আজ শুক্রবার | ২২ আগস্ট ২০২৫ | ৭ ভাদ্র ১৪৩২ | ২৭ সফর ১৪৪৭ | দুপুর ২:০৩
শিরোনাম:
বাসভাড়া বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ না’গঞ্জবাসী    ♦     নির্বাচনের ব্যাপারে প্রফেসর ইউনূস সিরিয়াস    ♦     বাংলাদেশে এক ধরনের উগ্রবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে    ♦     নতুন বাংলাদেশে আমরা শেখ মুজিবকে কীভাবে দেখব    ♦     ব্যক্তিগত অর্থায়নে একের পর এক রাস্তা সংস্কার করেই যাচ্ছেন মাকসুদ হোসেন    ♦     আইনজীবীদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় মাঠে বিদ্রোহী প্যানেল    ♦     আদালতপাড়ায় জামায়াতপন্থী আইনজীবী প্যানেলের গণসংযোগ    ♦     সিদ্ধিরগঞ্জে জাতীয় যুব ফোরামের উদ্যোগে হাই স্কুলে ক্রীড়া সরঞ্জাম বিতরণ    ♦     সিদ্ধিরগঞ্জে মসজিদের নির্মাণ কাজে বিএনপি নেতার বাঁধা    ♦     ফতুল্লায় বিএনপির ৩ নেতাকে অব্যাহতি    ♦    

নতুন বাংলাদেশে আমরা শেখ মুজিবকে কীভাবে দেখব

ডান্ডিবার্তা | ২২ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ

সাইমুম পারভেজ
বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ মুজিবুর রহমান একটি বিশেষ চরিত্র। স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা হিসেবে শেখ মুজিব যেমন বাংলাদেশিদের কাছে একটি প্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব, তেমনি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, বাক্‌স্বাধীনতা হরণ ও বিরোধী মত দমনের কারণে আশাভঙ্গের কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে তাঁর একদল বাকশালভিত্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেশ শাসনে যেমন ব্যর্থতার পরিচয় দেয়, তেমনি রাষ্ট্রের ভঙ্গুর অর্থনীতি ও বিরোধীদের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের জন্যও তাঁর শাসনামলকে দায়ী করা যায়। জনপ্রিয়তার উচ্চ শিখর থেকে মুজিব দেশ শাসনের যাত্রা শুরু করেছিলেন, কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই জনপ্রিয়তার পারদ নিচে নামতে শুরু করে। তাঁর শাসনের বিরুদ্ধে যদি একটি গণ-অভ্যুত্থান ঘটত অথবা জনসম্পৃক্ত কোনো গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁর পতন হতো, তবে হয়তো বাংলাদেশের ইতিহাসে মুজিবকে ভিন্নভাবে দেখা হতো। কিন্তু সামরিক বাহিনীর একটি অংশের হত্যাকা-, যেখানে নারী ও শিশুরাও রক্ষা পায়নি, শেখ মুজিবকে অনেকের কাছেই ‘ট্র্যাজিক হিরো’তে পরিণত করে। শেখ মুজিব ও তাঁর অবদানকে পুনর্র্নিমাণ করা হয়, ইতিহাসে তাঁর পুনর্জন্ম হয়। আমার দেখেছি, এর পরের কয়েক দশকে সংস্কৃতিতে, সাহিত্যে ও জনপরিসরে মুজিবকে এমন একটি ব্যক্তিত্বে পরিণত করা হয়, যিনি সব ধরনের দোষের ঊর্ধ্বে এবং প্রশ্নাতীত। প্রথম দিকে এ প্রক্রিয়া ধীরে শুরু হয় এবং সীমাবদ্ধ ছিল কেবল দলীয় ও নাগরিক উদ্যোগে। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মুজিবের ইমেজ তৈরিকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ও দলীয় অঙ্গসংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে বাধ্য করে। ২০০৮ থেকে ২০২৪-এ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে পতনের আগপর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে শেখ হাসিনার সরকার ‘শেখ মুজিব বিনির্মাণ প্রজেক্টে’ বিনিয়োগ করে গেছে। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের শেষ দশকে শেখ মুজিবের সমালোচনা করার জন্য অনেকে কারাগারে গেছেন, জুলুমের শিকার হয়েছেন। এমনকি শিশুরাও এই নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি। মুজিবের রাজনৈতিক দেবত্বকরণ জোর খাঁটিয়ে থামানোর বিষয় নয়। বরং নতুন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থপতিকে স্বীকৃতি এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের জনযুদ্ধের রূপকে সামনে এনে তার ধারাবাহিকতায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে দেখার মাধ্যমেই বাংলাদেশি জাতির ধারণার জনসম্পৃক্ততা বিনির্মাণ করা সম্ভব। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ব্যবহার করে শেখ মুজিব ও তাঁর পরিবারকে সমালোচনা করা একটি ‘ব্লাসফেমি’তে পরিণত করা হয়। মুজিব শতবর্ষ পালনে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করা হয়। মুজিবকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনী( রিচুয়াল), মুজিবীয় আইকন ও প্রতীক তৈরি করে তা উদ্‌যাপন এবং প্রশ্ন করা যাবে না—এমন ডিসকোর্স (গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ বা মহা বয়ান) তৈরি করে সমালোচনাকে শাস্তিযোগ্য বানিয়ে তোলা হয়। রিচুয়াল, আইকন ও ডিসকোর্সের এ কার্যক্রম একটি রাজনৈতিক দেবত্বকরণ প্রক্রিয়ার দিকে ইঙ্গিত দেয়। বৈশ্বিক রাজনীতিতে ‘রাজনৈতিক দেবতা’ বিষয়টি নতুন নয়। ‘রাজনৈতিক দেবতা’ বলতে এমন ক্যারিশমাটিক রাজনৈতিক নেতাকে বোঝানো হয়, যাঁদের দেবতাদের মতো ‘সুপার-হিউম্যান’ ক্ষমতা থাকে বলে তাঁদের ভক্তরা মনে করেন। অধ্যাপক মৌমিতা সেন, শারিকা থিরাঙ্গামা ও কেনেথ নিলসন দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক দেবতাদের কথা তাঁদের গবেষণায় উল্লেখ করেছেন (দেখুন সেন ও নিলসন, ২০২২, গডস ইন দ্য পাবলিক স্ফেয়ার: পলিটিক্যাল ডেইফিকেশন ইন সাউথ এশিয়া)। অধ্যাপক আরিল্ড রুড তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, কীভাবে বাংলাদেশে শেখ মুজিবকেন্দ্রিক ‘সিভিল রিলিজিয়ন’ বা নাগরিক ধর্ম নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়, ব্যক্তি মুজিবকে ও দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে একই পবিত্র ও সার্বভৌম চিহ্নে পরিণত করা হয়, যেখানে মুজিব নিজেই দেশের মতো সার্বভৌম চরিত্রে পরিণত হন এবং দেশের বাকি সব প্রজার কাছে বিশ্বস্ততার দাবিদার হয়ে ওঠেন (দেখুন রুড, ২০২২, বঙ্গবন্ধু অ্যাজ দ্য ইটারনাল সভেরেইন: অন দ্য কনস্ট্রাকশন অব আ সিভিল রিলিজিয়ন)। এখানে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের মতো মুসলিমপ্রধান দেশে ভারতের মতো খোলাখুলিভাবে কাউকে দেবতা হিসেবে দেখানো বা দেবত্ব আরোপ করা সম্ভব কি না। সেই বিবেচনায় কভার্ট ডেইফিকেশন বা ‘গুপ্ত দেবত্বকরণ’ ধারণাটিকে আমার এই ক্ষেত্রে যথাযথ বলে মনে হয়। এ ধারণা অনুযায়ী, দেবত্বকরণের সব বৈশিষ্ট্য এ প্রক্রিয়ায় থাকলেও তা অপ্রকাশিত বা গুপ্ত থাকবে, অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো সরাসরি তাঁকে দেবতা বলা হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক দেবত্বকরণ প্রক্রিয়ার মূল মেকানিজমগুলো, যেমন রিচুয়াল, আইকন ও ডিসকোর্স তৈরি (অবশ্য পালনীয় কিছু রীতি প্রতিষ্ঠা, তাঁকে প্রতীকে পরিণত করা ও তাঁর পক্ষে বয়ান তৈরি করা) করে নিয়মিত ও প্রাত্যহিক জীবনে মুজিবকে উদ্‌যাপন করা, মুজিবকে সার্বভৌম ও প্রশ্ন করা যাবে না, সমালোচনা করা যাবে না—এমন ব্যক্তিত্বে পরিণত করা। মুজিবের সমালোচনাকে শাস্তিযোগ্য করে তোলা এবং সর্বোপরি তাঁর চরিত্রকে খুঁতহীন ও অসাধারণ করে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া আমরা বাংলাদেশে বিগত হাসিনা আমলে দেখতে পাই। মুজিবের ‘দেবতা’সুলভ বৈশিষ্ট্যকে সামনে নিয়ে আসতে ৭ মার্চে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ ও ‘মুজিব ছাড়া দেশ স্বাধীন হতো না’—এ বয়ানকে সামনে নিয়ে আসা হয়। সমসাময়িক অন্য বড় রাজনৈতিক নেতাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানকে ছাপিয়ে শেখ মুজিবকে ‘একক নেতা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়, যাঁর বক্তৃতা, তর্জনী, চশমা, কোট ও পাইপকে সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে প্রতীকী উপস্থাপন শুরু হয়। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক পরিসরে শেখ মুজিবের সর্বময় উপস্থিতি—টাকার নোট, বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড, সংবাদপত্র, পাঠ্যবই, টেলিভিশনের অনুষ্ঠান ও নেতাদের বক্তৃতায় প্রতিদিন, বারবার উল্লেখ করে মুজিবকে একটি ‘অদৃশ্য শক্তি’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এই সর্ববিরাজমানতা একটি দৃশ্যমান কিন্তু গুপ্ত দেবত্বকরণ তৈরি করে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে, স্বাধীনতার আগে ও পরে, যত গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন, তাঁদের বনসাই করে মুজিবকে বটবৃক্ষের মতো মহিরুহ করে। বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসনের মতে, জাতি একটি ইমাজিনড কমিউনিটি (কাল্পনিক সমাজ), যা সেই সমাজের এলিট অংশ সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ধারণা দিয়ে তৈরি করে। এ ধারণা তৈরি হতে পারে তাদের মধ্যে, যাদের একটি ভূখ-ে কমন অ্যানিমি (সাধারণ শত্রু), একই ধরনের বঞ্চনা ও বৈষম্য, ভাষা, সংস্কৃতি বা মূল্যবোধ রয়েছে বলে তারা মনে করে। বর্তমান যে বাংলাদেশ, সেই ভূখন্ডভিত্তিক জাতির ধারণাটি নতুন এবং তা ১৯৪৭-এর কিছু আগে থেকে বিভিন্ন পরিসরে চিন্তা করলেও পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনে এসে চূড়ান্ত রূপ পায়। এই জাতি গঠনের যাত্রার বিভিন্ন বাঁকে বেশ কয়েকজন নেতা তাঁদের ভূমিকা রেখেছেন। বাংলাদেশ জাতি রাষ্ট্রের স্থপতি হিসেবে তাঁদের সবার ভূমিকাই অনস্বীকার্য। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের কথা চিন্তা করলেও নিশ্চিত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ শুরু করেছেন ও রণাঙ্গনে অবদান রেখেছেন এবং সাংগঠনিকভাবে তাজউদ্দীন আহমদ ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু বাকি সবার অবদানকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধু মুজিব ও বাংলাদেশের অস্তিত্বকে এক করে ফেলার মাধ্যমে একদিকে যেমন দেবত্বকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়, আরেক দিকে মুক্তিযুদ্ধের জনযুদ্ধ বৈশিষ্ট্যকে ছোট করে দেখা হয়। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে সুযোগ এনে দিয়েছিল শেখ মুজিবের দেবত্বকরণ প্রক্রিয়াকে প্রশ্ন করার এবং মুক্তিযুদ্ধের জনসম্পৃক্ততার ইতিহাসকে নতুন করে সামনে নিয়ে আসার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী ঘটনাবলি, বিশেষ করে শিক্ষার্থী নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, গণতন্ত্রের পক্ষ হিসেবে পরিচিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব ও চরম ডানপন্থীদের উত্থান সেই সুযোগকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম শক্তি ছিল সাংস্কৃতিক, যা মুজিবের দেবত্বকরণের বাইরে একটি নতুন ও সতেজ দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু তীব্র ডানপন্থার কবলে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তচিন্তা ও বাংলাদেশি নাগরিক জাতীয়তাবাদের জায়গা থেকে সরে যাচ্ছেন অনেকেই। মব সৃষ্টি করে মাজারে হামলা, নারীদের হয়রানি, ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর হামলা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা নতুন বাংলাদেশকেন্দ্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা তো দূরের কথা, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির হাতকে শক্তিশালী করছে। এর ফলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি একে অপরের অস্তিত্বকে শক্তিশালী এবং কার্যক্রমের ন্যায্যতা তৈরি করছে। মুজিবের রাজনৈতিক দেবত্বকরণ জোর খাঁটিয়ে থামানোর বিষয় নয়। বরং নতুন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থপতিকে স্বীকৃতি এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের জনযুদ্ধের রূপকে সামনে এনে তার ধারাবাহিকতায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে দেখার মাধ্যমেই বাংলাদেশি জাতির ধারণার জনসম্পৃক্ততা বিনির্মাণ করা সম্ভব।
লেখক: সাইমুম পারভেজ
রাজনৈতিক যোগাযোগবিষয়ক শিক্ষক।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা