আজ শনিবার | ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ | ২ মহর্‌রম ১৪৪৭ | বিকাল ৫:১০

খেলা হবে-সিন্ডিকেটের নায়ক কাউয়া কাদের

ডান্ডিবার্তা | ২৮ জুন, ২০২৫ | ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ওবায়দুল কাদেরের প্রিয় উক্তি হলো- ‘খেলা হবে’। কথায় কথায় খেলা হবে বলে তিনি নিজেকে রাজনৈতিক নেতা থেকে কৌতুক অভিনেতা বানিয়ে ফেলেছিলেন। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, নিজের মন্ত্রণালয়েও তিনি সিন্ডিকেট আর কমিশন বাণিজ্যের খেলা চালু করেছিলেন। মন্ত্রণালয়ে তার এই সিন্ডিকেটের সাংকেতিক নাম ছিল খেলা হবে। ‘খেলা হবে’ ফাইল দ্রæত গতিতে পাস করানো ছিল মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তার দায়িত্ব। সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে সড়ক ও সেতু নির্মাণ থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণসহ সব ধরনের কাজে কমিশন বাণিজ্যের বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাদেরের স্ত্রী ইশরাতুন্নেছা কাদের, ভাই আবদুল কাদের মির্জা, ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালীর সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ও সাবেক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহকে নিয়ে ওবায়দুল কাদের গড়ে তোলেন দুর্নীতির সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের নামই ছিল ‘খেলা হবে’। তার মন্ত্রিত্বকে অবৈধ ক্ষমতা চর্চার হাতিয়ার করে ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত সড়ক পরিবহন খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছে কাদের পরিবার ও সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা। ১৬ বছরে ওবায়দুল কাদেরের নিজের নির্বাচনি হলফনামায় দেওয়া তথ্যে সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ পাওয়া গেছে ছয় গুণের বেশি। যদিও হলফামায় দেওয়া টাকার অঙ্কের সঙ্গে বাস্তবের অনেক ফারাক থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। তবে হলফ নামায় নেই বিদেশে পাচারকৃত অবৈধ সম্পদের হিসাব। কাদেরের পরিবারসহ সিন্ডিকেটের অন্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য এক আইনজীবী দুদকে আবেদন দাখিল করেছেন। তার আবেদন ও বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া অভিযোগ আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অধিকাংশ অভিযোগেরই সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই কমিশন থেকে বিস্তারিত অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের ওই কর্মকর্তা বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ দুদকে জমা পড়েছে। সড়ক ও সেতু নির্মাণ কিংবা পরিবহন ক্রয়ে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দুদকের গোয়েন্দা বিভাগ খতিয়ে দেখেছে। প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর কমিশন থেকে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে সওজের মোট কাজের ৯০ শতাংশ করেছে ১২-১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানগুলো একক ও যৌথভাবে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার কাজ পায়। নানা কৌশলে নির্ধারিত কমিশনের বিনিময়ে সুনির্দিষ্ট ওইসব প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিত কাদের সিন্ডিকেট। কাকে কাজ দেওয়া হবে, তা আগেই ঠিক করে রাখা হতো। এরপর দরপত্র ডাকার আনুষ্ঠানিকতা করা হতো। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে হাসান টেকনো বিল্ডার্স, রানা বিল্ডার্স, এনডিই, মোজাহার এন্টারপ্রাইজ, মো. মঈনউদ্দিন (বাঁশি) লিমিটেড, তাহের ব্রাদার্স, মোহাম্মদ আমিনুল হক লিমিটেড, মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ার্স, স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স, এম/এস সালেহ আহমেদ, এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স, রিলায়েবল বিল্ডার্স, তমা কনস্ট্রাকশন, মাহফুজ খান লিমিটেড ও আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন ইত্যাদি। কাদেরের সিন্ডিকেটের সদস্য ছিলেন তার স্ত্রী ইশরাতুন্নেছা কাদের, ভাই আবদুল কাদের মির্জা, ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও নোয়াখালীর সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় হলফ নামায় সম্পদের চেয়ে ওবায়দুল কাদেরের সম্পদ কয়েক হাজার গুণ বেশি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সিঙ্গাপুরে এবং ব্যাংককে ওবায়দুল কাদেরের হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুরে ব্যয় বহুল অরচার্ড রোডে কাদেরের রয়েছে তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট। তার স্ত্রীর নামে সিঙ্গাপুরের কিচেনারীতে আছে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট। এ ছাড়াও সিঙ্গাপুরে বেনামে কাদের গড়েছেন একটি মানি একচেঞ্জ এবং ট্রাভেল এজেন্সি। ব্যাংককে ওবায়দুল কাদেরের নামে একটি হোটেলের শেয়ার রয়েছে। কাদেরের ছোট ভাই মির্জার রয়েছে নিউইয়র্কে বিলাস বহুল অ্যাপার্টমেন্ট এবং পেট্রোলপাম্প। ওবায়দুল কাদেরের বিপুল টাকা বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করেছেন নিজাম হাজারী। এখন ওবায়দুল কাদের কলকাতায়। সেখানে নিজাম হাজারীই কাদেরের যাবতীয় দেখভাল করছেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা