আজ রবিবার | ১৭ আগস্ট ২০২৫ | ২ ভাদ্র ১৪৩২ | ২২ সফর ১৪৪৭ | দুপুর ১:৪২

রমজানে স্তব্ধ না’গঞ্জ আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ০৫ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:১৩ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট পবিত্র মাহে রমজান মাসকে কেন্দ্র করে অনেকটাই স্থবির অবস্থায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতি। কোথাও কোনো কর্মসূচি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সেই সাথে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও অনেকটা নীরব সময় অতিবাহিত করছেন। কোথাও যেন তাদের কোনো তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যদিও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জন্য রমজান মাসের ইফতার মাহফিল বেশ প্রচারণার সুযোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু সে অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা অনেকটা নীরব ভূমিকায় রয়েছেন। এদিকে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা হচ্ছে এবারের রমজানে কোনো ইফতার মাহফিল করা যাবে না। ইফতার মাহফিল না করে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি অবলম্বন করে সেই টাকা অসহায়দের মাঝে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু এই ইফতার সামগ্রী বিতরণেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোনো সাড়া মিলছে না। সেই সাথে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও এরকম কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করছেন না। গত ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো কোনো ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবে না। আমাদের নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে দরিদ্র মানুষের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করবেন।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আমরা ইফতারের আয়োজন না করে পার্টির পক্ষ থেকে যাঁরা কষ্টে আছেন, যাঁরা গরিব মানুষ, তাঁদের হাতে খাবার তুলে দেব।’ কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি। তাঁরা যেন নীরবে থেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন। সূত্র বলছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে হিসেবে দিন যাওয়ার সাথে সাথে ঘনিয়ে আসছে এই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সরব হতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকাকে ঘিরে। সেই সাথে এই প্রস্তুতিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এগিয়ে থাকলেও রমজানকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সরব ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, প্রতিবারই সদর-বন্দর আসনকে ঘিরে অনেক আলাপ আলোচনা সরগরম হয়ে থাকে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গন। কারণ এই আসনটিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের হাতছাড়া হয়ে আসছে। প্রতিবছরই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নৌকা প্রতীকের জোরালো দাবি জানিয়ে থাকেন। তারপরেও শেষ পর্যন্ত এই আসনটি হাতছাড়াই হয়ে যায়। তবে এবার আর নৌকা প্রতীক হাতছাড়া করতে চান না আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু সে অনুযায়ী তাদের তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তার আগে, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর-বন্দর আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশায় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দীপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম আবু সুফিয়ান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল (ভিপি বাদল), জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আরজু ভূঁইয়া, জেলা যুবলীগের সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবদুল কাদির, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদা মালা ও মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল। তবে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত এসকল মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাউকেই তেমন সরব দেখা যাচ্ছে না। সকলেই যেন নীরব ভূমিকায় থাকছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও স্থবিরতা বিরাজ করছে। জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর শহরের ইসদাইর এলাকার ওসমান পৌর স্টেডিয়ামে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আর এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। সেই সাথে সম্মেলনের শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে আবারও পুনর্বহাল করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর কমিটি হলেও নেতাদের নবায়ন করা হয়নি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে। কমিটির শীর্ষ দুই পদে সেই আগের নেতাদেরই রেখে গেছেন। যা অনেক নেতাদেরই হতাশ করে। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের এই কমিটি গঠনের প্রায় ছয় মাস পেরিয়ে যেতে থাকলেও এখন পর্যন্ত সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি। কবে নাগাদ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারবেন সেটারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুইজন দুইদিকে হেঁটে আসছেন। তাদের মধ্যে কোনো ঐক্যবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে না। একই সাথে ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তৎকালীন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। আর এই কমিটি গঠনের প্রায় ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের অধীনে থাকা ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। মাঝে মাঝে কমিটি গঠন নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত সেটা আর সফলতার মুখ দেখে না। এরই মধ্যে ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর শহরের ইসদাইর এলাকার ওসমান পৌর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পাশাপাশি মহানগর আওয়ামী লীগেরও সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই সম্মেলন বাতিল করা হয়। সেই সাথে সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে নির্দেশনা দেয়া হয় ওয়ার্ড কমিটি করার জন্য। কিন্তু এই ওয়ার্ড কমিটি গঠন করতে গিয়ে তাঁরা দফায় দফায় ব্যর্থ হচ্ছেন। সবশেষ নানা আলাপ আলোচনা শেষে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ১৮টি ওয়ার্ড সম্মেলন শুরু হয়। সবশেষ ১১ ফেব্রুয়ারি সরকারি তোলারাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ১৩নং ওয়ার্ডের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের মধ্যে শহরের ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬ জনের স্থলে ১০ জন ও বন্দরে ৯টি ওয়ার্ডে ১৮ জনের স্থলে ১ জনকে নির্বাচিত করতে পেরেছেন মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা