আজ বুধবার | ১৩ আগস্ট ২০২৫ | ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৮ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৭:০২

গৌরবগাথা শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল

ডান্ডিবার্তা | ০৩ অক্টোবর, ২০২৩ | ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট চোখ ধাঁধানো দৃষ্টিনন্দন সব কাজ। স্বচ্ছ গ্লাসে মোড়ানো পুরো ভবন। যেখানে সূর্যের আলো প্রবেশের অবারিত সুযোগ। ভিতরের চিত্রটা আরও দৃষ্টিনন্দন। ছাদের দিকে তাকালে যাত্রীদের চোখ এক নিমিষেই হারিয়ে যাবে সেই দিকটায়। বিশাল পরিসর। যাত্রীদের মন জয় করার মত এক স্থাপনা। সেখানে প্রবেশ করলে সবার অনুভূতিই বদলে যাবে। বাইরে থেকেও মানুষের নজর কাড়বে- এমন অপররূপ সৌন্দর্য্যম-িত স্থাপনা-হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। যেখানে ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই যাত্রীরা অবাদে যাতায়াত করতে পারবেন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্র জানা গেছে, শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে নির্মাণ হচ্ছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের এপ্রিলের মধ্যে। ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং- এই তিন প্রতিষ্ঠান মিলে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ করছে। প্রকল্পে কিছু খাতে টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সাশ্রয়কৃত এই টাকা দিয়ে সরকার ও জাইকার সম্মতি এবং অন্যান্য বিধিগত প্রক্রিয়া নিষ্পত্তিসাপেক্ষে তৃতীয় টার্মিনালে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজের জায়গায় অতিরিক্ত আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ বোডিং ব্রিজের মোট সংখ্যা এখন ২৬টি। তৃতীয় টার্মিনালের আয়তন হচ্ছে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। থার্ড টার্মিনালে মোট ৩৭টি অ্যাপ্রোন পার্কিং থাকছে। ফলে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে ট্যাক্সিওয়ে আছে চারটি। নতুন করে আরও দুটি হাই স্পিড ট্যাক্সিওয়ে যোগ হচ্ছে। রানওয়েতে উড়োজাহাজকে যাতে বেশি সময় থাকতে না হয়, সেজন্য তৈরি করা হচ্ছে নতুন দুটি ট্যাক্সিওয়ে। এছাড়া পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য দুটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আরও থাকবে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবন। বেবিচকের তথ্যানুযায়ী, থার্ড টার্মিনালে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের মধ্যে প্রথম ধাপে চালু করা হবে ১২টি। ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার এলাকায় ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেকইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেকইন কাউন্টার থাকবে। এছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ থাকবে ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার। আগমনের ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেকইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট ও ১৯টি চেকইন অ্যারাইভাল কাউন্টার থাকবে। থাকবে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। যেখানে এক হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। বহুরকম সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন থার্ড টার্মিনালে প্রবেশ ও বাহিরের ক্ষেত্রে থাকবে না কোনরকম ঝক্কিঝামেলা। সহজেই বিমানবন্দরে ঢুকা যাবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি লুপ থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত হবে। থাকবে মেট্রোরেলের সংযোগও। হাজি ক্যাম্পের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য থাকবে টানেল। টানেলটি বিমানবন্দরের অদূরে অবস্থিত মেট্রোরেলের স্টেশনের সঙ্গেও। ফলে বিদেশ থেকে যেসব যাত্রী আসবেন তারা খুব সহজেই বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারবেন। আবার যারা বিদেশ যাবেন, তারাও রাজধানীর যানজট এড়িয়ে খুব সহজে বিমানবন্দরে যেতে পারবেন। বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য স্থাপনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ৭ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই ভবনটি উদ্বোধন করবেন। গতকাল সোমবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক থার্ড টার্মিনালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়সহ সবার সহযোগিতায় করোনাভাইরাসের মহামারীর সময়েও আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ চলমান রাখতে পেরেছিলাম। আমাদের শ্রমিকদের মনোবল অনেক কঠোর ছিল। করোনা মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট আসা বন্ধ হয়ে গেয়েছিল। গুণগত মান বজায় রেখে সেসব ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এগুলো আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। তারপরও আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে গেছি। এর ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।’




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা