মর্গের বেহাল দশা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জে দূর্ঘটনা ও অপমৃত্যুতে মারা যাওয়া লাশগুলো অতীতে পোষ্টমোর্টেম করা হতো শহরের মন্ডলপাড়া এলাকায়, খোলামেলা পরিবেশে। মন্ডলপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন সড়কের পশ্চিম পাশেই একটি অস্থায়ী মর্গের ভেতরে চলতো এই পোষ্টমোর্টেম। তবে এতে, প্রায় সময় লাশের পঁচা দূর্গন্ধে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরতো পথচারীরা। তাই ২০১৩ সালে এই অস্থায়ী মর্গ স্থানান্তরিত করা হয় ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের ভেতরে। সদর-বন্দর তৎকালীন সাংসদ নাসিম ওসমান মর্গটির উদ্বোধন করেন। যেটি ছিলো আধুনিক ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেই মর্গেরই এখন বেহাল দশা। মর্গের ৫টি এসির মধ্যে ৪টি বিকল হয়ে পরে আছে। তবে বিষয়টি হাসপাতাল কতৃপক্ষ অবগত থাকলেও, এসিগুলো ঠিক করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা। আর দীর্ঘদিন চেষ্টার পর মর্গে লাশ রাখার জন্য ২টি মরচুয়ারি কুলার (লাশ রাখার ফ্রিজ) কেনার পরও অজানা কারনে সেগুলো ব্যবহার করছেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কুলারগুলোর বাজার মূল্য প্রায় অর্ধোকোটি টাকা। গণপূর্ত বিভাগ নারায়ণগঞ্জের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ১টি মরচুয়ারি কুলার আনা হয় ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে। কুলারটি ক্রয়সহ স্থাপনে খরচ পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার কাছাকাছি। তবে এরপর লাশ আসলেও এই কুলার চালু করা হয়নি বলে জানিয়েছেন, মর্গের ডোম দর্পন সাহা। এয়াড়া গত কয়েকমাস আগেও আরো একটি মরচুয়ারি কুলার আনা হয়েছে মর্গের জন্য। অথচ এটি পরে আছে হাসপাতালের বর্হিবিভাগের মেঝেতে। মর্গের ডোম দর্পন সাহার দাবি,‘এই কুলারগুলো চালু রাখতে প্রচুর টাকার বিদ্যুৎ খরচ হয়। তবে লাশের স্বজনরা সেই টাকা দেয়না। তাই এগুলো চালু করে লাভ নাই।’ দর্পন সাহা আরো বলেন, ‘এসিগুলো নষ্ট হইয়া আছে বহুদিন ধইরা। আমি হাসপাতালে জানাইছি। কিন্তু এখনো এসি ঠিক করা হয় নাই।’ এ বিষয়ে হাসপাতালের আর. এম. ও ডাক্তার ফরহাদ জানান, ‘মর্গের পাশে তিনটি বড় বড় গমের মিল আছে। সেখান থেকে ডাষ্ট আসার কারণে এসিগুলো নষ্ট হয়েছে। তবে আমরা দ্রুতই এসিগুলো ঠিক করে ফেলবো। আর মরচুয়ারি কুলারের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভিক্টোরিয়া হসপাতালের এক কর্মচারি বলেছেন, ‘দুটি মরচুয়ারি কুলার আনা হয়েছে। একটি রাখা আছে, হাসপাতালের বর্হিবিভাগের ভিতরের মেঝেতে। আরেকটি কিছুদিন আগে মর্গের ভেতরে নেয়া হয়েছে। তবে সেটি এখনো চালু করা হয়নি। এভাবে ফেলে রাখলে কুলার দুটি অকেজো হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। এতে লাশের স্বজনদের আগের মতোই ভোগান্তীতে পড়তে হতে পারে। নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাক্তার ফজল মোহাম্মদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে ইতিমধ্যে দুটি কুলার মর্গের ভেতরে নেয়া হয়েছে। বাকি একটা হাসপাতালেই আছে। সেটি মর্গের ভেতরে স্থাপন করার জন্য গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুতই তারা এই কাজটি করে দেবেন। আর এসিগুলোর বিষয়েও খোঁজখবর নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’