আজ শনিবার | ৯ আগস্ট ২০২৫ | ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৪ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৫:৪১
শিরোনাম:
নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে আ’লীগ    ♦     জলাবদ্ধতা নিরসনে জনগণের পাশে নেই বিএনপি নেতারা    ♦     কলকাতায় আ’লীগের ‌‘পার্টি অফিস’    ♦     অন্তর্বর্তি সরকারের যে ভাবে যাত্রা শুরু    ♦     রূপগঞ্জে অবৈধ ভরাটের ফলে মাসের পর মাস পানিবন্দি অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ    ♦     খেলাফত মজলিসের নির্বাচনী প্রস্তুতি সমাবেশ    ♦     ইউনূস সরকারের চ্যালেঞ্জের এক বছর    ♦     ভূইগড়ে সন্ত্রাস চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল    ♦     ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে শয্যার অভাবে মেঝেতে রোগীর চিকিৎসা    ♦     আগামী নির্বাচনে বিএনপির সফলতা যেনো অন্যেরা ছিনিয়ে নিতে না পারে    ♦    

আ’লীগকে এতিম করে পালালেন হাসিনা

ডান্ডিবার্তা | ০৯ আগস্ট, ২০২৪ | ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

হাবিবুর রহমান বাদল
ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলন চলাকালেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অনেক সিনিয়র নেতাকর্মীদের বলতে শুনেছি, কেন্দ্রের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে মাঠে আছি। ওই সময় অনেকেই ছিলেন বেশ প্রাণবন্ত। অতীতের মতোই অনেকের ভাষ্য ছিল- ‘শেখের বেটি’ থাকতে ভয় নাই। তিনি ‘শেষ রক্তবিন্দু থাকতে লড়ে যাবেন।’ অর্থাৎ ওই সময় তাদের বিশ্বাস ছিল, সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। অনেকে বলেছেন, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সবাইকে ‘দৃঢ়’ থাকতে বলেছেন। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গল্পের পরিবর্তন হতে থাকে। উড়ে আসা খবর কিংবা টিভি ও ফেসবুকে পাওয়া ভীতিকর তথ্যে মনোবল ভাঙতে থাকে নেতাকর্মীদের। গত সোমবার দুপুরের আগেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উচ্ছ¡াস দেখে কোনো প্রকার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শোনার আগেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। এরপর সিনিয়র নেতাদের প্রায় সবাই তাদের বাসস্থান পরিবর্তন করেন। বাসস্থান পরিবর্তন করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও। বিকাল ৪টায় সেনাপ্রধানের মুখ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবর আসে। তখন নেতাকর্মীরা হতবাক হয়ে যান। চারদিক থেকে জাঁকিয়ে আসে অনিশ্চয়তা। অবাক বিস্ময়ে অনেক নেতাকর্মীর প্রশ্ন- ‘আপা করলেন কী?’ ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা পালাতে পারে?’ ‘যাওয়ার আগে কিছুই বলে যাবেন না?’ আমাদের কী হবে? দলের কী হবে? দলের সভাপতি শেখ হাসিনার আগেই সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে যায়। যদিও এর সত্য-মিথ্যা জানা যায়নি। তাকে নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। বাদ বাকি জেলার সিনিয়র ও তৃণমূলের দায়িত্বশীল নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। এমন অবস্থায় কোনো বার্তা না পাওয়ায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে দলের নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে গত সোমবার রাতে দলীয় অফিসে ভাঙচুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটের ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের রক্ষায় বাড়ি, ব্যবসা ফেলে আত্মগোপনে চলে যান তারা। যারা দীর্ঘদিন ধরে দলের পদ-পদবি ও সুযোগ-সুবিধার বাইরে, তারাও এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন নানা শঙ্কায়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান পৃথক ভাষণে দেশবাসীকে সহিংসতায় না জড়িয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহŸান জানান। এ আহŸান এসেছে বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের পক্ষ থেকেও। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতাদের একটা বড় অংশ চলে গেছেন আত্মগোপনে। আগস্ট মাসজুড়ে যে শোক কর্মসূচি দলটি পালন করে, এবার কোথাও সে রকম কিছু চোখে পড়ছে না। এখন দল ও দলের বাইরের মানুষের প্রশ্ন- কী হবে আওয়ামী লীগের? কে ঠেকাবে আওয়ামী লীগের এই বিপর্যয়? দলের দায়িত্ব কী কেউ নেবে? এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। জেলা পর্যায়ের দুই নেতার সঙ্গে কথা হলে নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল, সুতরাং দলটি শেষ হয়ে যাবে না। কারণ সত্য ইতিহাস তো মুছে ফেলা যায় না। তাদের ভাষ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরও দলে ব্যাপক দুর্যোগ নেমে এসেছিল। বঙ্গবন্ধু ও দলের নাম নেওয়ার কেউ ছিল না। তবুও দল ফিরেছে। আরেক নেতা হতাশ হয়ে বলেন, আগের দৃশ্যপট আর এবারের দৃশ্যপট এক নয়। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা বীরবেশে দেশে ফিরেছিলেন। এবার আন্দোলনে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। শুধু তাই নয়, পদত্যাগ করে তিনি পালিয়ে গেছেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তার পরিবার আর রাজনীতি করবে না। সুতরাং অনিশ্চিত সময়ে দলের অবস্থা এবং দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টিও অনিশ্চিত। পাশাপাশি একনাগাড়ে দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকায় দলের দিকে মনোযোগ দেননি শীর্ষনেতারা। ফলে বঞ্চিত নেতাদের অভিমান বেড়েছে। ইতোপূর্বে বঞ্চিত নেতাদের একটা অংশ দলের কার্যক্রম থেকেও বিরত থেকেছেন। সুতরাং এই দলের সুদিন কবে আসবে সে নিশ্চয়তাও কেউ দিতে পারবে না বলে অভিমত অনেকের। তবে একথা ঠিক শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর পালিয়ে গিয়ে শুধু নিজের রাজনৈতিক অবস্থানের মৃত্যু ঘটাননি বরং শেখ হাসিনা কাউকে না জানিয়ে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে আওয়ামীলীগের কবর রচনার পথকে সহজ করেছে। পাশাপাশি শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরদিন সজিব ওয়াজেদ জয় বিদেশী গণমাধ্যমের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, নেতাকর্মীদের দায়িত্ব আমার মা(শেখ হাসিনা) নিবেন না। তার অরাজনৈতিক এই বক্তব্যে সাধারণ নেতাকর্মীরা শুধু হতাশই হননি অনেকেই আওয়ামীলীগের রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা পোষন করছেন।

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা