আজ রবিবার | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ | ৫ রবিউস সানি ১৪৪৭ | রাত ১:২৩

বিএনপির বির্তকিতদের কর্মকান্ডে অতিষ্ট সাধারণ মানুষ

ডান্ডিবার্তা | ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল হক হিরন বলেছিলেন, বন্দরে শাহিন মুরগী ধইরা সাখাওয়াতের কাছে নেয়, সেই মুরগী সাখাওয়াত জবাই করে। গেল বছর বন্দরে নূর হোসেনের কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সম্রাট হাসান সুজন। ওই ঘটনার রেস ধরে আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে গণপিটুনি দেয় নূর হোসেন সহ তার অনুগামীরা। গেল বছরের ডিসেম্বর মাসে জহিদ্দার বিলে সেচ প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছে চাঁদাবাজি করতে গেলে বিএনপি নেতা তাঁরা মিয়া ও জাহিদ খন্দকারকে পিটিয়ে পানিতে চুবিয়েছে এলাকাবাসী। এই ৪ বিএনপি চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে ওঠেছে বন্দরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষজন। মিথ্যা হয়রানিমুলক মামলায় আসামী করে বিএনপির এই ৪ নেতা শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। সাখাওয়াত ও টিপুকে দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়ে বন্দরের মানুষজনের কাছে চাঁদাবাজি করছে তারা। সেই চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারা পড়ছে সাখাওয়াত ও টিপুর পকেটে। বন্দরের স্থানীয়দের অভিযোগ- নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন বন্দর উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের একমাত্র ভরসা এখন শাহিন আহমেদ ওরফে মোটা শাহিন। এক সময় জেলা জাতীয়পার্টির সহ-সভাপতি ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন মোটা শাহিন। বিএনপির রাজনীতিতে শাহিন সক্রিয় হওয়ার পরেও বন্দরে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও গেল বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও জাতীয়পার্টির মাকসুদ হোসেনের পক্ষে কাজ করেছে শাহিন। সেই শাহিনকে দিয়ে বন্দর উপজেলা নিয়ন্ত্রণ করছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান। স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, বন্দর উপজেলা পরিষদের গত নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হোন মাকসুদ হোসেন ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। নির্বাচনে প্রকাশ্যে সাখাওয়াত ও টিপুর অনুগামীরা মাকসুদের পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনের পূর্বে শাহিনের মাধ্যমে সাখাওয়াতের দরবারে আসেন মাকসুদ হোসেন। গত ৫ আগস্টের পরেও মাকসুদকে সাখাওয়াতের দরবারে নিয়ে আসেন শাহিন। নির্বাচনের পূর্বে নারী গঠিত মামলায় মাকসুদের পক্ষে আইনি সহায়তাও দেন সাখাওয়াত। ৫ আগস্টের পর ওই নারীর সঙ্গে আপোসের ব্যবস্থাও করেছেন সাখাওয়াত নিজে। যদিও এসব কারনে সম্প্রতি গণমাধ্যমে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ বলেছেন, ‘শাহিন মুরগী ধরে সাখাওয়াতের কাছে নেয়, সাখাওয়াত সেই মুরগী জবাই করে।’ এর আগে ২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ফারুক হোসেনকেও সাখাওয়াতের দরবারে নিয়ে আসেন শাহিন। ফারুককে নিয়ে এখন বিএনপির মিটিং মিছিলে আসছেন শাহিন। জাতীয়পার্টির লোকজনকে ধরে ধরে বিএনপি বানাচ্ছেন মোটা শাহিন। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মহানগর বিএনপির কমিটিতে শাহিনকে সদস্য পদে রাখেন সাখাওয়াত। এ নিয়ে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন সাখাওয়াত। গত ২০২৩ সালের ১৩ জুন উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে শাহিনকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী করেন সাখাওয়াত। কিন্তু শাহিন পরাজিত হোন। এর আগে শাহিনকে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বানান তিনি। সম্প্রতি শাহিন আহমেদকে নিয়ে ৪৩জন নেতাকর্মীর স্বাক্ষর নিয়ে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটনের বিরুদ্ধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবার লিখিত অভিযোগ দেয়ান সাখাওয়াত। তারপর থেকে হিরন ও লিটন সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতে থাকেন। এরপর সম্প্রতি জাতীয়পার্টিঘেষা শাহিন ও আওয়ামীঘেষা মোহসীন মিয়া হিরন ও লিটনের বহিষ্কার দাবিতে এবং সাখাওয়াতের প্রতি ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এর মাস খানিক পূর্বে শাহিন গ্রুপ হিরন ও লিটনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও করেছিলেন। মুলত বন্দর উপজেলায় গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সেক্টর শাহিনকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন সাখাওয়াত। কিন্তু হিরন ও লিটন নিজেরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন অধিকাংশ সেক্টর। এ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। যদিও হিরন ও লিটনের পেছনে সমর্থন জুগিয়েছেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। অন্যদিকে গত ১ ডিসেম্বর টিপু অনুগামী ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাঁরা মিয়া জহিদ্দার বিলে মাকসুদের বোন পরিচয়দানকারী লাভলী মেম্বার ও তার স্বামী আমান উল্লাহর সেচ প্রকল্পের দখলে যায়। কিন্তু আগেই সাখাওয়াতকে ম্যানেজ করে লাভলী মেম্বার ও আমান উল্লাহ প্রকল্পের কাজ চালিয়ে গেলেও দখল করার চেষ্টা করতে থাকে জাহিদ ও তাঁরা মিয়া। ১ ডিসেম্বর চাঁদা দাবিতে দখলে গেলে মাকসুদের লোকজন জাহিদ খন্দকার ও তাঁরা মিয়াকে পিটিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে চুবিয়েছেন। পেছনে সমর্থন যুগিয়েছে সাখাওয়াত অনুগামী শাহিন, মোহসীন ও তাওলাদ হোসেনরা। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর বন্দরে নূর হোসেনের কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে টিপুর ঘনিষ্ঠজন যুবদল নেতা সম্রাট হাসান সুজন। ওইদিন বিকেলে টিপু বন্দরে গেলে টিপুকে গণপিটুনি দেয় নূর হোসেনসহ তার লোকজন। টিপু ও সুজন সহ চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে নূর হোসেনের ভাই শাহাদাত হোসেন কোর্টে চাঁদাবাজির মামলাও দায়ের করেছেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা