আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | সন্ধ্যা ৬:৪৫

বৃষ্টি আর যানজটে নাকাল নগরবাসী

ডান্ডিবার্তা | ০৬ অক্টোবর, ২০২৩ | ১২:৪০ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট একদিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি অন্যদিকে ভয়াবহ যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছে নগরবাসী। ৫মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লেগেছে এক ঘন্টারও বেশি। সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনার শিকার হয়েছে রোগী ও তার স্বজনরা। যানজটে আটকরা পড়ে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর এমন চিত্র ছিল শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া ও বঙ্গবন্ধু সড়কে। যা রাত পর্যন্ত চলমান থাকে। এমন পরিস্থিতিতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। রীতিমত যানজট যেন নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে নগরবাসীর। দিনে যেমন তেমন রাতেও রক্ষা পাচ্ছে না নগরবাসী। শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে দিনে ও রাতে পাল্লা দিয়ে যানজট লেগেই থাকছে। শুধু শহরের প্রধান সড়কটি নয়, শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে যানজটে পড়ে সাধারণ মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে পড়ছে। কয়েকদিন ধরে এমন চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে ঘন্টার পর ঘন্টা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নগরবাসী। তাছাড়া সন্ধার আগে ও পরে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে রোগীসহ সাধারণ মানুষ। কারণ সন্ধার পর রোগী নিয়ে স্বজনরা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ছুটাছুটি করেন। ডাক্তাররা সাধারণত বিকাল থেকে রাত ১০টা/১১টা পর্যন্ত রোগী দেখেন। তখন রোগীদের যাতায়াত বেড়ে যায় সড়কে। এছাড়া সারাদিন অকøান্ত পরিশ্রম শেষে অফিস ফেরত মানুষ বাসায় ফিরতে গিয়ে যানজটের কবলে পড়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রোগী নিয়ে এ্যামবুলেন্সের সাইরেন বাজতেই থাকে, কিন্তু কেউ শোনেনা। আবার শুনলেও কিছু করার থাকে না। কারণ যেভাবে যানজট লেগে থাকে এ্যামবুলেন্স যাবে কিভাবে? গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি মধ্যে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সন্ধ্যার পরও এই যানজট স্থায়ী হয়। সরেজমিনে সন্ধ্যার দেখা যায় চাষাড়া গোল চত্তর থেকে কখনো গলাচিপা, কখনো কালিরবাজার ব্যাংকের মোড়, কখনো উকিলপাড়া পর্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়েছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চাষাড়া গোল চত্তর থেকে গলাচিপা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কে যানজট দেখা গেছে। নিত্যদিনের এমন চিত্র দৃশ্যমান হলেও সংশ্লিষ্টদের যেন কিছুই করার নেই। শুধু একে উপরের উপর দোষ চাপিয়ে দায় এড়িয়ে চলছেন। যানজট নিরসনে সিটি করপোরেশনের ভুমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। শহরের পাড়া-মহল্লার প্রবেশ পথ গুলিতে অটো রিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠায় নতুন করে এই যানজট পাড়া-মহল্লার সড়কগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে। অপরদিকে ট্রাফিক বিভাগও যানজট নিরসনে কার্যকরী কিছু করছে না। বরং মাসোহারা আদায়ে তারা বেশি ব্যস্ত বলে অভিযোগ নগরবাসীর। তাদের যোগসাজসে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবৈধ যানবাহন স্ট্যান্ড যানজট সৃষ্টিতে সহায়ক ভুমিকা রাখছে। চাষাড়া গোলচত্তর ব্যস্ততম পয়েন্ট হওয়ার পরও খাজা মার্কেটের সামনে অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ড, সুগন্ধার সামনে ইজিবাইক স্ট্যান্ড, জিয়া হলের সামনে রিকসা স্ট্যান্ড, শহীদ মিনার ঘেষে দুই দিকে সিএনজি স্ট্যান্ড, সমবায় মার্কেটের সামনে সিএনজি স্ট্যান্ড, ২নং রেল গেইটে লেগুনা স্ট্যান্ড, ডায়মন্ত চত্বরের সামনে অটো স্ট্যান্ড ছাড়াও শহরে মূল সড়কগুলিতে সন্ধ্যার পর বাস রেখে সড়ক দখল করে রাখায় যানজট মধ্যরাত পর্যন্ত থাকে। ডিআইটি এলাকার কাপড় ব্যবসায়ি আবুল কাউছার অনেকটা ক্ষোভ নিয়েই বলেন, বিকালে সাড়ে ৫টার দিকে একটা জরুরী কাজে চাষাড়া যাওয়ার জন্য রিকসায় উঠেছি। কালিরবাজার ব্যাংকের মোড়ে এসে যানজটে আটকা পড়লাম। অনেকক্ষন বসে থাকার পর বাধ্য হয়ে পায়ে হেটে বৃষ্টিতে ভিজে চাষাড়ায় আসলাম। এভাবে কি শহরে চলা যায়? প্রতিদিনের এই যানজট থেকে কবে রেহাই পাবো, জানি না। বৃষ্টিতে ভিজে একাকার রিকসাচালক আব্দুল করিমের সাথে কথা হয়। ঠান্ডায় জমে গেছেন। বলেন, গত ১০ দিন আগেও ৫ থেকে ৬শত টাকা খ্যাপ মারতাম। গত কয়েকদিন ধরে জ্যামের কারণে ৩/৪শত টাকা আয় করতে পারি না। আর বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মাত্র ২শত টাকা পেয়েছি। অনেক সময় জ্যামে আটকা পড়ে পেসেঞ্জার নেমে যায় কম ভাড়া দিয়ে। পেসেঞ্জার পায়ে হেটে যেতে পারলেও আর খালি রিকসা নিয়ে জ্যামে আটকা পড়ে থাকি দীর্ঘ সময়। পথচারী জামিল হোসেন বলেন, একদিকে বৃষ্টি আরেকদিকে ভয়াবহ যানজট, আমরা শেষ। ভিজে ভিজে বাসায় যাচ্ছি। জ্যাম না থাকলে রিকসায় যেতে পারতাম। এ ব্যপারে নগরবাসী মনে করেন, যানজট নিরসন ট্রাফিক বিভাগের কাজ ও সিটি করপোরেশনের কাজ, কিন্তু আমরা মনে করি, এসব বাদ দিয়ে সম্মেলিতভাবে এর সমাধান করতে হবে। বছরের পর বছর ধরে সৃষ্টি হওয়া যানজটের স্থায়ী সমাধনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকেই উদ্যোগ নিতে হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা