আজ বৃহস্পতিবার | ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | ৩১ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৭ | বিকাল ৪:১৯

নির্বিঘেœ পূজা আয়োজনে প্রশংসিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসন

ডান্ডিবার্তা | ০৪ অক্টোবর, ২০২৫ | ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আনন্দমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। শুরু থেকেই এ উৎসব নির্বিঘেœ আয়োজন ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারায় সর্বমহলে প্রশংসিত নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক নেতারা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানী ঢাকার পর সবচেয়ে জাকজমকপূর্ণ দুর্গাপূজার আয়োজন হয় নারায়ণগঞ্জে। শিল্প অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় ঘনবসতিপূর্ণ এ জেলার জনসংখ্যা অত্যাধিক বেশি। তাই নির্বিঘেœ শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন নিশ্চিতের লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যার ব্যতিক্রম ঘটেনি এ বছরও।
এ বছর জেলার ২২৪টি পূজা মÐপে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুর্গোৎসব। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া হিন্দু ধর্মালম্বীরা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উপভোগ করতে পারে তার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে হয়। পূজা মÐপগুলোর পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রায় ৮৫০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। এছাড়া সতর্ক অবস্থানে ছিল সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থা। একই সাথে পূজার পুরো সময় সার্বিক বিষয় তদারকি করার লক্ষ্যে পূজাপূর্ব ও পরবর্তী সময়ে শহরের পাশাপশি বিভিন্ন উপজেলাগুলোর পূজা মÐপগুলো পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও জেলা পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন। এছাড়াও পূজা মÐপ পরিদর্শন উপজেলা প্রশাসনও নিয়মিত পূজামÐপগুলো পরির্দশন করে। জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ সদস্যদের টহল দেন। যা বিজয়া দশমীর দিন প্রতীমা বিসর্জন পর্যন্ত দেখা যায়। পূজার সার্বিক প্রস্তুতি নিশ্চিতের লক্ষ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা প্রশাসন, সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন, র্যাব, কোস্ট গার্ড, আনসার, পূজা মÐপগুলোর কমিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিল। পূজা শুরুর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে শহরের টানবাজার সাহাপাড়া সর্বজনীন পূজা মÐপ পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হোসেন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোনাব্বর হোসেন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর কুমারসহ অনেকে। ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর শহরের মিশনপাড়া রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ও আমলাপাড়া সার্বজনীন পূজামÐপ পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড নারায়ণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. জিয়াউর রহমান। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু হয়। এদিন রূপগঞ্জ উপজেলার একাধিক পূজামÐপ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক। মহাসপ্তমী (২৯ সেপ্টেম্বর) বন্দর উপজেলার পূজা মÐপগুলোর পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক। একই সাথে তিনি রাজাঘাট বেনী মাধব ব্রহ্মচারী সমাধি মন্দির পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি পূজা উপলক্ষ্যে মÐপগুলোকে আর্থিক অনুদান দেন। এসময় উপস্থিত ছিল জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) নাঈমা ইসলাম, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত শাখা) মো. তারিকুল ইসলাম, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। একইদিন দুপুরে ফতুল্লার ডিআইটি মাঠ সংলগ্ন শ্রী শ্রী শ্যামা কালী মন্দির পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কম্পোজিট স্টেশন পদ্মা (ঢাকা জোন)-এর স্টেশন কমান্ডার মো. রাফায়েল মনোয়ার উৎসব। মহাষ্টমী (৩০ সেপ্টেম্বর) সোনারগাঁ উপজেলায় পূজামÐপগুলো পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন। মহানবমীর দিন (১ অক্টোবর) শহরের মÐপগুলো পরিদর্শন করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী ও আনসার কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্ত। দুপুরে শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল মো. জিয়াউল হক। একই দিন সন্ধ্যায় শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম পরিদর্শন র‌্যাব-১১ এর মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহীদুর রহমান। র্যাব ডিজি বলেন, “প্রতিটি ক্ষেত্রেই কঠোর আইনগত ব্যবস্থা করেছি এবং এই পর্যন্ত ১৯ জনেরও বেশি নাশকতাকরীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।” এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এসএম সাজ্জাদ হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির আহŸায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান প্রমুখ। দশমীর দিন (২ অক্টোবর) প্রতীমা বিসর্জনের সার্বিক ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি বিষয়ে কঠোর নজরদারি ছিল প্রশাসনের। বিসর্জনের মতো জনসমাগমপূর্ণ আয়োজনে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে সে লক্ষ্যে সজাগ ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ লক্ষ্যে বিকেলে শহরের ৩ নম্বর মাছ ঘাট পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুরো জেলা জুরে বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিকেলে ফতুল্লা লঞ্চঘাট সংলগ্ন প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে প্রস্তুতি দেখতে ঘাট পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিলুফার ইয়াসমিন। বিকেল ৫টায় জেলা প্রশাসক নিজে বিসর্জন স্থান পরিদর্শন করে। অন্যদিকে রাত সাড়ে ১২টায়ও জেলা পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিনকে ৩ নম্বর মাছ ঘাটে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। একই সাথে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ডের সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। সার্বিক প্রস্তুতি, নিয়মিত পরিদর্শন এবং চার স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সফলভাবে নির্বিঘেœ দুর্গাপূজা উদযাপন সম্পন্ন করেছে। প্রশাসনের এই সতর্কতা ও তৎপরতার কারণে উৎসবকেন্দ্রিক যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। সকল পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ ও সহযোগী সংস্থাগুলোর নিবিড় তদারকি, সহমর্মিতা ও দায়িত্বশীল মনোভাব স্থানীয় জনগণ এবং পূজামÐপ কমিটিগুলোর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জে সামাজিক শান্তি ও সহাবস্থানের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতের ধর্মীয় উৎসবেও শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে করেন নারায়ণগঞ্জবাসী।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা