না’গঞ্জে হকারদের লাগাতার কর্মসূচির হুশিয়ারি
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ হকার নেতারা আগামী সোমবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী সোমবার পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো। এর আগে যদি আলোচনা করে আমাদের দাবি দাওয়া মেনে নেয়া হয় তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি সোমবারের মধ্যে তা মেনে না নেয়, তাহলে মঙ্গলবার থেকে আমাদের লাগাতার কর্মসূচি শুরু। আমাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরাও থাকবে। সকল হকাররা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় নামবো। আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম চলছে চলবেই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না। তারা বলেন, সারাদেশে ফুটপাতে হকার আছে, তাহলে নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে কি সমস্যা! । নারায়ণগঞ্জে সবকিছু ঠিক চলছে। খালি সমস্যা হকারদের। আমরা কি মানুষ না। আমাদের জন্য কি আপনাদের মায়া হয় না। সামনে রমজান মাস। আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে একটু বাঁচতে চাই। দয়া করে রমজানকে সামনে রেখে বিকাল পাঁচটা থেকে আমাদেরকে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে ফুটপাতে দোকানদারি করতে দিন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় চাষাড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদে ও পুনর্বাসনের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদের অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে হকার নেতারা এ হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তব্যে রাখেন। হকার নেতারা বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ও এমপি শামীম ওসমান এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রতি আমাদের আকুল আবেদন। দয়া করে আমাদেরকে পরিবার ও পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে দেন। আপনারা নারায়ণগঞ্জের মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বন্ধ করুন। তাদেরকে বন্ধ করতে পারেন না, পারেন শুধু হকার উচ্ছেদ করতে। হকাররা নেতারা বলেন, এই সরকার গরীব বান্ধব সরকার। কাউকে উচ্ছেদ করতে হলে আগে পুনর্বাসন করতে হয়। পুনর্বাসন ছাড়া কোনো হকার উচ্ছেদ করা চলবে না। কিন্তু আমাদের নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিরা কোনো রকম পুনর্বাসন ছাড়াই আমাদেরকে হঠাৎ করে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। এটা কোনো মানবতা হতে পারে না। তাঁরা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে হকার উচ্ছেদ হলেও কোনো দোকান মালিক সমিতি রাস্তায় নামে। কিন্তু আমাদের উচ্ছেদ পর নারায়ণগঞ্জ দোকান মালিক সমিতি আমাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছে। আমরা জানি আপনারা কাদের ইশারায় রাজপথে নেমেছে। কারন আপনারা মার্কেটে ১৫০টাকার জিনিসপত্র ৩০০টাকা বিক্রি করেন। আপনারা মানুষের পকেট কাটার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছেন। নারায়ণগঞ্জের ৯০% মানুষ মার্কেট থেকে জিনিসপত্র কিনে না। তারা সবাই ফুটপাত থেকে জিনিসপত্র কিনে থাকেন। কারন তারা হকারদের ভালোবাসেন। তাঁরা আরও বলেন, হকারদের কারনে নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট হয় না। যানজট হয় অটোরিকশা ও অবৈধ স্ট্যান্ডের কারনে। সেই গুলো উচ্ছেদ হলেও এখনও শহরে অবাধে চলছে অটোরিকশা। অবৈধ স্ট্যান্ডের এখনও বহাল রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদের আহŸায়ক হকারনেতা আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্যে রাখেন, শ্রমিকনেতা হাফিজুল ইসলাম, আবদুল হাই শরীফ, ইকবাল হোসেন, এম এ শাহিন, মহানগর হকার্স লীগের সভাপতি আঃ রহিম মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক মো. পলাশ, হকার নেতা মো. রানা, মো. শাহিন, নিলুফা বেগম প্রমুখ। অবস্থান কর্মসূচি শেষে চাষাড়া শহীদ মিনার হকাররা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের চাষাড়া থেকে শুরু করে দুই রেলগেইট হয়ে আবারও শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। অপরদিকে নাগরিক সমস্যা সমাধানে আবারও বৈঠকে বসছে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে অংশ নিবেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। বৈঠকে যানজট, হকার সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসবেন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৩ ফেব্রæয়ারি নগর সমস্যা সমাধানে এক গোল টেবিলে বসেছিলেন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সেই বৈঠকে আলোচিনা সাপেক্ষে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠকের পরদিন থেকেই নগরীতে ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।