আজ রবিবার | ১০ আগস্ট ২০২৫ | ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৫ সফর ১৪৪৭ | দুপুর ১২:৫৪

বিএনপির রাজনীততে রদবদল শুরু

ডান্ডিবার্তা | ২৮ জুন, ২০২৪ | ১০:০২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সা¤প্রতিক সময়ে বিএনপিতে যে ভূমিকম্প হচ্ছে তার সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি হলেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিএনপিতে বড় ধরনের রদবদল গুলো সবই হচ্ছে রিজভীর ইচ্ছায়, তার আকাঙ্ক্ষা। এই সমস্ত রদবদলের মাধ্যমে যাদের পদোন্নতি হচ্ছে, যারা বিভিন্ন দায়িত্ব পাচ্ছেন, তারা সবাই মোটামুটি রিজভীর লোক হিসেবে পরিচিত। আর এই ভূমিকম্পে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বিএনপির হেভিওয়েট তিন নেতা। এরা হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তাদের বদলে বিএনপিতে রিজভী যুগের সূচনা হচ্ছে বলেই দৃশ্যমান হচ্ছে। সা¤প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে যে রদবদল হয়েছে, সেখানে রুহুল কবির রিজভীর জয়জয়কার। তার পছন্দের লোকদের প্রায় সবারই পদোন্নতি ঘটেছে। তার পছন্দের লোকেরাই বিভিন্ন জায়গা পেয়েছে। এ ছাড়াও ছাত্রদলের নতুন কমিটিতেও রুহুল কবির রিজভীর জয়জয়কার। আর এই সব হওয়ার ফলে এখন মহাসচিব হিসাবে রুহুল কবির রিজভীর আনুষ্ঠানিক অভিষেক এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে বিএনপির তৃণমূল তাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের পছন্দের মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আর লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এখন রুহুল কবির রিজভীকেই পছন্দ করছেন নানা বাস্তবতায়। পাঁচটি কারণে এখন রুহুল কবির রিজভীর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন বলে দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন। প্রথমত, রুহুল কবির রিজভী এখন আজ্ঞাবহ নেতায় পরিণত হয়েছেন। তারেক জিয়া যা বলছেন সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করার ক্ষেত্রে তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে হারিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, দলীয় কার্যালয়ে থাকা, সার্বক্ষণিকভাবে দলের জন্য সময় দেওয়া ইত্যাদি কারণে রিজভীর ওপর তারেক জিয়ার আস্থা বেড়েছে। তৃতীয়ত, তৃণমূল কর্মীরা রুহুল কবির রিজভীকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, সব সঙ্কটের সময়ে রিজভী দলের কার্যালয় আগলে থাকেন। বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তাকে দেখা যায়। এ জন্য তিনি বিকল্পহীন। চতুর্থত, রিজভীর সঙ্গে সরকারের কোন ধরনের গোপন বা প্রকাশ্য যোগাযোগ নেই। এটি রিজভীর জন্য একটি ইতিবাচক প্লাস পয়েন্ট হিসাবে দেখা দিয়েছে। তারেক জিয়া যে খোঁজখবর নিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে বিএনপির প্রায় সব নেতাই কোনো না কোনোভাবে সরকারের সঙ্গে প্রকাশ্যে বা গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। শুধুমাত্র রুহুল কবির রিজভী তার আশ্চর্য ব্যতিক্রম। আর এই কারণেই রিজভীর প্রতি তারেকের আস্থা বেড়েছে।পঞ্চমত, সা¤প্রতিক সময়ে ভারতে নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে ভারত বিরোধী মনোভাব নতুন করে দানা বেঁধে উঠেছে। এই ভারত বিরোধিতাকে উস্কে দেওয়ার জন্যই রুহুল কবির রিজভীকে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে পছন্দ করা হচ্ছে। কারণ রুহুল কবির রিজভী বিএনপিতে কট্টর ভারত বিরোধী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। নিজে তার শাল পুড়িয়ে দিয়ে এবং ভারতের বিরুদ্ধে অবিরত কথা বলে তিনি ভারত বিরোধী প্রধান বিএনপির নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভারতের নির্বাচনের পর এখন বিএনপি মনে করছে যে, ভারত বিরোধিতার মাধ্যমে বিএনপি টিকে থাকতে পারে। আর এ কারণেই রুহুল কবির রিজভী কদর বেড়েছে দলে। খুব নাটকীয় কিছু না হলে অচিরেই বিএনপিতে রুহুল কবির রিজভীর যুগের সূচনা হবে বলে জানাচ্ছেন দলটির সংশ্লিষ্ট নেতারা। এদিকে সা¤প্রতিক সময়ে বিএনপিতে যে বড় ধরনের রদবদল গুলো হচ্ছে সেই রদবদলে রুমিন ফারহানার নাম কোথাও নেই। তার পদোন্নতি হয়নি। তিনি কোন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতেও স্থান পাননি। রুমিন ফারহানা কোথাও নেই কেন—এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে যেমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তেমনি রাজনৈতিক অঙ্গনেও সৃষ্টি হয়েছে রহস্যের ধুম্রজাল। যে রুমিন ফারহানা ক দিন আগেও প্রচÐ ক্ষমতাবান ছিলেন, প্রভাবশালী ছিলেন, বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারকে পরিণত হয়েছিলেন অল্প সময়ের মধ্যে তিনি এখন কোথাও নেই কেন—এ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সা¤প্রতিক সময়ে কিছু কিছু বিষয় নিয়ে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে রুমিন ফারহানার মতবিরোধ হওয়ার কারণেই রুমিন ফারহানা কোথাও নেই। উল্লেখ্য যে, ভাষা সৈনিক অলি আহাদের কন্যা রুমিন ফারহানা টকশোতে একজন পরিচিত মুখ। প্রতিদিনই তিনি টকশোতে সরকারের বিরুদ্ধে আগ্রাসী ভাষায় কথাবার্তা বলতেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত কোটা এমপি হওয়ার পর সেখানে বিএনপির পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন। ক‚টনৈতিক অঙ্গনেও তিনি পরিচিত মুখ ছিলেন। বিভিন্ন ক‚টনৈতিক মহলে তার যাতায়াত ছিল এবং তাদের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন হিসেবে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছিলেন। সেই রুমিন ফারহানাকে কেন বাদ দেওয়া হল, বিএনপির সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে তিনি কেন এখন কোথাও নেই? রুমিন ফারহানা কেন কোথাওনেই—এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। রুমিন ফারহানার নির্বাচনী এলাকার একজন বিএনপি নেতা এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন এবং তিনি লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার সহকারী হিসাবে সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। তার মাধ্যমে তারেক রুমিন ফারহানার সম্বন্ধে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, রুমিন ফারহানা ২৮ অক্টোবরের পর গোপনে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এবং তাদের সাথে বৈঠক করেছিলেন। এছাড়াও তারেক জিয়ার কাছে খবর এসেছে যে, রুমিন ফারহানা বিভিন্ন ক‚টনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখেছিলেন এবং বিএনপিকে নির্বাচনে আনা যায় কি না সে ব্যাপারে শলা পরামর্শ দিয়েছিলেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে, দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি ক‚টনীতিক অঙ্গনে কথা বলেছেন- এমন তথ্যপ্রমাণ তারেকের হাতে রয়েছে। অন্য একটি সূত্র বলছে, রুমিন ফারহানা ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন একজন ব্যক্তি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে বিভিন্ন জায়গায় লাইম লাইটে এনে ছিলেন। ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারণে তিনি বিভিন্ন দূতাবাস এবং ক‚টনৈতিকপাড়ায় যেতেন এবং সেখানে তিনি দলের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অবস্থান যেহেতু এখন টলটলয়মান সেহেতু রুমিন ফারহানা এখন কোথাও জায়গা পাচ্ছেন না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে রুমিন ফারহানার সাথে সরকারের গোপন যোগাযোগের তথ্য পেয়েছে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। আর এই সমস্ত যাচাই বাছাই করে সত্যতা পাওয়ার প্রেক্ষিতেই রুমিন ফারহানাকে দলের সব জায়গা থেকে কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে। আর সে কারণেই এখন রুমিন ফারহানা কোথাও নেই বলে মনে করছেন বিএনপির নেতারা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা