আজ শনিবার | ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২২ ভাদ্র ১৪৩২ | ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | সকাল ৯:১৬

ঐক্যের ডাকেও না’গঞ্জে অনৈক্য

ডান্ডিবার্তা | ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে যখন ঐক্যের ডাক দিলেও নারায়ণগঞ্জে বিএনপির মধ্যে ঐক্যের দেখা মিলছেনা। কারণ নারায়ণগঞ্জে কেহ দলের সিনিয়র নেতাদের কদর করছে না। দলীয় পদ পদবী আকঁড়ে থাকার জন্য একে অপরের বিরোধী করেই চলেছে। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিএনপির সবচেয়ে দৃশ্যমান পরিবর্তনটি ঘটেছে তাদের রাজনৈতিক ভাষায়। যে দলের অভিধানে একসময় ‘প্রতিশোধ’ বা ‘আন্দোলন-সংগ্রাম’-এর মতো শব্দ প্রাধান্য পেত, আজ সেখানে জায়গা করে নিয়েছে ‘সহনশীলতা’, ‘সমন্বয়’ এবং ‘জাতীয় ঐক্য’-এর মতো শব্দগুচ্ছ। এ প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “আমরা কোনো জিঘাংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমাদের লক্ষ্য একটি ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ, যেখানে সবাই মিলে দেশটাকে গড়ব। বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, এক দীর্ঘ সংঘাতপূর্ণ সময় পাড়ি দিয়ে আসা এই জাতি এখন আর প্রতিহিংসার রাজনীতি চায় না, বরং চায় ক্ষত নিরাময়ের প্রলেপ এবং একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কণ্ঠেও বারবার উঠে এসেছে, “আমরা কোনো প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। এই সংযমী বয়ান একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ ও দ্বিধান্বিত সুশীল সমাজকে আশ্বস্ত করছে, তেমনই প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক পরিম-লেও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিএনপির ভাবমূর্তি নির্মাণে সহায়তা করছে। বিএনপির এই নবযাত্রার অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তার নেতৃত্বেও এসেছে এক বিস্ময়কর রূপান্তর। অতীতে যিনি ছিলেন একজন আগ্রাসী সরকারবিরোধী সংগঠক, তিনিই এখন নিজেকে মেলে ধরছেন একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়কের অবয়বে। তিনি এখন গতানুগতিক ক্ষমতার রাজনীতির সংকীর্ণ গ-ি পেরিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা এবং দেশের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে মনোনিবেশ করছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা। দলের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তার দৃঢ় ও সংযমী বক্তব্যও বেশ প্রসংশা কুড়াচ্ছে সর্বমহলে। লন্ডনে অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক এবং একটি অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঐকমত্য স্থাপন তাকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিত্বের কাতারে নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, পরিবেশ রক্ষার মতো বৈশ্বিক বিষয়ে তার পাঁচ দফা কর্মসূচি ঘোষণা প্রমাণ করে, তিনি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন দেখেন, যা তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছে। বিএনপি তীব্রভাবে উপলব্ধি করেছে অতীতের দুর্নীতির অভিযোগ এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলই ছিল তাদের জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার অন্যতম কারণ। সেই ঐতিহাসিক দায় থেকে মুক্ত হতে দলটি এক কঠোর শুদ্ধি অভিযানে নেমেছে। এ প্রসঙ্গে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, “দলীয় শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে কেউ নন। জনগণের কাছে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক দল হিসেবে বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য। ” এই শুদ্ধি অভিযানের লক্ষ্য, দলের ভেতর থেকে সকল সুবিধাবাদী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের ছেঁটে ফেলে দলকে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। এই অভিযান যে কথার কথা নয়, তার প্রমাণ মিলেছে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এখনো পর্যন্ত প্রায় দুই হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কারণ দর্শানো এবং বহিষ্কারের নোটিশ জারির ঘটনায়। এই কঠোর পদক্ষেপ দলের ভেতরে যেমন শৃঙ্খলার এক দ্ব্যর্থহীন বার্তা দিচ্ছে, তেমনই বাইরেও জনগণের কাছে এই আস্থা তৈরি করছে যে, বিএনপি সত্যিই তার অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে। বিএনপির রাজনৈতিক দর্শনের সবচেয়ে যুগান্তকারী পরিবর্তনটি হলো, এককভাবে দেশ শাসনের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে একটি ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের ধারণা। দলটি এখন আর নিজেদের একক বিজয় নিয়ে ভাবছে না, বরং যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার এক অংশীদারিত্বমূলক কাঠামো তৈরির কথা বলছে। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএনপির প্রণীত ‘রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা’ প্রস্তাবকে ভিত্তি করে এই ঐক্য গড়ার প্রচেষ্টা প্রমাণ করে, দলটির লক্ষ্য কেবল শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের শাসনতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর আমূল সংস্কার করা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা