
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাছ ব্যবসায়ী মো. মিলন নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমান ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মোট ৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও অনেককে। গত রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নিহত মিলনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ হত্যা মামলাটি করেন। নিহত মিলন সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকায় মাছের ব্যবসা করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকী থানার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ঝাটকা গ্রামে। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমীরে ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল বাদল, ৪নং-এর কাউন্সিলর নুর উদ্দিন মিয়া, ৮নং ওয়াড কাউন্সিলর রুহুল আমিন, ১০নং ওয়াড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন, কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল। এছাড়া, কাউন্সিলর মতির অন্যতম সহযোগী আশরাফ, পানি আক্তার, মানিক মাস্টার, ভাগিনা মামুন, আব্দুল হাই মেম্বার, সিরাজ মন্ডল, এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল, এড. মহসিন মিয়া, কাদির, সামাদ বেপারী, হাবিবুল্লাহ হবুল, মো. ফারুক, মো. সাদেক আলী, দেলোয়ার, হারুনুর রশিদ, দেলোয়ার হোসেন, কবির হোসেন, মতিউর রহমান সাগর, আবু বক্কর সিদ্দিক, শরীফ হোসেন, হান্নান, মঈন, টাইগার ফারুক, সেলিম মজুমদার, বিল্লাল হোসেন রবিন, তানজিম কবির সজু, হাবিবুর রহমান হাবু, লিটন, নজরুল ইসলাম, লোকমান, মিন্টু মিয়া, মোস্তফা কামাল, আনোয়ার হোসেন আশিক, মাসুদ, টিপু গাজী, ফরহদা হোসেন, শফিকুল ইসলাম, গাজী আমির, জালাল উদ্দিন, সহিদ হাসান বিটু। মামলার এজাহারে বাদী শাহনাজ বেগম উল্লেখ করেন, গত ২১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের সমর্থিত নেতা–কর্মীরা একজোট হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, শটগান, ককটেল, লাঠিসোঁটাসহ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেন। আসামিরা শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান ছাত্র-জনতার উদ্দেশে এলোপাতাড়ি গুলি ও আক্রমণ করার নির্দেশ দেন। আসামিরা রাস্তায় অবস্থানরত ছাত্র-জনতার ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতির সৃষ্টি করে তাঁদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ও মারধর করেন। তখন মিলন মাছের আড়ত থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুপুর ১২টার দিকে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে ৫ আগস্ট শহরের মিশনপাড়া এলাকায় আবুল হাসান স্বজনকে (২০) হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেছিলেন নিহত ব্যক্তির বড় ভাই আবুল বাশার। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ, সাবেক জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, তার ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, শ্যালক তানভীর আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল করিম প্রমুখ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে দেড় শতাধিক লোককে। উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছিল। তখন শিমরাইল মোড় দিয়ে মাছের আড়তে যাচ্ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী মিলন মিয়া। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন একত্রিত হয়ে সমবেত ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে মিলন মিয়া বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় কনক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে সাইনবোর্ড এ অবস্থিত প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুলাই রাত সাড়ে বারোটার দিকে মারা যান মিলন। এর আগে, গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় দায়ের করা আবুল হাসান স্বজন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, সদর-বন্দর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ ৪৮ জনকে মামলার আসামি করা হয়।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯