আজ বুধবার | ১৩ আগস্ট ২০২৫ | ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৮ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৬:৪২

আশ^াসে স্বস্তি সোনারগাঁ আ’লীগে

ডান্ডিবার্তা | ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ | ৩:৩৮ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট একসময় আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ। তবে গত টানা দুইবার এই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হওয়ায় সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ অনেকটাই বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছিল। পাশাপাশি তারা নিজেরা অন্তঃকোন্দলে লিপ্ত হয়েছিল। প্রায় সময় তারা পরস্পরকে উদ্দেশ্য করে তীর্যকমূলক বক্তব্য রেখেছিল। তবে এক সমাবেশেই বদলে গেছে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের চিত্র। গত ১৩ অক্টোবর সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ। যে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এদিন উপস্থিত ছিল। এর আগে এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় বৈঠকে বসে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এর ফলে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দ এক কাতারে চলে আসেন। সমাবেশের দিনও মঞ্চে তাদেরকে একসঙ্গে দেখা যায়। এদিনের সমাবেশ সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করায় সফলভাবেই কর্মসূচিটি পালিত হয়। পাশাপাশি এদিন রেকর্ডসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটে। যার ফলে অতীতে যাই হোক না কেনো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ মাইলফলক সৃষ্টি করেন। নেতাকর্মীদের মতে, গত কয়েকবছরের মধ্যে এটিই নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের সর্বশ্রেষ্ঠ সমাবেশ। আগামী নির্বাচনের আগে এমন সমাবেশ করতে পেরে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বেশ উজ্জীবিত। এদিকে এই সমাবেশ পালন করার পর থেকে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। কেননা এদিনের সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জাতীয় পার্টির তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে নৌকার জন্য বলে আসা তাদের দাবি প্রকাশ পেয়েছে। এর আগে, বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামীতে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ ওরা আবার অরাজকতা, অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা করবে। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়। তারা সন্ত্রাসীর দল। লন্ডনে বসে তারেক রহমান এ দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাই আমাদের চুপ করে বসে থাকলে হবে না। এ কাঁচপুর ব্রীজ বা কোথাও যদি কোন সন্ত্রাসীরা বসে থাকে তাহলে আওয়ামী লীগও বসে থাকবে না। তাই আগামীতে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বহমান রাখতে নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। এ নারায়ণগঞ্জে একটি এলাকায় জাতীয় পার্টির এমপি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে। কাজেই ওই এলাকাকে মানুষ রক্ষার জন্য মানুষ নৌকা মার্কা চায়। এ সিট জাতীয় পার্টির সিট না। বড় বড় কথা বলেন জাতীয় পার্টির ভাইয়েরা। ভিন্নভাবে নির্বাচন করে দেখেন কয়সিট পান, পায়ের তলায় মাটি আছে কি না দেখেন। নানকের এই এক কথাতেই বেশ খুশি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এদিকে এই শান্তি সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে গত ৭ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত বর্ধিত সভায় এদিন অধিকাংশ নেতৃবৃন্দকে এক কাতারে দেখা গেছে। যা নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করে। তাদের মতে, এভাবে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই আসনে আবার নৌকার প্রার্থীর জয় ঘটবে। এর ফলে ইশা খাঁর রাজধানী সোনারগাঁ আবারও আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে পরিণত হবে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশকে সফল করতে আয়োজিত বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্চিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ডাক্তার আবু জাফর চৌধুরী বিরু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য ও থানা আওয়ামী লীগের সদস্য দীপক কুমার বনিক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম নান্নু, আলী হায়দার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, হাজী মো. সোহাগ রনি, মোগরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, সনমান্দি ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, কাঁচপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, বারদী ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল, বৈদ্যেরবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিন সরকারসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এদিকে এই শান্তি সমাবেশ ছাড়াও গত ১৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হওয়া শামীম ওসমানের জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগকে এক কাতারে আনার চেষ্টা করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। গত ১১ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁয়ে আয়োজিত আওয়ামী লীগের এক মতবিনিময় সভায় শামীম ওসমানের বক্তব্যে এমনই আভাস পাওয়া যায়। এই মতবিনিময় সভাকে কেন্দ্র করে সোনারগাঁয়ের আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ একস্থানে সমাবেত হোন। এদিনের সভায় শামীম ওসমানের পাশে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সভাপতি সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাজী সোহাগ রনি, কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, জামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য চেয়ারম্যানদের দেখা গেছে। যাদের এক কাতারে আগে কখনো দেখা যায়নি। তবে এদিন উপস্থিত ছিলেন না সাবেক সংসদ সদস্য মোবারক হোসেনের পুত্র এরফান হোসেন দ্বীপ ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম। এই দুজনের উদ্দেশ্যে একেএম শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি তাদের সঙ্গে কথা বলবো। এখন আমাদের ভেদাভেদ করার সময় নয়। এই মুহূর্তে আমাদের সবার এক হতে হবে।’ দ্বীপের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘অন্য কারো প্ররোচনায় পড়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিভেদ করা ঠিক না। এতে করে নিজেদের ক্ষতি বেশিই হবে।’




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা