আজ সোমবার | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৭ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | বিকাল ৩:৪৫

পিআর পদ্ধতি দেশের জন্য বিপর্যয়

ডান্ডিবার্তা | ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটা ডিজাস্টার (বিপর্যয়) হবে বলে মনে করেন অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, বøগার ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য। এদিকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে জামায়াতে ইসলামী। সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস জামায়াতে ইসলামী পিআর জিনিস বোঝেই—নি ঠিকমতো।’ স¤প্রতি প্রবাসী সাংবাদিক ড. কনক সরওয়ারের ইউটিউব চ্যানেল ‘কনকসরওয়ারনিউজ’-এ ‘ড. ইউনূস কি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম হবেন?’ শীর্ষক শিরোনামে এক আলোচনায় পিনাকী এসব কথা বলেন। ওই টকশোতে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিটা বাংলাদেশের জন্য একটা ডিজাস্টার (বিপর্যয়) হবে। সিরিয়াস ডিজাস্টার হবে। অলরেডি উচ্চকক্ষে একটা ডিজাস্টার হয়ে গেছে। এরপর আবারও এই পিআর! এতে মানুষের হাত থেকে ক্ষমতা চলে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী যদি একগুঁয়ে, একরোখা হয়ে পিআর-এর পক্ষে দাঁড়ায়, তাহলে আমাকে আবারও একগুঁয়ে, একরোখা হয়ে পিআর-এর বিপক্ষে মানুষকে বোঝাতে হবে।’ পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশের জনগণকে ক্ষমতাহীন করবে বলে মনে করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস জামায়াতে ইসলামী পিআর বোঝেই-নি ঠিকমতো। সরি টু সে-এই বিষয়টা তারা বোঝেনি। এই পিআর করার ক্যাপাসিটি বাংলাদেশে ইনস্টিটিশনালি নেই। এটি এক্সট্রিমলি একট্রিমলি কমপ্লেক্স সিস্টেম (জটিল পদ্ধতি)। কমপ্লেক্সিটির ইস্যুটা বাদ দিলাম। ধরা যাক, আমি এই কমপ্লেক্সিটি ম্যানেজ করতে পারলাম কোনো না কোনোভাবে। কিন্তু এটা বাংলাদেশের ডেমেক্রেসি, স্টেট এবং জনগণকে ক্ষমতাহীন করবে। এই বিষয়টি ওনারা (জামায়াত) বুঝতে পারছেন না।’ ‘এত বিজ্ঞ রাজনৈতিক দল, ওনারা যে কেন বুঝতে পারছেন না, আমি এটা জানি না। দরকার হলে ডিবেটে ডাকতে পারেন আমার সঙ্গে, যদি মনে করেন। কিন্তু শীর্ষ নেতাকে ডাকতে হবে একদম।’-উল্লেখ করেন তিনি। জামায়াত কি আবার কোনো ঐতিহাসিক ভুলের দিকে যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে পিনাকী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোতো ভুল করেই। সব দলেরই-তো ভুল থাকে। রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবেও আমাদের ভুল থাকে। কিন্তু এই পিআর পদ্ধতি নিয়ে যদি মোলামুলি করে শেষ পর্যন্ত জামায়াত কিছু অ্যাচিভ করতে চায়, আমি মনে করবো এটা আরেকটা রাজনৈতিক ভুল হবে। বড় ধরনের রাজনৈতিক ভুল। এটা জামায়াত পরবর্তীতে স্বীকার করবে। করতে বাধ্য হবে। কারণ এর ফলে বাংলাদেশ যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটার দায় তখন জামায়াত ইসলামকে নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে কী-এটা রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে রাজনৈতিক দলগুলো কেন মনে করে যে, আমরা দেশের মালিক? তাতো না। কয়েকদিন আগে-তো একটা জরিপ বেরিয়েছি তাই না? সেখানে দেখা যাচ্ছে ১২% মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে। সাড়ে ১০% মানুষ জামায়াত ইসলামীকে ভোট দেবে। ৩% এর মতো মানুষ এনসিপিকে, ৭.৩% মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে। সব ভোট যদি এক করেন তাহলে দেখবেন ৬৩% মানুষ, এদের কোনো রাজনৈতিক দলের ওপরে আস্থা নাই। তাদেরকে ভোট দিতে চায় না। তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো এতো হ্যাডম কেন দেখায়। তাহলে কোথায় রিপ্রেজেন্টেশন এই ৬৩% মানুষের।’ পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ‘মানুষের কথাও-তো শুনতে হবে। বুঝলাম জামায়াতে ইসলামীর বুকের মধ্যে বিশাল একটা লাল টুকটুকে আপেল আছে। আপেলটা আমাদেরকে দেখাক! আমরা কথা বলি। আমরা-তো জামায়াতে ইসলামীর শত্রæ না। আমরা বিএনপিরও শত্রæ না। তাদের ভেতরের লাল টুকটুকে আপেল আমাদের দেখাক। আমরা একটু নেড়ে-চেড়ে দেখি। একটু কামড় দিয়ে দেখি মিষ্টি কিনা, কচকচে কিনা। তো আমি যেটা বলবো সেটাই করতে হবে কেন? জনগণের সঙ্গে-তো এনগেইজ হতে হবে। আমাদেরকে বোঝাতে হবে তো। ৬৩% মানুষ-তো বানের পানিতে ভেসে আসেনি। তাদের সঙ্গে এনগেইজ হতে হবে। তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’ বিএনপি, জামায়াত ও এনসিসিপি, এতোদিন ঐক্যবদ্ধ থেকে হঠাৎ কেন এত বিভাজিত হয়ে পড়লো এবং জামায়াত কি ঐতিহাসিক কোনো ভুল করতেছে’- উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘গত ১৫ আগস্ট বিএনপির যে ভূমিকা ছিল, সেজন্য অনেক ধন্যবাদ। এই একই ধরনের ভূমিকা জামায়াতে ইসলামীও নিতে পারতো। আমার বিশ্বাস তারা মাঠে ছিল। কিন্তু সরাসরি কেন আসেনি, সেটা আমরা জানি না।’ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পূর্ববর্তী প্রেক্ষাপট এবং পরবর্তী বিভাজন প্রসঙ্গে প্রবাসী এই সাংবাদিক বলেন, ‘একটা কথা পরিষ্কার বলি, গত বছর ৫ আগস্টের আগের দিন, ঠিক রাতেও আপনারা জেলখানায় নিজেদের খাবার ভাগাভাগি করে খেয়েছেন। কোনো দল এখানে ছিল না। ওই সারারাতের কথা আমার মনে আছে। তার আগের দুই তিন রাত, যে রাতে আমি হারুনের ভিডিওটা ছাড়লাম, ওই রাত থেকে আমি আর ঘুমাতে পারিনি। আমি জানতাম যে, এবার যদি এটার কোনো পরিবর্তন না হতো, হারুন আমার পুরো বংশ একদম নির্বংশ করে ফেলতো। আমরা সবাই তখন একদম চাতক পাখির মতো দেশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম যে, বিএনপি জামায়াত কারা কী করবে। আপনাদের ভেতরে আমরা তো কোনো বিভাজন দেখিনি। হঠাৎ করে এখন আমি যেটা লক্ষ করছি, সবার ভেতরে না, কিছু কিছু নেতাদের মাঝখানে, খুব অতি উৎসাহী কথাবার্তা বলে তারা নিজেদের ভেতরে একটা বিভাজন তৈরি করছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গত পনের বছরে আওয়ামী লীগ একটা জিনিস করতে পারেনি, সেটা হলো একটা বলার মতো বা তুলনা করার মতো বিরোধী দল তারা তৈরি করতে পারেনি। অনেক চেষ্টা করেছে। সর্বশেষ ডামি নির্বাচনে চেষ্টা করেছে তাও পারেনি। বিএনপি এবার যেটা পেরেছিল, সেটা হলো অটো শক্তিশালী একটা বিরোধী দল পেয়েছিল। জামায়াত ও এনসিপি তারা যদি বিরোধী দলে আসতো, সারা পৃথিবীর কাছে আমার মনে হয় বিএনপির জন্য এটা সবচেয়ে একটা সুবিধাজনক জায়গা থাকতো।’




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা