আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | সন্ধ্যা ৬:৫৫

আড়াইহাজারে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা অস্থির!

ডান্ডিবার্তা | ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ | ১২:১০ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আড়াইহাজার আসনে ভিতরে ভিতরে অনেকটা অস্থিরভাব বিরাজ করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে। এবারও দলের দুই হেভিওয়েট নেতা এবার দলীয় মনোনয়ন বাগাতে কেন্দ্রে জোর লবিং করছেন। এতে ভেতরে ভেতরে মূলত তিনভাগে বিভক্ত হয়ে রাজনীতির মাঠে সক্রীয় আওয়ামী লীগ। অপরদিকে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও তিনভাগে বিভক্ত হয়ে মামলা ও হামলা অপেক্ষা করেই প্রতিটি কর্মসূচিতেই অংশ নিচ্ছেন। এই দুই দলের নেতাকর্মীরাই নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন কি হতে যাচ্ছে রাজনীতির অঙ্গনে। তবে আগের তুলনায় অনেকটাই চাঙ্গা বিএনপির নেতাকর্মীরা। এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করে যাচ্ছেন ৯ নেতা। এনিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল মনে করছেন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে এবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা অনেকটা পরীক্ষার মুখোমুখী হতে পারেন। ভোটের মাঠে গ্রহণযোগ্যতার ওপর ভিত্তি করেই এবার দলীয় মনোনয়ন ঠিক হবে। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে। কিন্তু মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশার পাশাপাশি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে আন্দোলনে বেশ সক্রিয় রয়েছেন। আগের তুলনায় দলের নেতাকর্মীদের বতর্মানে সরকার বিরোধী বিভিন্ন সভা-সমাবেশগুলোতে উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। দলটির অনেক নেতাকর্মী বলেন, সরকার মামলা-হামলা দিয়ে বিএনপিকে একটুও ধমাতে পারেনি। আগের যেকোন সময়ের তুলনায় দলের নেতাকর্মীরা এখন অনেক বেশী চাঙ্গা। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, আড়াইহাজারে বিএনপি কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। তাতে কোন সমস্যা নেই। আগের তুলনায় দলের নেতাকর্মীরা এখন বেশ চাঙ্গা। নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিল, স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাজানো ও গায়েবী মামলা রয়েছে। অনেকেই মামলা-হামলার ভয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া। এদিকে আওয়ামী লীগের মধ্যে সাংগঠনিকভাবে প্রকাশ্যে কোনো কোন্দল না থাকলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকের অভিযোগ ছিল, নানা কারণে দলের ভিতরে ভিতরে নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা অন্তোষ্ট রয়েছে। পাশপাশি দলের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় ভিতরে ভিতরে কিছুটা হলেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বতর্মানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ভালো বলে দাবী করা হয়েছে। স্থানীয় হাইজাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এড. রাশেদ বলেন, মমতাজ হোসেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট পরবর্তী আওয়ামী লীগের দুর্ঃসময়ে মমতাজ হোসেন তৎকালিন আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৯৮৬ সালে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হয়ে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে তিনি নৌকা প্রতীকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন। এমনকি নিজের ব্যক্তির স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে আওয়ামী লীগকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জাতীয় পার্টির স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা এমদাদুল হক ভূঁইয়াকে আওয়ামী লীগে যোগদান করিয়ে ১৯৯৬ সালে আড়াইহাজার আসন থেকে নৌকা প্রতীকে তার বিজয় নিশ্চিত করেন। এই নেতার অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ১৫ বছর ধরে আড়াইহাজারে অবমূল্যায়ন হচ্ছেন। এতে অনেকেই প্রকাশ্যে ও গোপনে মমতাজ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তবে নেত্রী শেষ পর্যন্ত যাকে দলীয় মনোনয়ন দেবেন। আমরা তার পক্ষে বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবো। উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আলী আজগর বলেন, এখানে বিএনপি কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি দাবী করেন, আড়াইহাজার আসন বিএনপির ঘাঁটি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থী যে কেউ এখান থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আড়াইহাজার পৌরসভার মেয়র সুন্দর আলী বলেন, এমপি নজরুল ইলাম বাবু তিন মেয়াদে উপজেলার সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। সাংগঠনিকভাবেও আওয়ামী লীগ এখানে আগের তুলনায় শক্তিশালী। ভোট কিংবা রাজনীতির মাঠের যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মত সক্ষমতা আওয়ামী লীগের রয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগ থেকে টিকেট (মনোনয়ন) পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ব্রুনাইয়ের সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংঠনিক সম্পাদক ড. হাবিবুর রহমান মোল্লা, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল পারভেজ। তবে এবার মমতাজ হোসেনকে নিয়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি ড. হাবিবুর রহমান মোল্লাও এবার আদাজল খেয়ে মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও এই আসন থেকে এবারও নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছেন জাতীয় পাটির (জিএম) কাদের গ্রুপের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন। এদিকে বিএনপি থেকে টিকেট পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এএম বদরুজ্জামান খসরু’র ছেলে বিএনপির নির্বাহী কামিটির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ এবং মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির (ঢাকা বিভাগীয়) সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার। জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন দল থেকে এবার মনোনয়নপ্রত্যাশা করছেন। এই আসনে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বদরুজ্জামান খসরু’র সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু। পরে তিনি ২০১৪ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ হোসেন আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ছিলেন। মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন। পরে আঙ্গুরের পক্ষেই মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে ছিল। সেই হিসাবে দলটি থেকে এ আসনে তিনবার এমপি হয়েছিল। ২টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ, ৯৮ হাজার, ৯২৩জন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা