আজ রবিবার | ১০ আগস্ট ২০২৫ | ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৫ সফর ১৪৪৭ | সকাল ১০:৪১

পাহাড়েও বেনজীরের অঢেল সম্পদ

ডান্ডিবার্তা | ০৩ জুন, ২০২৪ | ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও পাওয়া গেছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিশাল সম্পত্তি। জেলার সুয়ালক ইউনিয়নে ও লামার সরই ইউনিয়নে স্ত্রী-কন্যা ও নিজের নামে কিনেছেন অধিক জায়গা।ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে কেনা সম্পত্তির পাশাপাশি দখল করে নিয়েছেন অনেক দরিদ্র পরিবারের জায়গাও। এসব জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের বাগান, মৎস্য ঘের, গরুর খামারসহ আলিশান বাগানবাড়ী। দুদকের অভিযানের পর বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের মাঝের পাড়া এলাকায় স্ত্রী জীশান মির্জা, মেয়ে ফারহিন রিশতা ও নিজ নামে ক্রয় করেছেন ২৫ একর জায়গা। ওই জায়গায় গড়ে তুলেছেন মৎস্য ঘের গরুর খামারসহ আলিশান বাগানবাড়ি। যাতায়াতের জন্য করা হয়েছে রাস্তা। জায়গার আশাপাশে কোনো জনবসতি না থাকলেও বেনজীরের জায়গায় দেখা যায় বিদ্যুতের সংযোগ। আর অবকাশযাপনের জন্য করা হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোতলা বাড়ি। শুধু তাই নয়, জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি মৌজায় বেনজীর কিনেছেন ২৫ একরের চারটি লিজ করা পাহাড়ি প্লট। স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া পার্বত্য এলাকায় অন্য কেউ জমি ক্রয়ের বিধান না থাকায় শুধুমাত্র নোটারি পাবলিকের মাধ্যমেই নামমাত্র মূল্যে কিনেছেন এসব জায়গা। রেজিস্ট্রি না করায় প্রশাসনের কাছে নেই জায়গার কোনো দলিল। আর নিজে দেখাশোনা করতে না পারায় জমি ক্রয় করার পর মংওয়াইচিং নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় এসব জায়গা দেখাশোনা করার জন্য। তার মাধ্যমে সেখানে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বাগান। স্থানীয়দের অভিযোগ নামমাত্র মূল্যে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের করে নিয়েছেন এসব জায়গা। এ বিষয়ে সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি টংগাঝিরি এলাকার বাসিন্দা অজিত ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা ছোট ছিলাম। অভাবের কারণে বাবা আমাদের পাঁচ একর জায়গা বেনজীরের নামে এক পুলিশ অফিসারের কাছে বিক্রি করে দেন। শুধু আমাদের পরিবার না, অনেকে পরিবারের জায়গা পুলিশ অফিসার নামমাত্র কিছুটা দিয়ে নিয়ে নেন। আবার অনেকেই বাধ্য হয়েছে জায়গা বিক্রি করে দিতে পুলিশ অফিসারের কাছে।’ টংগঝিরি এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে প্রায় ৬৫-৭০টি ত্রিপুরা পরিবার ছিল। এখন ২৫-৩০ পরিবার আছে। বেনজীর নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে জায়গা দখল করে বাগান করেছেন।’ সরই ডলুছড়ি মৌজায় বেনজীরের জায়গা দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত থাকা ইব্রাহিম বলেন, ‘এক পুলিশ অফিসারের জায়গা শুনেছি, কিন্তু ওনার সাথে আমার কখনো দেখা বা যোগাযোগ হয় নাই। আমাকে বান্দরবানের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মংওয়াইচিং নিয়োগ দিয়েছেন। ওনি আমাকে মাসে মাসে এসে বেতন দিয়ে যান। এখানে কাগজপত্রে ৫৫ একর জায়গা থাকলেও আমি দেখাশোনা করি ২৫ একর।’ কেয়ারটেকার ইব্রাহিমের স্ত্রী বলেন, ‘আমি আগে বাগানে থাকতাম না। কিছুদিন হলো বাগানে এসেছি, এটা কার জায়গা আমি কিছুই জানিনা, তবে এখন শুনতেছি বেনজীর নামের এক পুলিশ অফিসারের জায়গা। অনেক লোকজন আসতেছে, জায়গা দেখতে। অনেকে এসে ভিডিও করতেছে। তবে কি কারণে কেন আসতেছে লোকজন, সে বিষয়ে কিছুই জানিনা।’ এ বিষয়ে সুয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা বলেন, ‘বান্দরবানে বিভিন্ন এলাকায় বেনজীরের নামে অনেক সম্পত্তি আছে। আমার ইউনিয়নেও বেনজীরের সম্পত্তি আছে। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা হবে।’ উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে র‌্যাবের মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নামে বেনামে বান্দরবানে জায়গা কেনেন বেনজীর আহমেদ।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা