সাতখুন মামলার রায় দ্রæত কার্যকর করতে আইনজীবীদের মানববন্ধন
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় দশ বছরেও বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে নিহতের পরিবারের সদস্য ও বাদী পক্ষের আইনজীবীরা। এ বিচারের রায় দ্রæত কার্যকর করার দাবীতে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গনে মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের আইনজীবীরা। যেখানে অংশ নিয়েছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরাও। গতকাল রোববার দুপুরে উক্ত মামলাটি সাত বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে ঝুলে থাকা রায়টি দ্রæত কার্যকর করার দাবিতে আদালত প্রাঙ্গনে সর্বস্তরের আইনজীবীর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নিহতের পরিবার ও আইনজীবীরা। সাত খুনের ঘটনায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালীন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নিহত জাহাঙ্গীরের সহধর্মিনী নুপুর আক্তার, নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের ভগ্নিপতি প্রিয়তম কুমার দেব সহ অনেকেই। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যেই নৃশংস সাতটি তাজা প্রাণের হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে সেই নৃশংস হত্যাকান্ডের যেই রায় হয়েছে তা অবিলম্বে কার্যকর করা এবং আপিল ডিভিশনে মামলাটি যে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে তা দ্রæত নিষ্পত্তি করে রায় কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি। তারা আরো জানান, সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে এই মামলাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপিল ডিভিশনে শুনানি ব্যবস্থা করতে হবে এবং যারা দোষী তাদের শাস্তি কার্যকর করার মাধ্যমে সাত খুনের মামলার পরিসমাপ্তি হলে এর মাধ্যমে নিহতের পরিবার ও নারায়ণগঞ্জবাসী সহ সারাদেশের মানুষ একটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে এক মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের দু’দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনা থেকে ৬ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরের দিন আরও একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন থানায়। পরে আদালত আসামিদের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি ও স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৩৩ মাস পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় প্রদান করেন। রায়ে ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড ও সাত জনকে ১০ বছর করে এবং ২ জনকে সাত বছর করে কারাদন্ড দেয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট হাইকোর্ট সাত খুনের অন্যতম আসামি সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাব-১১ সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এম এম রানা সহ ১৫ জনের মৃত্যুদন্ডা আদেশ বহাল রাখা হয়েছে। আর ১১ জনের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখা হয়।