আজ শনিবার | ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ | ২ মহর্‌রম ১৪৪৭ | বিকাল ৫:৫৩

বন্দরে অপ্রতিরোধ্য কিশোর গ্যাং

ডান্ডিবার্তা | ২৮ জুন, ২০২৫ | ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আধিপত্য বিস্তারে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসীরা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য ও নাসিক ২১নং ওয়ার্ডের সাবেক দুই বারের কাউন্সিলর হান্নান সরকার ও তার বাহিনী আধিপত্র বিস্তার নিয়ে একের পর এক সংগাতে জড়াতে থাকে। যার ফলে এক নাতেই দু’টি খুনের ঘটনা ঘটে। গত ৫ আগষ্টের পর পরই হান্নান সরকার ঐক্যবদ্ধ করেন তার উশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী। এর মধ্যে রয়েছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ত্রান বিষয়ক সম্পাদক বাবু সিকদার, বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহŸায়ক মেহেদী হাসান, বিএনপি কর্মী মাসুদ রানা রনি। সাথে যুক্ত হয় অটোচালক জাফর ও জুয়ারী বাবু, মাদক ব্যবসায়ী রায়হান, কিশোর সন্ত্রাসী পারভেজ, মুরগী নয়নসহ একাধিক সন্ত্রাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য ও ২১নং ওয়ার্ডের সাবেক দুই বারের কাউন্সিলর হান্নান সরকার আওয়ামীলীগ সরকার শাষনামলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমানের সভামঞ্চে সক্রীয়, নিবির সখ্যতা ও চাটুকারিতার কারনে বিএনপি কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। পরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হান্নান সরকার তার উশৃঙখল বাহিনী নিয়ে অপ্রতিরোধ্য ও প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে উঠেন। বন্দর ২১নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা বৈষম্য বিরোধী মামলায় জড়িয়ে আত্বগোপনে থাকার পর হান্নান সরকার শাহী মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটি, বাজার কমিটি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোরপূর্বক আধিপত্ত বিস্তার করেন। হান্নান সরকারের শেল্টারে বেপরোয়া হয়ে উঠেন তার বাহিনী বাবু-মেহেদী ও রনি- জাফর গ্রæপ। বন্দর বাসষ্ট্যান্ড দখল করেন হান্নান সরকার সমর্থিত রনি- জাফর গ্রæপ। প্রতিদিন স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা উঠানো হত। অপর দিকে বাবু ও মেহেদী গ্রæপ বন্দর রেললাইন ব্রীজ, বউ বাজার, খালপাড় মাদকের ৩টি ষ্পট গড়ে তুলে। প্রতিদিন ৩টি ষ্পট থেকে চাঁদা তোলা হত। পরে ষ্ট্যান্ডের দখল ও বিভিন্ন সেক্টরের চাঁদাবাজীর ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মেহেদী-বাবু গ্রæপের সাথে রনি জাফর গ্রæপের দ্বন্দ শুরু হয়। পরে হান্নান সরকার মেহেদী বাবু গ্রæপের সাথে সমন্বয় করতে রনি জাফরকে নির্দেশ দেন। রনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে হান্নান সরকার ও বাবু মেহেদীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিজে নেতা বনে যায়। রনির ছেলে সন্ত্রাসী রায়হান, পারভেজ, মুরগী নয়নসহ শতাধিক কিশোর সন্ত্রাসী গড়ে তুলেন। এলাকায় আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রæপের সাথে বিরোধ চরমে পৌছে। হাফেজীবাগ, বউবাজার, দত্তবাড়ি, রেললাইনসহ বিভিন্ন এলাকাগুলোতে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় পক্ষের সন্ত্রাসীদের মধ্যে মাঝে মাঝেই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ মারামারির ঘটনা ঘটতো। এসব কান্ডে নিরব সমর্থন ছিল বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের। হান্নান সরকারের শেল্টারে বিভিন্ন এলাকায় নতুন বাড়ি করলেই চাঁদা দিতে হবে মেহেদী বাবু গ্রæপকে। অবৈধ গ্যাস লাইন, মাদক ব্যবসা, বাড়ি দখলসহ নানা অপকর্ম করতো বাবু মেহেদী গ্রæপ। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে পর ৯ মাস বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায় অপ্রতিরোধ্য ছিল হান্নান সরকার সমর্থিত সন্ত্রাসী বাহিনী। এলাকার আধিপত্ত বিস্তার’ কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। বিরোধের জের ধরে বাবু মেহেদী গ্রæপ ও রনি জাফর গ্রæপের কমপক্ষে ৮ জন গুরুতর আহত হয়। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় মামলা হয়। পরে উভয় গ্রæপ পূনরায় মারামারিতে লিপ্ত হয়। মেহেদী বাবু গ্রæপের হামলায় কুদ্দুছ নামে এক পান ব্যবসায়ী নিহত হয়। এর কয়েক ঘন্টা পর মেহেদী আত্বগোপনের উদ্দেশ্যে রিক্সাযোগে পালানোর সময় বন্দর সিরাজদৌল্লাহ ক্লাবের সামনে পথরোধ করে গণপিটুনী দিয়ে মারাতœক জখম করে। স্বজনরা খবর পেয়ে হাসপাতাল নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে। বন্দরে আধিপত্য বিস্তারে এক রাতে দ্ইু খুনের ঘটনায় উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ পর্যন্ত উভয় পক্ষের মোট ১৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তল্লাশী চালিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, হান্নান সরকার সমর্থিত বাবু একজন মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশের তালিকাভুক্ত অপরাধী। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ৪/৫টি মামলা রয়েছে। বাবু ও মেহেদী বাহিনীকে প্রশ্রয় দেন বিএনপির বহিস্কত নেতা ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার। নাম না প্রকাশের শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, বন্দরে শাহী মসজিদ, দত্তবাড়ি, বউবাজার, হাফেজীবাগ, রেললাইন এলাকা এখন ‘কিশোর গ্যাং এর আস্তানা। তাঁরা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলে সহায়তা, ইন্টারনেট সংযোগ, কেব্‌ল টিভি (ডিশ) ব্যবসা ও ময়লা–বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, যৌন হয়রানি, হামলা, মারধরসহ নানা অপরাধে জড়িত। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, বন্দরে আধিপত্য বিস্তারের দ্ব›েদ্ব নিহত আব্দুস কুদ্দুস হত্যা মামলায় হান্নান সরকার ও অপর তিনজন এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা