আজ শনিবার | ১০ মে ২০২৫ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ১১ জিলকদ ১৪৪৬ | সকাল ৮:০৬
শিরোনাম:
সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজরা বেপরোয়া কোটি টাকার মালামাল লুট    ♦     শেখ হাসিনা গডফাদারদের রক্ষা করতে ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিল    ♦     পুলিশ কেন আত্মহত্যা করে?    ♦     শেখ হাসিনা গডফাদারদের রক্ষা করতে ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিল    ♦     রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন খালেদা জিয়া    ♦     সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল    ♦     রূপগঞ্জে জমিদার সিটির সাইনবোর্ড গুড়িয়ে দিলো ভ্রাম্যমান আদালত    ♦     মুসলিমনগর এলাকার জ্বলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন    ♦     বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতির মামলা বাণিজ্যের অডিও ফাঁস    ♦     আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞ: জাকির খান    ♦    

চা বিক্রির টাকায় জমি কিনে মাদরাসায় দান

ডান্ডিবার্তা | ০৮ মার্চ, ২০২৫ | ১২:৩০ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বন্দরের সাবদি এলাকার বাসিন্দা রুবেল মিয়া চা বিক্রির উপার্জিত টাকা দিয়ে মাদরাসা জন্য জমি দান করেছেন। নিজের পড়ালেখার গÐি বেশিদূর আগাতে না পারলেও তিনি চান না ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার মতো থেমে যাক। সেই সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ধর্মীয় শিক্ষা-দীক্ষাতেও এগিয়ে থাকে সেটাও তার চাওয়া। তাই রুবেল মিয়া চা বিক্রির উপার্জিত টাকা দিয়ে মাদরাসার জন্য প্রায় ৯ শতাংশ জমি কিনে দান করেছেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এর আগে রুবেল মিয়ার বাবা হাসিব মিয়া ২০০২ সালের দিকে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবদী হাজরাদী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ব্র²পুত্র নদের তীরে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান গড়ে তুলেন। আর রুবেল মিয়া সপ্তম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় চায়ের দোকানে সময় দিতে থাকেন। এরপর ২০১৪ সালের দিকে তার বাবা মৃত্যুবরণ করলে পুরো দোকানের হাল ধরেন রুবেল মিয়া। সেই সঙ্গে ভিন্ন স্বাদের মালাই চা বানিয়ে বিক্রি করা শুরু করেন। বছর না ঘুরতেই তার মালাই চায়ের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আর এ মালাই চা যেন তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দেয়। আর এ চা বিক্রির টাকায় মাদরাসার জন্য জমি ক্রয় করেন। তার নির্মিত জায়গায় মাদরাসা নির্মাণ করা হয়। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘কাদেরিয়া তাহেরিয়া সাবেরিয়া হাসিবিয়া মাদরাসা’। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মাদরাসাটির কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগ্রহণ শুরু করেন। মাদরাসায় ৭ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। রুবেল মিয়ার উদ্দেশ্য এ মাদরাসাটিকে শ্রেষ্ঠতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। সরেজমিনে গিয়ে রুবেল মিয়ার চায়ের দোকানে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, রাজধানী ঢাকাসহ প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে এক কাপ চা পানের জন্য আসছেন মানুষ। প্রতিদিন মালাই চাসহ বিভিন্ন ধরনের পাঁচ শতাধিক কাপ চা বিক্রি হয় তার দোকানে। ছুটির দিনে চা বিক্রির সংখ্যা হাজার কাপ ছাড়িয়ে যায়। মালাই চা ছাড়াও দোকানটিতে দুধ চা, কফি, হরলিক্স চা, ডাবল মালাই চা, মালাই দুধ, কাপ দইসহ হরেক ধরনের ঘরে তৈরি মিষ্টি বিক্রি হয়। এছাড়া রমজান মাসে বোরহানি বিক্রি করা হয়। রুবেল মিয়া বলেন, ২৩ বছর ধরে চা বিক্রির সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। তবে ২০১৫ সাল থেকে আমার বানানো মালাই চা ভাইরাল হয়। এরপর থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫শ থেকে ৭শ কাপ চা বিক্রি হয়ে থাকে। এর মধ্যে দুধ চা ১৫ টাকা, মালাই চা ৪০ টাকা ও ডাবল মালাই চা ৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আমার এখানে আসে। সেই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরে আমার বেশ ভালো আয় হয়। সেই আয় থেকে মাদরাসা জন্য জায়গা কিনেছি। মাদরাসায় জমি দান করার প্রসঙ্গে রুবেল বলেন, আমি তেমন পড়াশোনা করতে পারি নাই। মাত্র ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছিলাম। পরে এ চায়ের দোকানে মনোযোগ দেই। চায়ের দোকান দেওয়ার আগে থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল উপার্জনের টাকা দিয়ে কোনো ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার। দীর্ঘদিন পর আমার সে আশা পূরণ হয়। আমার এলাকায় মাদরাসা নির্মাণের জন্য আমি ৯ শতক জমি আঞ্জুমান ট্রাস্টে দান করে দেই। মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই মাদরাসা নির্মাণ করতে পেরেছি। চাইলে আমি এ জায়গায় অন্য কিছু করতে পারতাম। কিন্তু এখন যা করেছি তার সওয়াব আমার মৃত বাবা সারাজীবন পাবেন। আমার স্বপ্ন হচ্ছে এখান থেকে শত শত কোরআনের হাফেজ বের হয়ে আসবে। আমার মাদরাসাটির প্রতি এলাকাবাসী অনেক আন্তরিক। বিভিন্ন সময় তারাও অনেক সহযোগিতা করে থাকেন। বর্তমান টিনসেট কক্ষে মাদরাসার কার্যক্রম চলছে। তবে আমার ইচ্ছা আছে চা বিক্রির টাকায় ও এলাকাবাসীর সহায়তায় ২০২৭ সালের মধ্যে মাদরাসাটির পাকা ভবন নির্মাণ করার। এটি ছাড়া আমার আরও কিছু প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার ইচ্ছা রয়েছে। এদিকে রুবেল মিয়ার এ মহৎ কাজে এলাকাবাসী মুগ্ধ। শাহজাহান মিয়া নামে একজন বলেন, রুবেল মিয়ার মালাই চা অনেক সুস্বাদু ও মজাদার। একই সঙ্গে তার আচার-আচরণও অনেক ভালো। সে কারণে মুগ্ধ হয়ে চা প্রেমীরা দূর-দূরান্ত থেকে এখানে চা খেতে চলে আসেন। তিনি চা বিক্রির টাকা দিয়ে মাদরাসার জন্য জমি কিনেছেন এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। তার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কাদেরিয়া তাহেরিয়া সাবেরিয়া হাসিবিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ এমএ মোতালিব সরকার বলেন, রুবেল মিয়াসহ আরও কয়েকজন উদ্যোগে এ মাদ্রাসা নির্মাণ হয়। উদ্যোগের তিন মাসের মধ্যে মাদরাসাটির কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়েছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে মাদরাসাটি অনেকদূর এগিয়ে যাবে। রুবেল মিয়ার প্রতি আমরা সবাই কৃতজ্ঞ। তিনি জমি দান করেছেন বলে মাদরাসাটি নির্মাণ করতে সহজ হয়েছে। বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তার এ উদ্যোগ আমরা সাধুবাদ জানাই। এরকম উদ্যোগ আরও মানুষজন নিয়ে থাকেন তাহলে আমাদের সমাজের জন্য উপকার হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা