প্রতি তাদের মূল্যবোধ বা চিন্তা ভাবনা নেই। যার কারণে তারা কোন দলের সাথে জোট হচ্ছে না শুধু তাদের মতো চিন্তা ভাবনা কারী কিছু ছোট ছোট সংগঠনের সাথে তারা জোট করছে তার মাধ্যমে দেশে যে বৃহত্তম কিছু হবে তা আশা করা যায় না। অপর দিকে তারা ছোট পরিসরে আন্দোলন করছে যা দেশের জনগণের চোখ না পরার মতোই যার কারণে সকলে বাম গণতান্ত্রিক জোট নেই বলেই মনে করছে। এছাড়া ও তৃণমূলের দাবি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভূমিকা থাকবে একবারে তলানীতে। এ বিষয়ে কমিউনিষ্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা বাম রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিজেদের মতো করে নিয়মিত নিরপক্ষে নির্বাচন ও দেশের সকল অধিকার ফিরিয়ে দিতে দফায় দফায় নিয়মিত আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার আওতাধীন সকল থানা ও উপজেলা পর্যায়ে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। আর সকল আন্দোলনে আমরা কিন্তু অন্য বিরোধী দলগুলোর মতো ভূমিকা না রাখতে পারলে ও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী আন্দোলন করে যাচ্ছি। অন্যদিকে আরো বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা তো সাংবাদিক দিয়ে ফটোসেশনের মাধ্যমে দৃশ্যমান হয় আর আমরা তো সাংবাদিক দিয়ে এতোটা কর্ভার করাই না আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সাধারণ মানুষের হয়ে আমরা রাজপথে কাজ করে যাচ্ছি। আর চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে আমরা আমাদের চলমান আন্দোলন আরো তীব্রতর করছি। আমাদের মূল একটাই দাবি এই সরকারের অধীনে আর নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না আমরা এই সরকারকে পদত্যাগ করিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো। এ বিষয়ে ন্যাপ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন বলেন, বাম গণতান্ত্রিক জোট তো সাধারণ মানুষের সকল চাহিদার প্রতি আন্দোলন সংগ্রাম করা একটি সংগঠন। বর্তমানে দেশের যে অবস্থা মানুষ শুধু টাকার পিছনে ও কোথায় গেলে বেশি লাভ, কোথায় চাঁদাবাজী করা যাবে সেই লক্ষ্যে নিয়েই থাকে যার কারণে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সাথে মানুষ না থাকে যেখানে লাভ রয়েছে সেখানেই দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছে। আর ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি যেভাবে রাজপথে সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মতো এতো জমায়েত করে সভা-সমাবেশ পরিচালনা করা বাম গণতান্ত্রিক জোটের সম্ভব নয়। কারণ স্বাধীনতার পর পরই কিন্তু বাম গণতান্ত্রিক জোটের একটা প্রভাব ছিলো কিন্তু বর্তমানে আর সেই প্রভাবটা নেই। কেউ মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে চায় না সবাই লাভ খুঁজে। বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিখিল দাস বলেন, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আন্দোলন করে যাচ্ছি। আর বর্তমানে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতেই আমাদের বাম গণতান্ত্রিক জোটের আন্দোলন প্রচলিত রয়েছে সামনে আমরা আমাদের আন্দোলনের গতি আরো বাড়বে এছাড়া ও আমরা তো আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো শক্তি রাজপথে দেখাতে পারি না আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী রাজপথে আমরা থাকি।