আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | দুপুর ২:৪১

আদালতে নেই আওয়ামী আইনজীবীরা

ডান্ডিবার্তা | ১২ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগ ও তাদের সমমনা দলের আইনজীবী নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। যাদের অনেকেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ও নিহতের ঘটনায় একাধিক মামলার আসামী হয়েছেন। বর্তমানে কয়েক’শ আইনজীবী আদালতপাড়ায় আইন পেশা পরিচালনা করতে পারছেন না। যাদের নেপথ্যে রয়েছেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও তার বেয়াদব খ্যাত পুত্র আশরাফুল ভুঁইয়া সহ বিএনপি ঘরনার বেশকজন আইনজীবী, যারা আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর কোর্টপাড়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ওঠেছেন আইনজীবী সমাজ। আদালতপাড়ার সূত্রে জানাগেছে, গত ৬ এপ্রিলও আইনজীবী ফিরোজ মিয়াকে মারধর হুমকি ধমকি দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট থেকে বের করে দিয়েছেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও তার পুত্র অ্যাডভোকেট আশরাফ ভুঁইয়া। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই পিতা পুত্রের অত্যাচারে কোর্টছাড়া হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক আইনজীবী। এর আগে জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের ভেতরে জজের সামনে টেবিলে ওঠে অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ মোল্লাকে ফিল্মি স্টাইলে লাথি মেরে ফেলে দেয় আশরাফ ভুঁইয়া। এ সময় তার পিতা বারী ভুঁইয়াও তখন সমানে রউফ মোল্লা ও মনিরুজ্জামান কাজলকে এলোপাতারি কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকেন। ৫ আগস্টের পর থেকে কোর্টপাড়ায় সর্বোচ্চ বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও তার বেয়াদব খ্যাত পুত্র আশরাফ ভুঁইয়া। বারী ভুঁইয়ার আচরণে পরিলক্ষিত হচ্ছে তিনি যেনো পুরোনো দিনে ফিরে গেছেন পুরোনো চরিত্রে। আদালত সূত্রে আরো জানাগেছে, গত ৬ এপ্রিল রবিবার কোর্টে একটি মামলা পরিচালনা করতে যান আওয়ামীলীগ পন্থী আইনজীবী ফিরোজ মিয়া। ওই সময় তুচ্ছ অজুহাত তুলে ফিরোজ মিয়াকে মারধর করে আশরাফ ভুঁইয়া। পরে বারী ভুঁইয়া উল্টো গালিগালাজ করে ফিরোজকে কোর্ট থেকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যায়িত করে বের করে দেন। এক সপ্তাহ কোর্টে আসতে পারেনি ফিরোজ মিয়া। এভাবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় দেড় শতাধিক আইনজীবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, কাউকে হুমকি ধমকি ভয়ভীতি দেখিয়ে, কাউকে মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে কোর্টছাড়া করেছেন বারী ভুঁইয়া ও তার পুত্র। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করেন মহানগর আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন। কোর্ট জামিন শুনানীর জন্য পরবর্তী ৩ মার্চ দিন ধার্য্য করেন। শুনানি শেষে কাঠগড়া থেকে নামামাত্র এজলাসের ভেতরেই আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও তার ছেলে আশরাফ ভুঁইয়া তখন ওয়াজেদ আলী খোকনকে কিল গুষি দিয়ে এলোপাতারি মারধর শুরু করেন। এ সময় খোকনকে রক্ষা করতে তার জুনিয়র আইনজীবী আব্দুর রউফ মোল্লা ও মনিরুজ্জামান কাজল এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেদম পিটুনি দেয়া শুরু করেন বারী ও তার ছেলে সহ বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে বিচারকের সামনেই এজলাসের ভেতরে টেবিলে উঠে রউফ মোল্লাকে লাথি দেয় আশরাফ ভুঁইয়া। রউফ মোল্লা লুটিয়ে পড়লে সেখানেও যে যেভাবে পেরেছে কিল ঘুষি লাথি মেরেছেন। তাদের মারধরের ঘটনায় কোর্ট থেকে বিচারক নেমে যান। ঘটনাস্থল থেকে কোর্ট পুলিশ ওয়াজেদ আলীকে উদ্ধার করে কোর্টের বাহিরে ছেড়ে দেয় এবং ফতুল্লা থানা পুলিশ ওয়াজেদ আলীকে আটক করে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আদালতপাড়ার সূত্রে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে কোর্টে আসছেন না আওয়ামীলীগের সিনিয়র পর্যায়ের প্রায় দুই ডজন আইনজীবী নেতা। তাদের সঙ্গে সঙ্গে মধ্যমসারি ও জুনিয়র প্রায় কয়েক’শ আইনজীবী হুমকি ধমকি ও হামলা মামলার ভয়ে কোর্টে আসছেন না। প্রতিনিয়ত বারী ভুঁইয়া ও তার পুত্র আওয়ামীলীগের আইনজীবীদের হুমকি ধমকি দিয়ে কোর্ট থেকে বের করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়ে কোর্ট থেকে চুপসে বের হয়ে যাচ্ছেন। লোকলজ্জার ভয়ে মুখ খুলছেন না অনেকে। শুধু বারী ও তার পুত্রই নন বিএনপি জামাতের অনেক আইনজীবীরাও এমন আচরণ করেছেন। কিন্তু বিএনপি জামাতের সেইসব আইনজীবীদের আচরণে শিথিলতা আসলেও দিনকে দিন বারী ও তার পুত্র আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন। তাদের আচরণে মনে হচ্ছে কোর্টকে তারা তাদের বাপ পুতের হাতে বানানো ঘর বাড়ি মনে করছেন। অন্যদিকে ভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, এক সময় কুমিল্লা থেকে জায়গির অর্থাৎ লজিং মাস্টার হিসেবে নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও দেওভোগ এলাকায় বসবাস করতে থাকেন বারী ভুঁইয়া। বিএনপির সাবেক নেতা তৈমূর আলম খন্দকারের হাত ধরে আইন পেশায় আসেন তিনি। বিএনপির রাজনীতিতেও প্রতিষ্ঠিত হোন তৈমূর আলমের হাত ধরে। ২০০১ সালে গিয়াসউদ্দীন এমপি নির্বাচিত হলে গা ভাসায় গিয়াসের সঙ্গে। গিয়াসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেই সময় তিনি কি কি কর্মকা- করেছিলেন তা নারায়ণগঞ্জবাসী অবগত। রাজনীতি ও আইন পেশায় অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে তিনি ফতুল্লার কায়েমপুরে বিশালবহুল বাড়িও নির্মাণ করেন। সেই এলাকার মানুষের সঙ্গেও তারা বাপ পুতে অস্বাভাবিক আচরণ সহ ঝগড়া বিবাদের ঘটনা ঘটাতো। ২০২৩ সালে স্থানীয় নজরুল ইসলামের পরিবারের সঙ্গে বিবাদে ঝড়িয়ে এলাকা থেকে বিতাড়িত হয়ে কোর্টের পিছনে একটি বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করছেন বারী ভুঁইয়া।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা