আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৩:২১

হাইকোর্টের নির্দেশকে অবজ্ঞা ভ’মি কমর্তার

ডান্ডিবার্তা | ১১ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দেশের উচ্চ আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন সোনারগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ৩০ দিনের মধ্যে একটি দরখাস্ত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিলে সরকারি পদ, পদবি ও ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার করে হাইকোর্টের নির্দেশকে সরাসরি অমান্য ও লঙ্ঘন করেন সোনারগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ। এমনকি আইন অমান্য করে নকল প্রদানে অস্বীকৃতি জানান এই কর্মকর্তা। একদিকে, হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা, অন্যদিকে, নিজস্ব আইনকে উপেক্ষা করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি দরখাস্ত নিষ্পত্তি না করে এবং নকল প্রদান না করে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছেন। অভিযোগ উঠেছে, শুধুমাত্র অনিয়ম, দুর্নীতি ও মোটা অংকের ঘুষ গ্রহন এবং কন্ট্রাক্ট করে বিবিধ মোকদ্দমার রায় এবং নামজারী করতেই একের পর এক আইন ভঙ্গ করে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছেন সোনারগাঁও সার্কেলের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে,  সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনারগাঁও সার্কেল, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জে চলামান বিবিধ মোকদ্দমা নং-১১৫/২০২৩তে বিবাদী মোঃ মোক্তার হোসেন। “সূত্রে বর্ণিত মোকদ্দমার বাদী বিবাদীর মধ্যে একই তফসিলভূক্ত সম্পত্তি নিয়ে অত্র আদালতে বিবিধ মোকদ্দমা ১০৯/২০১০, বিবিধ মোকদ্দমা ৩৮/২০১৯ এবং বিবিধ মোকদ্দমা ৩৮/২০১৯ এর রায়ের বিরুদ্ধে অত্র মোকদ্দমার বাদী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে মিস আপীল মোকদ্দমা ১৬১৪/২০২২ নিষ্পত্তি হওয়ায় আইনত ও ন্যায়ত সূত্র বর্ণিত মোকদ্দমাটি চলতে পারে না বিধায় মোকদ্দমাটি নথিজাত করন এর প্রার্থনা” শীর্ষক একটি দরখাস্ত দেন। কিন্তু উক্ত দরখাস্তটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনারগাঁও সার্কেল, সোনারগাঁও সরকারি পদ, পদবি ও ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত নিষ্পত্তি না করায় বিবাদী হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন মোকদ্দমা নং-৮৯৭৮/২০২৫ দায়ের করেন। পরবর্তীতে গত ৪জুন হাইকোর্ট বিভাগে শুনানী অন্তে দরখাস্তটি ৩০ দিনের মধ্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনারগাঁও সার্কেল, সোনারগাঁওকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে বিবাদী পক্ষ গত ৩০ জুন লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে এবং বিগত ৯ জুন হাইকোর্টের আদেশ এসিল্যান্ড অফিসে জারি করেন। গত ৮ আগষ্ট ৩০ দিন অতিবাহিত হলেও মঞ্জুরুল মোর্শেদ সরকারি পদ, পদবি ও ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করে হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ সরাসরি লঙ্ঘন ও অমান্য করে গতকাল রোববার পর্যন্ত দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করেন নাই।  এছাড়াও বিবাদী বিগত ১৩ এপ্রিল সহি মুহুরি নকল চেয়ে দরখাস্ত করলেও নকল প্রদান করেন নাই। এ বিষয়ে বিগত ২৬জুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর মাধ্যমে জাস্টিস ডিমান্ডিং নোটিশ প্রেরন করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনারগাঁও সার্কেলকে সহি মুহুরি নকল প্রদানের জন্য অনুরোধ করলেও এ পর্যন্ত নকল প্রদান করেন নাই। মঞ্জুরুল মোর্শেদ ৩০ দিনের মধ্যে দরখাস্তটি নিষ্পত্তি না করে শুধু হাইকোর্টের রায়কে অমান্য করেন নাই, রাষ্ট্রের আইনকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা। হাইকোর্ট ৪ জুন আদেশ দেন, এসিল্যান্ড যেন আবেদনটি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে উক্ত দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করেন। তবে রিট আবেদনকারী মোক্তার হোসেন অভিযোগ করেন, “হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পরও দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করেননি ভূমি অফিস। এমনকি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর পরও মামলার নকল পর্যন্ত আমাকে দেয়নি।” এ বিষয়ে সোনারগাঁও সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মোক্তার হোসেন বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রিটের আদেশের কপি ও জাস্টিস ডিমান্ডিং নোটিশের কপি পেয়েছি। দরখাস্তটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি, তবে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী এসিল্যান্ড স্যার দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করবেন। হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময় গত ৮আগষ্ট শেষ হয়েছে অথচ এ পর্যন্ত দরখান্তটি কেন নিষ্পত্তি হয়নি? এ বিষয়ে এসিল্যান্ড স্যারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। নকল রেডি করে এসিল্যন্ড স্যারের টেবিলে দেওয়া হয়েছে। স্যার স্বাক্ষর করলেই দিয়ে দিবো। নকল দিতে ৪ মাস সময় লাগে কিনা? এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি। এ বিষয়ে সোনারগাঁও সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মহসিন মিয়া বলেন, অনেক বিবিধ মোকদ্দমা। এখন এই বিবিধ মোকদ্দমার কথা বলতে পারছি না। তবে ধ্যর্য তারিখ ছাড়া কোন দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়নি। হাইকোর্ট আদেশ ৩০ দিনের বেশি হলে সমস্যা নাই। আগামী ধার্য্য তারিখে দরখাস্ত নিষ্পত্তি করে একেবারে নকলসহ আদেশের কপি দিয়ে দিবো। এ বিষয়ে সোনারগাঁও সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ বলেন, হাইকোর্ট যে দরখাস্তটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন তা নিষ্পত্তি হয়নি। দেখেন, এসিল্যান্ড অফিসও একটি কোর্ট। এখানে মামলা নিষ্পত্তির কিছু প্রসেস আছে। এই আদালতের প্রসেস অনুযায়ী দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করা হবে। নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী খন্দকার মাজেদুল ইসলাম সম্রাট বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের আদেশের পরও দরখাস্তটি নিষ্পত্তি না করা এবং জাস্টিস ডিমান্ডিং নোটিশ পাবার পরও নকল না দেওয়ায় সহজেই বুঝা যায় এই অফিসে সাধারণ মানুষ কি সেবা পান। সোনারগাঁওয়ের এসিল্যান্ড মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ পালন করতে আইনত বাধ্য হওয়া সত্বেও পালন না করায় ওনি পদের শপথ ভঙ্গ করেছেন। দরখাস্তকারীর উচিত মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে কন্টেম পিটিশন ফাইল করা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা