আজ শনিবার | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১২ আশ্বিন ১৪৩২ | ৪ রবিউস সানি ১৪৪৭ | রাত ১০:০৯

না’গঞ্জের রাজনীতিতে নয়া মোড়

ডান্ডিবার্তা | ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জে রাজনীতির চিত্র বদলাতে শুরু করেছে। নতুন মোড় নিয়েছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে। অনেকে এখন পুরনো নেতাদের ছেড়ে নতুন নেতার পিছু নিয়েছেন। আর পুরনো নেতারাও বাধ্য হচ্ছেন নতুন নেতার পিছু নিতে। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে নতুন করে শক্তিমান হয়ে উঠবেন মডেল গ্রুপের মাসুদুজ্জামান যিনি ‘মডেল মাসুদ’ হিসেবেই পরিচিত। ‘আমার শিখড় অনেক গভীরে’ একাধিকবার মন্তব্য করে এ শিল্পপতি রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক নাম লিখিয়ে প্রমাণ দিলেন তার পেছনের শক্তি আসলেই শক্তিশালী ও দৃঢ়। সে কারণেই বিএনপির এ যাবতকালের রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। সদস্য হওয়ার পর জন্য রীতিমত তুলকালাম কা- ঘটিয়েছেন। কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) ছায়েদুল আলম বাবুল, ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো সহ প্রভাবশালী নেতাদের এক টেবিলে এনে যোগদানের পর্বটি সেরেছেন। আর সেটিও কেন্দ্রীয় দপ্তরের অফিসেই। বদ্ধ কক্ষের ভেতরে সদস্য সংগ্রহের এমন আয়োজনের আলোচনা শুধু রুমে না বরং কেন্দ্রস্থল নারায়ণগঞ্জেও সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আরো আলোচনায় আয়োজক হিসেবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ব্যানার ও চেয়ারে বসা ছিলেন আহবায়ক-সদস্য সচিব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি এখন বেশ হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে। মাসুদুজ্জামানের এ আয়োজনে ভবিষ্য রাজনীতির অনেক হিসেব নিকেষ কষতে শুরু করেছেন বিএনপির নানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। আর সেই আলোচনায় রীতিমত ঘি ঢেলে দেওয়ার মত মন্তব্য এসেছে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর কণ্ঠে। তিনি সকলের উপস্থিতিতেই স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘যিনি যোগ দিয়েছেন তাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকার করা নেতাকর্মীদের যেন বঞ্চিত করা না হয়। দলের ভেতরে যেন চেইন অব কমান্ড থাকে।’ টিপুর এ বক্তব্যে ভবিষ্যৎ অনেক রাজনীতির পূর্বাভাস বহন করছে। রাজনীতিতে কালো মেঘ জমেছে এটাও অনুমেয়। বক্তব্যে ছিল কিছুটা আক্ষেপ আর হতাশা। বিগত একটি কঠিন সময়ে এ সাখাওয়াত ও টিপুর নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির রাজনীতি পার করেছে মামলা, হামলা আর পুলিশের বুলেটের উপর দিয়ে। সাখাওয়াতও বক্তব্য দিতে গিয়ে চেহারা মলিন করে রাখে। দুইজনের চোখেমুখে যখন হতাশা যখন তাদের নেতৃত্বাধীন মহানগর বিএনপির কমিটির অনেক যুগ্ম আহবায়ক যারা এতদিন শৃঙ্খলা ভেঙে মাসুদের পক্ষে কাজ করেছেন, লিফলেট বিতরণ করেছেন, প্রচারণায় মগ্ন ছিলেন তাঁদের ঠোটের কোনে ছিল প্রাপ্তির লাজুক হাসি। ফেসবুকে নানা ধরনের মন্তব্যে তারাও যেন জানান দিচ্ছেন ভবিষ্যৎ রাজনীতি যেন তাদের মুঠোবন্দী থাকবে। শুরুতেই বলা হয়েছিল মাসুদের মন্তব্য ছিল ‘তাঁর শিকড় অনেক গভীরে।’ ইতোমধ্যে তিনি বাস্তবিক অর্থে প্রমাণ দিয়েছেন। এবার পালা সংগঠন গোছানো। এখন মাসুদের বলয় ভারী হবে। সাখাওয়াত ও টিপুর কমিটির অনেকেই এখন পালাবদল করবেন। কারণ আর কোন বাধা নেই। মাসুদ এখন বিএনপির। শিকড় যেহেতু দেখা দিয়েছেন এবার তিনি নিজের গোড়া আরো পোক্ত করতে হাত দিবেন কমিটিগুলোতে। মহানগর বিএনপির কমিটিও চলছে আহবায়ক কমিটির উপর করে। সম্মেলন হয়নি। সামনের কমিটির দিকে নজর থাকবে মাসুদের। মহানগর যুবদলের কমিটিও যেন মাসুদের তালুবন্দী। আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদকে দেখা গেছে মাসুদের পাশে কেন্দ্রীয় দপ্তরে। স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন রানা শুরু হতেই মাসুদের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। মহানগরের অনেক যুগ্ম আহবায়ক মাসুদের পক্ষেই সরাসরি কিংবা পর্দার আড়ালে কাজ করেছেন। মাসুদের পাশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তিনজন প্রভাবশালীকে দেখা গেল। যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ও সদস্য সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন ছিলেন। বিএনপির সাখাওয়াত সহ অনেকেই যখন বলে আসছিলেন মাসুদ বিএনপির কেউ ছিলেন না তখন দিপু ও গিয়াস জানালেন গোপন খবর। বললেন, বিগত দিনের বিএনপির আন্দোলস সংগ্রামে অনেকভাবেই সহযোগিতা করেছেন মাসুদ। সম্প্রতি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ এসে ২ মাস থেকেছিলেন মহানগর বিএনপির বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল। প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালেও তিনি জানিয়েছিলেন মাসুদের অবদান। বিগত দিনে বিএনপির কর্মসূচী, বিপন্ন নেতাকর্মীদের পাশে অকৃত্রিমভাবে সহযোগিতা করেন মাসুদ। কার্যত অর্থে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির রাজনীতিতে বড় একটি পট পরিবর্তন এখন অত্যাসন্ন। যোগদান অনুষ্ঠানে সাখাওয়াত ও টিপুর উপস্থিতি, আচরণ, বক্তব্য ও চাহনিতে যেমন ছিল হারানোর তীব্র বেদনা তেমনি তাঁরা নিজেরাও এখন দাবার গুটির ঘোড়ার আড়াই চাল বুঝতে পারেনি। অনুসারীরা বলছেন অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে রাজধানীতে যেতে বাধ্য হন এ দুই নেতা। আর কর্তার আদেশও স্পষ্ট। লঙ্ঘন করার সুযোগ নেই। ফলে আগামীতে কমিটি, নির্বাচনে মনোনয়নেও যে গভীরতা অনুধাবন করাতে পারেন মাসুদ সেটার দিকেই নজর থাকবে সবার।

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা