আজ মঙ্গলবার | ২২ জুলাই ২০২৫ | ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২৬ মহর্‌রম ১৪৪৭ | রাত ১০:৩৫

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার পক্ষে একাই গর্জে ছিলেন বাবুলের পিস্তল

ডান্ডিবার্তা | ২২ জুলাই, ২০২৫ | ১২:২৮ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
২০২৪ সালের জুলাই মাস, অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে, ঠিক তখনই নেমে আসে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নির্মম দমন-পীড়ন। বিদেশি রাইফেল, রাইফেল ক্লাবের অস্ত্র নিয়ে যখন নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের মতো প্রভাবশালীরা ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে, রাজপথ যখন শিশু, বৃদ্ধ আর তরুণদের রক্তে রঞ্জিত, তখন এক ভিন্ন পরিস্থিতির জন্ম হয়। সেই বিভীষিকাময় সময়ে, যখন নিরস্ত্র জনতার উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা, তখন ছাত্র-জনতার পক্ষে বাংলাদেশের মাটিতে গর্জে উঠেছিল একটি মাত্র লাইসেন্সকৃত পিস্তল। আর সেই পিস্তলের মালিক ছিলেন আবু জাফর আহমেদ বাবুল, যিনি ‘প্রাইম বাবুল’ নামে পরিচিত। জুলাই অভ্যুত্থানের সেই দিনগুলোতে সারাদেশ ছিল এক আতঙ্কের উপত্যকা। একদিকে ছিল অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পুলিশ ও সরকারি দলের ক্যাডার, অন্যদিকে ছিল খালি হাতে কিংবা সামান্য লাঠিসোটা নিয়ে অধিকার আদায়ে নামা ছাত্র-জনতা। অগণিত ছাত্র-জনতা রক্তে ভিজিয়ে দিচ্ছিল রাজপথ, কিন্তু তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসার সাহস পাচ্ছিল না কেউ। ঘটনাটি ঘটে ৫ আগস্ট। প্রাইম বাবুল নিজেই সেইমুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন। তার ভাষায়,“ঘটনাটি ছিল ৪ আগস্টের। পুলিশ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল। অনেকে হতাহত হচ্ছিল, কিন্তু তাদের গুলির ভয়ে আহতদের উদ্ধারে কেউ এগোতে পারছিল না। সেই হায়েনাদের তাÐব দেখে আমি আর স্থির থাকতে পারিনি। আমি আমার লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে আকাশে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ি। এতে ওরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছু হটে। সেই সুযোগে আমি এবং অন্যরা মিলে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং দ্রæত চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।” প্রাইম বাবুলের কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির শব্দ সেদিন কেবল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডারদেরই পিছু হটায়নি, বরং তা হাজারো ভীত-সন্ত্রস্ত ছাত্র-জনতার মনে সাহস জুগিয়েছিল। এমনকি রাষ্ট্রীয় অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছিল জনতার বিরুদ্ধে, তখন একজন সাধারণ নাগরিকের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জনতার রক্ষাকবচ হয়ে উঠেছিল। তার এই পদক্ষেপে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় আক্রমণকারীরা, আর সেই সুযোগে রক্তাক্ত, আহত ছাত্রদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি হয়। জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাসে যখন একদিকে লেখা থাকবে রাষ্ট্রীয় বাহিনী সরকার দলীয় ক্যাডারদের নির্মমতার কথা, তখন তার পাশেই লেখা থাকবে প্রাইম বাবুলের এই প্রতিরোধের গল্প।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা