আজ শনিবার | ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ১ ভাদ্র ১৪৩২ | ২১ সফর ১৪৪৭ | রাত ৮:০৮

কয়েক ভাগে বিভক্ত বাম রাজনীতি

ডান্ডিবার্তা | ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি পরিস্থিতি অনেকাটই উত্তপ্ত। দেশের সাধারণ জনগণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির সাথেই বেশি ঝুঁকছে। অপর দিকে বাম গণতান্ত্রিক জোট দেশের সাধারণ জনগণের সাথে তাদের দুরুত্ব বিগত দিন থেকে এখন অনেকটাই কমতির দিকে। যার কারণ বলে অনেকেই মনে করছে বামের নেতৃবৃন্দরা সাধারণ জনগনের প্রতি আস্থা আনতে ব্যর্থতার প্রমান দিচ্ছেন। আর বাম রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেরা কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। যার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে নিজেদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব। যার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বড় দুই দল এখন আন্দোলনমুখী হলেও তারা এখানো নিজেদের দল গুছিয়ে আনা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যার কারণে বাম গণতান্ত্রিক জোটের তৃণমূল নেতৃবৃন্দের দাবি বাম দল বর্তমানে শক্তি ও সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতায় আটকে রয়েছে। বর্তমানে দলকে সকল সংকট থেকে মুুক্তি করে সকলে ঐক্য হয়ে আলাদা একটি শক্তি প্রয়োগ করতে পারলে বাম রাজনীতির বিগত দিনের সক্রিয়তা আবারো ফিরে আসবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। দলীয় সূত্রে জানা যায়, দেড় দশক সময় ধরে বাম রাজনৈতিক দলগুলো বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা নামে একটি জোটের মাধ্যমে আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই আন্দোলনে তার একদিকে যেমন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না তাই সমর্থন ও আর আগের মতো বেশি পাচ্ছে না। যার কারণে বাম দলের নেতাকর্মীরা নিজেরা বিকশিত হতে পারছে না। জানা গেছে, চলতি বছর একটি চূড়ান্ত আন্দোলন সংগ্রামের বছর। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি নিজেদের দল ও গোছাচ্ছে তারা পাশাপাশি ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম ও চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিএনপি বর্তমানে দেশের ছোট ছোট বিরোধী দলগুলো রয়েছে। যারা বর্তমানে সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে মাঠে আছে। তারা ও তাদের সাথে আন্দোলনের ধরনের মিল পাওয়ায় সকল নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে একটি বৃহত্তম আন্দোলন গড়ে তুলছে। এদিকে বাম রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সোজা বলে দিয়েছে তারা কোন বড় বিরোধী দলের সাথে জোট ও যুগপৎ আন্দোলনে যাবে না। তারা নিজেরাই ঐক্য হয়ে আলাদা একটি শক্তি প্রয়োগ করবে। কিন্তু নির্বাচনের আর বেশি দিন না থাকা সত্ত্বে ও তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ ও একত্রতা বজায় রাখতে পারছে না। অপর দিকে তারা ছোট পরিসরে আন্দোলন করে দলের সংগঠন গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। যার কারণে তারা তাদের দলের নিজস্ব সাংগঠনিক শক্তি হারিয়ে ফেলছে। আর তারা সাধারণ জনগণের কাছে নিজেদের ফুটিয়ে তুলতে পারছে না। যার ফলে তারা জনগণ থেকে দূরত্ব হারিয়ে তাদের শক্তি হারিয়ে ফেলছে। তাই তৃণমূলের দাবি সকল নেতাকর্মীদের আদর্শিক জায়গাটাকে পরিষ্কার করা দরকার। তাহলে দলে আরো নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহণ করবে ও সাধারণ জনগণের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে বাম রাজনীতি একটি বিপ্লব ঘটাতে পারবে। বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু সাহা বলেন, নারায়ণগঞ্জ রাজনীতিতে এখনো আমরা কোন উত্তপ্ততা লক্ষ্য করছি না। আন্দোলন সংগ্রাম করে যদি একটি পেশার নামানো যায় সেটাকে বলা হয় উত্তপ্ত। কিন্তু বর্তমানে বিরোধী দলের যে রূপ রেখা দেখা যাচ্ছে তা দিয়ে কিছু হবে বলে আমরা মনে করছি না। অপর বাম রাজনীতিতে যারা রয়েছে। তারা কিন্তু সামনের নির্বাচনকে ঘিরে নিজের দল ও অঙ্গসংগঠনকে সংগঠিত করতে আমরা বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। আমরা আন্দোলন সংগ্রামের থেকে বেশি নিজের দলকে নিয়ে এখন ভাবছি। তিনি আরো বলেন, উপ মহাদেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাপটের কিছু প্রতি ফলন বাংলাদেশে ও ঘটে। বর্তমানে আমরা দেশে দেখতে পাচ্ছি দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি গ্যাসের দাম, বিদ্যুতের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই যাচ্ছে। আর সব কিছুর দাম বৃদ্ধি করতে হলে একটি বোর্ড আছে সেগুলোর তোয়াক্কা না করেই সাংসদে তারা বিবেচনা করে দাম বৃদ্ধি করছে। দেশের উন্নয়ন হলে দূর্নীতি আরো বেড়েই চলেছে। বাম রাজনীতিতে যারা রয়েছে তারা সকলেই ধরন অনুযায়ী রাজনীতি করে। আর আমরা বর্তমানে সৃজনশীল প্রয়োগের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। আর বর্তমানে আমাদের আন্দোলন আমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দৃশ্যমান না করতে পারলেও আমরা নিয়মিত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি কমরেড হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা বর্তমানে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আমরা রাজপথে রয়েছি। তার পাশাপাশি লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে আমরা নিয়মিত কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু আমাদের কর্মসূচি দৃশ্যমান একটু কম হয়। তার কারণ হলো আমাদের শক্তি ও সামর্থ্য সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার পরে ও আমরা নিয়মিত আমাদের সামর্থ অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করছি। আর সামনে চলে আসছে রমজান মাস সেই মাসে যাতে দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন না হয়ে মানুষের সামর্থ অনুযায়ী থাকে সেই জন্য আমাদের কর্মসূচি অবহৃত রয়েছে। তার পাশাপাশি আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও তবারকি সরকারের অধীনে যেন হয় লক্ষ্যে ও আমাদের ব্যাপক আন্দোলন সামনে রয়েছে। আর আমরা বর্তমানে যারা বাম রাজনীতির সাথে রয়েছে। আর সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি। ন্যাপ নেতা আওলাদ হোসেন বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক যে মূল্য বোধ অনুপস্থিতির কারণে রাজনীতিগুলো এখন পেশিশক্তি কালো টাকায় নিয়ন্ত্রন করছে। সেই প্রেক্ষিতে বাম রাজনীতি গরিব মেহনতী মানুষের রাজনীতি তাই আমরা গরিব মানুষের পক্ষ নিয়ে লড়াই সংগ্রামে রয়েছি। আর বর্তমানে যে আওয়ামী লীগ বিএনপির রাজনীতি চলছে এটি কোন স্বচ্ছ রাজনীতি না এটি পালা বদলের রাজনীতি। তারা ক্ষমতা নিয়ে লড়াই করছে গদি নিয়ে লড়াই করছে। আর বাম রাজনীতি হচ্ছে মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তনের লড়াই। সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনের লড়াই। সেই লক্ষে আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি ছোট পরিসরে। আর সারা পৃথিবীতেই গরিব দুখী মানুষের রাজনীতিটি একটু দূর্বল হয়। আর আমরা একটি দূর্বল হলেও দিরে দিরে সংগঠিত হচ্ছি। আমাদের এখানে মানুষের চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই স্কেরিফাইস করতে আসতে হয়। বাম রাজনীতিতে অন্য রাজনৈতিক দলের মতো ভোগের কোন জায়গা নেই। তাই এই অবস্থায় আমাদের দিকে জনগণ কমই আসছে। আর বাম রাজনীতিকে আরো শক্তিশালী করতে দরকার হচ্ছে। বাম রাজনীতিতে একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আর বাম রাজনীতি এখন কয়েকটা বাম হয়ে গেছে তার একটি গিয়েছে ১৪ দলের সাথে আরেকটি গিয়েছে বিএনপির সাথে যৌথ আন্দোলনে আর আরেকটি গ্রুপ রয়েছে যারা কোন দিকেই যায়নি। এমতা অবস্থায় বাম রাজনীতিতে মানুষকে জনগণ আহ্বান জানাতে হলে বাম রাজনীতির সকলকে এক অবস্থানে এসে জনগণকে বলতে হবে আমরা এক আছি সমাজ পরিবর্তনের জন্য দুঃখী মানুষের পাশে আছি আমরা আপনারা আমাদের পাশে আসেন তাহলে বাম রাজনীতি নিয়ে মানুষ একটি পজিটিভ ধারনা করতে পারবে। এ বিষয়ে বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিখিল দাস বলেন, আপনারা অবগত আছেন নারায়ণগঞ্জে আবারো খুন-সন্ত্রাস এগুলো ভাড়ছে। আর সেগুলো নিয়ে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল তারা তা রাখছে না। বাম রাজনৈতিক দলগুলো নানা ইস্যূ নিয়ে মাঝে মাঝে সভা সমাবেশ করে থাকছে। সেই অবস্থানে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে একটি জোট সমাবেশ পালন করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের মুঠমেন্ট নিয়ে মাঝে মাঝে রাজপথে নামছে। আর বর্তমানে এই সরকারের জনগণের বিরুদ্ধে যে অবস্থান সেই দিকে লক্ষ্যে রেখেই আমরা আমাদের মতো করেই রাজনীতি করে যাচ্ছি। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছেন আর বিএনপি ও ক্ষমতায় এক সময়ে ছিল। তাই মানুষ সব সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কথা বলে। আর বাম রাজনীতির যে  পোষ্টগুলো আছে তারাও রাজপথে আছে কিন্তু জনগণ তাদের হয়ে কথা কম বলে। আমরা কম শক্তি তাই মানুষ আমাদের হয়ে কম কথা বলে আর তারা বেশি শক্তি তাই তাদের হয়ে জনগণ বেশি কথা বলছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা