আন্দোলনে উত্তাল রাজপথ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনীতির মাঠ গরম করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ বিএনপি। আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি চায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য। অপর দিকে ক্ষসতাসীন দল টানা চতুর্থ বারের মত ক্ষমতায় থাকার বিএনপির আন্দোলনকে দমানোর জন্য তারাও শান্তি সমাবেশ দিয়ে নেতা কর্মীদের রাজপথে রেখেছে। এতে করে এক কয়েকমাস আগে থেকেই বিএনপি মাঠ গরম করছে। এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, এই বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কিংবা আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তাই এই বছরকে নির্বাচনী প্রচারনার বছর হিসেবে বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারই ধারা বাহিকতায় অন্যান্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতৃবৃন্দকে নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। সেই সাথে মানুষের কাছে নৌকার জন্য ভোট চেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই দিকে দিয়ে বিএনপি বলে আসছেন তারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাতে অংশগ্রহণ করবেন না। তবে তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল তাদের অধীনেই নির্বাচন দিবে বলে জানিয়ে আসছেন। বিএনপির ধরনের দাবীকে ভৌতিক বলে জানান আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ইউনিয়নের পর জেলা মহানগরের থানায় থানায় পদযাত্রা কর্মসূচি করছে। চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে পদযাত্রা কর্মসূচিতে শোডাউনের মাধ্যমে শক্তি প্রদর্শন করছে বিএনপি। তাদের এই কর্মসূচির মাধ্যমে নেতা কর্মীরাও জেগে উঠেছে। অন্যদিকে এদিন ‘শান্তি সমাবেশের’ পাশাপাশি ব্যাপক মহড়ার করেছে আওয়ামী লীগ। সেই সাথে আওয়ামী লীগের সহযোগি সংগঠনের নেতা কর্মীরাও নারায়ণগঞ্জের শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, মহানগরের থানায় থানায় পদযাত্রা কর্মসূচির নামে বিএনপি বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে দাবি করে তা মোকাবিলায় এ শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়া নেতারা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত তাদের এমন কর্মসূচি চলমান থাকবে। এগুলো কোনো দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয় বলেও দাবি তাদের। শান্তি সমাবেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল বলেন, যারা দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাছাড়া বিএনপির অস্থিরতা এবার কেউ মেনে নিবে না। অপরদিকে বিএনপির নেতারা বলছেন, দেশে যেই ভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে মানুষের বেচেঁ থাকার অসম্ভব হয়ে পরছে। এছাড়া নিরপেক্ষ ভাবে তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনের দাবী অব্যাহত থাকবে। তাদের এই আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য বিএনপি ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উপজেলা, থানা, জেলা মহানগরে ব্যপক ভাবে আন্দোলনে নেমেছে। তাদের এই আন্দোলনকে আরও ব্যাগবান করার জন্য তারা একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি গতবছরে বিভাগীয় ভাবে সমাবেশ করে সারাদেশে ব্যপক আলোচনা তৈরী করেছে। সেই সাথে ক্ষমতাসীন দলের কাপুনি ধরিয়ে দিয়েছে বলে তাদের দাবী। বিশেষ করে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, দমন-নিপীড়ন বন্ধ, খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং গণবিরোধী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গত বছরে ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবি তুলেন। এরপর আবারো সমাবেশের ডাক দিয়ে ১ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে রাজপথে থাকার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই দাবী বাস্তবায়নে পরবির্ততে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগরে যুগপুৎ আন্দোলনের ঘোষনা দেন। এই আন্দোলন গুলোতে জেলা বিএনপিতে গিয়াস উদ্দিন দায়িত্বে আসার পর থেকে সেখানে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রেখে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট প্রশংসিত হন। দলীয় সুত্রমতে জানা যায়, বিএনপি আওয়ামী লীগ পাল্টা পাল্টি সমাবেশে জেগেছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি। বিএনপি পদযাত্রা করলে আওয়ামী লীগ করে শান্তি সমাবেশ। অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ মহাগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার নেতৃত্বে ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় শান্তি সমাবেশ করেন। একই সাথে শহরের মন্ডলপাড়া ব্রীজে বিএনপির আরেকটি অংশ পদযাত্রা মিছিল বের করেন। বিএনপির এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল। বিএনপিকে সাবধান করে একটি সভায় শামীম ওসমান বলেন, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে আঘাত পড়বে। দেশটাকে একটা আঘাত করা হবে পেছনের দিকে যাবার জন্য। সামনের দিকে নেয়ার জন্য নয়। বাংলাদেশে আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে, সর্বোচ্চ জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে আঘাত আসবে। লেজ সোজা না হওয়া লোকেরা আবার বাংলাদেশে লাশের রাজত্ব সৃষ্টি করবে এমনকি তাদের দলের বড় বড় জাতীয় নেতাকে প্রয়োজন হলে তারা হত্যা করবে। এগুলো করে তারা ইস্যু সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে কারণ যেভাবেই হোক তারা নির্বাচন বন্ধ করতে চায়,কিন্তু পারবে না। জনগণের কাছে বিচার দিলে কিভাবে জনগণ তাদের কাছে পৌঁছাবে সেটা আমরা ভালো করে জানি। যারা স্লোগান দিচ্ছে তারা সাম্প্রদায়িক শক্তি। তাই বলছি নারায়ণগঞ্জকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। আর না হয় জনগণ ক্ষেপলে আপনারা মাঠে নামতে পারবেন না। তাই বলছি বিএনপির ভাইয়েরা সাবধান হয়ে যান। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির বন্ধুরা পদযাত্রা সমাবেশ করেছেন। আপনারা এই পদযাত্রা বাদ দিয়ে নির্বাচনের প্রস্ততি শুরু করেন। বিএনপি পদযাত্রার নামে যাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য আমরা মাঠে আছি।