আজ মঙ্গলবার | ৬ মে ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ | ৭ জিলকদ ১৪৪৬ | সকাল ৮:২৫

নিষিদ্ধ হওয়ার পথে আ’লীগ!

ডান্ডিবার্তা | ২০ এপ্রিল, ২০২৫ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি দিন দিন জোড়ালো হচ্ছে। আর আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ হলে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা জঙ্গী রূপে আর্ভিভাব হতে পারে এমন আশঙ্কা অনেকের। কারণ ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা শুরু করে দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে জটিকা মিছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা উস্কানীমূলক পোস্ট করে সাধারণ মানুষকে হুমকির মুখে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে একাধিক নাগরিকের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আওয়ামীলীগ বিগত ১৬টি বছর সন্ত্রাসী কায়দায় দেশ পরিচালনা করেছে। কখনো জঙ্গী দমনের নামে মানুষ হত্যা, কখনো বন্দুৃক যুদ্ধের নামে মানুষ হত্যা, আয়না ঘরে নিয়ে নির্যাতন ও গুম করে মানুষ হত্যা এমনকি বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় টিকে ছিল। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে। তার কর্মীরা লগি বৈঠা নামক হাতিয়ার দিয়ে প্রকাশ্যে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার দৃশ্য আজো মানুষ মনে রেখেছে। আওয়ামীলীগ ভারতকে খুশি করতে পিলখানা ট্রেজিডি, শাপলা চত্বর ট্রেজিডি ঘটিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। মনে হয় পৃথীবির ইতিহাসে আওয়ামীলীগের মত জালিম সরকার আর কোথায়ও নেই। তাই আওয়ামীলীগ একটি সন্ত্রাসী দল। এ দলকে নিষিদ্ধ করার জরুরী। ইতিমধ্যে সারা দেশে আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করতে যে দাবি উঠছে তাতে যে কোন সময় আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করার ঘোষনা আসতে পারে। পট পরিবর্তনের পর পরই আওয়ামীলীগের সহযোগি সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর দীর্ঘ দিন যারা আওয়ামীলীগ করেছে তারা এখন পড়েছি বিপাকে। বন্দরের এক প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, আওয়ামীলীগের চোরদের আর দেশে স্থান দেয়ার প্রয়োজন নেই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামীলীগ করেছিলাম। আর এখন দেখি আওয়ামীলীগের শীর্ষ থেকে উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও লুটপাট করে দেশকে ধ্বংস করে গেছে। এখন তাদের উপর ঘৃণা আসছে। এদিকে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এই মিছিল থেকে দ্রæত সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে উত্তরায় আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিল করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের দ্রæত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। হাজারো লোকের উপস্থিতিতে মিছিলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ¯েøাগান দেওয়া হয়। মিছিলে অংশগ্রহণ করা ব্যক্তিরা বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরায় আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিলকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তারা আরও বলেন, যেই শেখ হাসিনা মানুষ হত্যা করে, যেই আওয়ামী লীগ গুম-খুন করে সেই হাসিনা ও আওয়ামী লীগের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে বলেও তারা দাবি করেন। গত শুক্রবার ভোরে রাজধানীর উত্তরায় একটি ঝটিকা মিছিল করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ওই মিছিলের ব্যানের লেখা ছিল, ঢাকা-১৮ সংসদীয় এলাকা। সেই বিক্ষোভ মিছিলটির তিন মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। সেই মিছিল থেকে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বতী সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়। একই দাবিতে যাত্রাবাড়ী, ডেমরা আংশিক কদমতলী থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল করে। যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ মুন্না এই মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছে বলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে দাবি করা হয়। এদিকে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল কন্ট্রোল না করতে পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। একটা অভিযোগ আসছে আওয়ামী লীগ বা তাদের দোসর যারা বিভিন্ন সময়ে ঝটিকা মিছিল করছে। এই বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের ইনঅ্যাক্টিভ থাকা বিষয়টি সামনে আসছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ ইতোমধ্যে দুইজনকে ধরেছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ও ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনো রকম নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যদি এগুলো ভালোভাবে কন্ট্রোল করতে না পারে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে। এ দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনএসপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনএসপি) যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফ সোহেলের দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস তুলে ধরে তিনি এ দাবি জানান। নিজের ফেসবুক আইডিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে স্ট্যাটাস দেন আরিফ সোহেল। ওই স্ট্যাটাসে আরিফ সোহেল বলেছেন, আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু শুধু নিষিদ্ধের দাবি তোলাটা যথেষ্ঠ নয়। কেন যথেষ্ট নয় সেই শিক্ষা আমাদের হাড়ে হাড়ে হয়েছে। কীভাবে? নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার পরে। আরিফ সোহেল বলেন, আমরা দেখেছি ছাত্রলীগ সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও তাদের নেতাকর্মীরা উন্মুক্ত ঘোরাফেরা করছেন, আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে অংশ নিচ্ছেন। পুলিশ তো কদাচিৎ দুই একটা ধরে, বাকিদের ছাত্র-জনতা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ধরিয়ে দিলেও দুই, একদিনেই জামিন হয়ে যায়। অর্থাৎ শুধু নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করে একটা সাইন করা কাগজ ধরিয়ে দিলেই মেনে নেওয়া যাবে না। কিংবা এই সাইন করা কাগজটা আদায় করাটাই এখন প্রধান দাবি বানিয়ে ফেলা যাবে না। কারণ দিনশেষে এই কাগজটা যে একটা ইউজলেস ত্যানা ছাড়া কিছু না এইটা ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পরে প্রমাণ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বরং জুলাই গণহত্যাকারী ছাত্রলীগসহ, আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিকে প্রধান দাবি করে তুলতে হবে। আপনাদের কি মনে হয়, বিচার ঠিকঠাক হইলে আওয়ামী লীগসহ তার অঙ্গসংগঠন লিগ্যাল থাকতে পারবে? ইম্পসিবল, বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালে যেভাবে সংগঠন হিসেবে অপকর্মের দায়ে নাৎসী পার্টি নিষিদ্ধ হয়েছিলো ঠিক সেইভাবে সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগসহ সকল লীগ নিষিদ্ধ হবে প্রমাণিত ও পরীক্ষিত বিচারিক রায়ে। তিনি আরও বলেন, হ্যাঁ, তবে একটা কাগজ লাগবে। সেটা হচ্ছে বিচার কমপ্লিট না হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মকাÐে নিষেধাজ্ঞা জারি। এটা আদায় করতে হবে। তাহলে এভাবে মিছিল দিয়ে বেড়াতে পারবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এ সদস্য সচিব বলেন, পূর্ববর্তী ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার চূড়ান্ত আওয়ামী ফ্যাসিজম বিরোধী জাতীয় আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং আওয়ামী ফ্যাসিজমের সকল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি ধ্বংস করে বাংলাদেশে বেআওয়ামীকরণ করতে হবে যেভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বেনাৎসীকরণ করা হয়েছিল।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা