আজ মঙ্গলবার | ১৫ জুলাই ২০২৫ | ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ | ১৯ মহর্‌রম ১৪৪৭ | বিকাল ৩:০১

বন্দরে সনাতন স¤প্রদায়ে বিভক্তির কারণ

ডান্ডিবার্তা | ১৫ জুলাই, ২০২৫ | ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বন্দরে সনাতন স¤প্রদায়ের মাঝে বিভক্তির আগুন জ্বলছে। ইতিমধ্যেই দুটি পক্ষে হামলা এবং মামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা মনে করছেন বন্দরের সনাতন স¤প্রদায়ের মাঝে চলমান এই দ্ব›দ্ব সংঘাতের নেপথ্যে রয়েছেন স্বৈরাচারের দোসররা। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বন্দরের লাঙ্গলবন্দে নিজের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে সনাতন স¤প্রদায়ের একটি অংশকে উসকে দিয়ে বিভক্তির এই নগ্ন খেলায় মেতে উঠেছেন মাকসুদ চেয়ারম্যান। এমন অভিযোগ সনাতনিদের। স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত ওসমান পরিবারের সহযোগী ছিলেন বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন। সেলিম ওসমানের ছত্রছায়ায় পুরো বন্দর জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন তিনি। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাকসুদ ও তার বাহিনী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগি রয়েছে। ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরও মাকসুদ ও তার পুত্রের নেতৃত্বে নতুন করে আবার দখল ও চাঁদাবাজি শুরু হয়। এবার লাঙ্গবন্দের সনাতন স¤প্রদায়ের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন মাকসুদ চেয়ারম্যান। বিশেষ করে বন্দরের লাঙ্গলবন্দ এলাকার নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় মাকসুদ চেয়ারম্যান নেপথ্যে থেকে বিভক্তির এই বিষবাষ্প ছড়িয়ে যাচ্ছেন। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় তীর্থস্থান হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন লাঙ্গলবন্দ এলাকা। এখানকার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করার মাধ্যমে পাপ মোচন হয় বলে বিশ্বাস সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। ঐতিহ্যবাহী সেই লাঙ্গলবন্দ পূণ্য স্নান উৎসব আয়োজনে একটি কমিটি রয়েছে যা দীর্ঘদিন এই উৎসবের আয়োজনটি করে আসছে। এই কমিটির সভাপতি সরোজ কুমার সাহা এবং সাধারণ সম্পাদক তাপস কর্মকার। এই কমিটি স্নান উৎসব আয়োজন করে আসছে অনেক বছর যাবত। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আরেকটি পক্ষ এই পূণ্য স্নান আয়োজনে স্বঘোষিত একটি কমিটি ঘোষণা করে আর এরপর থেকেই শুরু হয় বিভক্তি আর উত্তেজনা। বন্দরের স্থানীয় সমাজের মতে সনাতন স¤প্রদায়ের মাঝে সৃষ্টি হওয়া এই বিভক্তি আর উত্তেজনার নেপথ্যে নাটের গুরু হচ্ছেন বন্দর উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন। এবারের লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব আয়োজনে নতুন একটি কমিটি গঠিত হয় যার নাম মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নান উৎসব উদযাপন ফ্রন্ট। মহাতীর্থ লাঙ্গলগঞ্জ স্নান উদযাপন পরিষদের সাথে এরাও ছিল এবার সহ আয়োজক। সদ্য সমাপ্ত এই লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নানের সহ আয়োজক মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নান উৎসব উদযাপন ফ্রন্টের একটি পোস্টার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে। স্বৈরাচারী ওসমান পরিবারের দোসর এবং গণহত্যা মামলার আসামি বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনের ছবি দিয়ে লাঙ্গলবন্দে আগত সকল পুণ্যার্থীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছিল সেই পোস্টারে যেখানে বড় করে মাকসুদ হোসেনের ছবি ছিলো আর তাতে লেখা ছিল সদর-বন্দর আসনের এমপি পদপ্রার্থী। আর এই পোস্টারের প্রচারে লেখা ছিল মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নান উদযাপন ফ্রন্ট। অষ্টমী স্নান চলাকালীন লাঙ্গলবন্দের বিভিন্ন স্থানে এই পোস্টার দেখতে পাওয়া গেছে। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় বন্দরের সনাতন স¤প্রদায়ের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টির নেপথ্যে কাজ করছেন মাকসুদ চেয়ারম্যান। কথিত আছে বিভিন্ন সময়ে এসব কথিত ভূঁইফোর সংগঠনের নেতাদের টাকা দিয়ে বিভক্তি আর দ্ব›দ্ব সংঘাত লাগিয়ে রাখার ব্যবস্থা করছেন মাকসুদ। সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জের মানুষ সব সময়ই শান্তিপ্রিয়। সকল ধর্মের মানুষ এখানে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। সেইসাথে সকল ধর্মের উৎসব পার্বনও এখানে ধর্মীয় স¤প্রীতি বজায় রেখে পালন করা হয়ে থাকে। এখানে পবিত্র রমজান মাসে শারদীয় দূর্গাপূজা পালিত হয়েছে, কোথাও কোনো ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি। সা¤প্রদায়ীক স¤প্রীতির এই অনন্য নজির নারায়ণগঞ্জে চলে আসছে সুদীর্ঘকাল যাবত। তাদের মতে, ৫ আগষ্টের পর একটি নতুন চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু স¤প্রদায়ের এই ঐক্য বিনষ্ট করার জন্যে। তাদেরকে ইতিপূর্বে কখনো মাঠে দেখা যায়নি। হিন্দু স¤প্রদায়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠি তাদের দু:সময়ে এদেরকে কখনো পাশে পাননি। এসব ভূইফোড় নেতাদের ৫ আগষ্টের পর উদ্ভব হয়েছে। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যে সনাতন স¤প্রদায়ের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে ইতিমধ্যে। গত কিছুদিন পূর্বে লাঙ্গলবন্দের স্নান উৎসব উদযাপনের জন্যে নতুন একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে অথচ আমাদের আগেরই একটি কমিটি রয়েছে যারা বিগত সময়গুলোতে অত্যন্ত সফলভাবে স্নান উৎসব আয়োজন করে আসছে। বিভক্তি কখনো কল্যাণ বয়ে আনেনা। আর যারা বিভক্তি সৃষ্টি করছে তাদেরকে বিগত সময়ে কখনো আমাদের সুখ দু:খে পাওয়া যায়নি। আমরা এ বিভক্তি চাই না, আমরা চাই ঐক্য। আমরা চাই সকলে মিলেমিশে নারায়ণগঞ্জে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে। এদিকে নাঙ্গলবন্দের সনাতন স¤প্রদায়ের মাঝে চলমান এই দ্ব›দ্ব সংঘাত আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। গত ৪ জুলাই লাঙ্গলবন্দের রাজঘাট মন্দিরের কমিটি দখলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মন্দিরের বর্তমান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সাহা ও তার পরিবারের উপরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ‘মব’ সৃষ্টি করে কমিটি দখলের চেষ্টা করছে এডভোকেট রাজীব মন্ডলের নেতৃত্বে একটি পক্ষ। এ ঘটনায় বিপ্লব সাহার পিতা সুরেশ সাহা বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে এডভোকেট রাজিব মন্ডল, রিপন দাস, বিজয় দাস কাব্য, কার্তিক ঘোষ, সুফল সাহা, সুকেন দাস, রঞ্জন দাস, খোকন দাস, সাগর দাস, সুভাষ দাস ও অপু মালাকারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৬ জনকে।
ই-




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা