বন্দর আ’লীগকে দূর্বল করার মিশন!

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ ঠেকাতে বন্দর উপজেলা আথলীগের ব্যানারে ২ মঞ্চ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে দেখা মিলেছে নানা সমিকরন। অবরোধের নামে অগ্নি সন্ত্রাসীদের রোধে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ যথাক্রমে ভাল ভাবে চললেও গত ২ দিনে সৃষ্টি হয়েছে বিভাজন। শান্তি সমাবেশে আগুনের জন্য তেল দিল কে? নিজেদের শক্তি দূর্বল করতে সু-কৌশলভাবে তেল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ খেলার মূল নায়ক হিসেবে কাজিম উদ্দিন প্রধানকে চিহ্নিত করেছে তৃনমুল। যিনি বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। গত রবিবার বন্দরের শান্তি সমাবেশে কাজিম উদ্দিনকে দেখা না মিললেও গত সোমবার দেখা মিলেছে তার। মদনপুর (উত্তর মঞ্চ) উদ্যোগে মিছিল ও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গত সোমবার সকাল ১১ টার দিকে মদনপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে (ঢাকা টু চট্রগ্রাম) মহাসড়কে মিছিল শেষে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেন তারা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা আথলীগের সাধারন সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান। কাজিম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। যে কথাকে তার মুখের কথা বলে অনেকে মনে করছেন। প্রকৃতঅর্থে শান্তি সমাবেশে অশান্তির খল নায়ক কাজিম উদ্দিন প্রধান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের অবরোধকে কেন্দ্র করে কোন প্রকার নাশকতা করতে দেয়া যাবে না। এই দেশ আমার আপনার সকলের। অতএব এদেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করতে আথলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সব সময় অতন্দ্র প্রহরী হয়ে কাজ করতে হবে। আর যদি ওই পাকিস্তানের প্রেতœাতা বিএনপি-জামাত চক্র সাধারন মানুষের খেটে খাওয়া যান বাহনের উপর আগুন দেয়ার চেষ্টা করে তাহলে যেই হাতে আগুন দিবে সেই হাত আমরা পুড়িয়ে দিব। আমাদের মানচিত্র রক্ষায় যা করা দরকার তাই করব। তিনি আরো বলেন, সাংবাদিক ভাইরা আমাদের বন্ধু। আজকে পত্রিকায় দেখলাম আমাদের উপজেলা আথলীগে নাকি বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। একাধিক স্থানে বিএনপির নাশকতা ঠেকাতে আথলীগের মঞ্চ হতে পারে। কাজিম উদ্দিন প্রধান বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হোন যাদের সার্বিক সহযোগিতায় তাদের নিয়েই খেলা শুরু করেছে তিনি। বিএনপি-জামাতের অবরোধকে কেন্দ্র করে বন্দর উপজেলা আথলীগের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশে উপজেলা আথলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদ ও উপজেলা আথলীগের সহসভাপতি তথা মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এমএ সালাম গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ ও বিভাজন দৃশ্যমান হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। দুই গ্রুপের নেতৃত্বে তারা একই ব্যানারে পৃথক মঞ্চ তৈরী করে আলাদা আলাদা সমাবেশ করেছে। ফলে তৃনমুল আথলীগ কর্মী ও সাধারন সমর্থকদের মাঝে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। গত ৫ অক্টোবর রবিবার মদনপুর বাসষ্ট্যান্ডে উত্তর ও দক্ষিন পাশে উপজেলা আথলীগের ব্যানারে পৃথক মঞ্চে পৃথক ভাবে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রশিদ-সালামের দ্বন্দ্ব কি এবার প্রকাশ্যে? দ্বন্দ্ব সৃষ্টির নায়ক কে এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। তথ্যসুত্রে জানা গেছে, বিএনপি জামাতের আহবানে গত রবি ও গত সোমবার পূণরায় সারাদেশে অবরোধকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাশীন দল বন্দর উপজেলা আথলীগের উদ্যোগে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ধারাবাহিকভাবে পাল্টাপাল্টি মদনপুর ¯ট্যান্ডের উত্তর ও দক্ষিন পার্শে পৃথকভাবে আলাদা মঞ্চ বানিয়ে পৃথকভাবে শান্তি সমাবেশ করছে উপজেলা আথলীগের দুই গ্রুপের নেতারা। মদনপুর ষ্ট্যান্ডের উত্তর পার্শে উপজেলা আথলীগের ব্যানারে মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আথলীগের সহসভাপতি গাজী এমএ সালাম শান্তি সমাবেশ করছে অপরদিকে একই ব্যাানারে দক্ষিন পার্শে বন্দর উপজেলা আথলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদের নেতৃত্বে শান্তি সমাবেশ করছে আথলীগ নেতৃবৃন্দ। এতে করে আথলীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মনে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হচ্ছে। আথলীগের কেউ কেউ বলছে তবে উপজেলা আথলীগের মধ্যে দুই গ্রুপের দ্বন্দ এতদিন প্রকাশ্যে না এলেও মদনপুরে আথলীগের শান্তি সমাবেশে পৃথক মঞ্চের সমাবেশ এখন বরাবরই দৃশ্যমান হল। যা দলের জন্য কখনো কল্যান বয়ে আনবেনা। একই স্থানে আথলীগের দুই গ্রুপের পৃথক মঞ্চ নিয়ে আথলীগ নেতা কর্মীসমর্থকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে ক্রমেই উপজেলা আথলীগে বিভাজনের সুর ঘনিভূত হচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে আথলীগের এক নেতা জানান,বন্দর উপজেলা আথলীগের আয়োজনে একই স্থানে পৃথক মঞ্চ সত্যিই ভাঙ্গনের একটি ইঙ্গিত। তবে দলের এমন সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করাই বাঞ্চনীয়। মদনপুরে একই স্থানে উপজেলা আথলীগের ব্যানারে পৃথক মঞ্চ তৈরী করে আলাদা আলাদা সমাবেশ করা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ তৈরী হচ্ছে। তবে আথলীগের শান্তি সমাবেশে অশান্তির সুর বাজছে। সালাম চেয়ারম্যানের কিছু কড়া বক্তব্যের কারনে কারো কারো গাত্রদাহ হয়েছে বলে যতটুকু শুনলাম। সম্ভবত এসব কারনেই তারা পৃথকভাবে মঞ্চ করেছে। তবে সামনে নির্বাচন। বিএনপি-জামাত দেশে নাশকতা করছে। এমন সময়ে দলের মধ্যে অর্ন্তদ্বন্দ শুভা পায় না। আমরা একই পতাকাতলে সকলে মিলে মিশে থাকতে চাই। এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা আথলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদের সাথে গনমাধ্যম কর্মীরা একই স্থানে আথলীগের পৃথক মঞ্চ কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এখানে পৃথক মঞ্চ হয়েছে এটা আমি জানিনা। তবে আমাদের উপজেলা আথলীগে কোন বিভাজন নেই। একাধিক স্থানেই আথলীগের মঞ্চ হতে পারে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা আথলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহমেদ বলেন, পৃথক মঞ্চ নিয়ে কোন জটিলতা নেই। এখানে বিভাজনের কিছু নেই। উপজেলা আওয়ামীলীগে কোন বিভাজন নেই। কেন্দ্রের নির্দেশ সবাইকে মানতে হবে। এ ব্যাপারে মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আথলীগের সহসভাপতি গাজী এমএ সালাম সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ আথলীগ অনেক বড় একটি দল ও সুশৃঙ্খল। তবে পৃথক মঞ্চ নিয়ে উপজেলা আথলীগের মধ্যে বিভাজন এমন প্রশ্নের উত্তরটা তারাই দিতে পারবে যারা বিভাজন মনে করে। আজকে হয়ত কারো কোন অন্তরজ¦ালা কিনা আমি জানি না। মদনপুর ইউনিয়ন আথলীগের আয়োজন কারো সহ্য হচ্ছে না হয়ত আমি জানি না। তবে উপজেলা আথলীগের নীতিনির্ধারকরা যদি বিভাজন করার চেষ্টা করে থাকে তা আমার জানা নাই। মদনপুরে দক্ষিন পার্শে উপজেলা আথলীগের শান্তি সমাবেশের মঞ্চ সম্পর্কে আমি অবগত নই। এমনকি তারা আমাদের কোন ম্যাসেজ অথবা ফোনেও কাউকে কিছু জানাননি। হয়তো বা তাদের কাছে কোন মেসেজ আছে যে, ওই পাশ দিয়ে কোন কিছু হইতে পারে। তা প্রতিরোধ বা রাস্তা পার হয়ে এ পাশে আসা কষ্ট হয় বল। তিনি আরো বলেন, চলমান শান্তি সমাবেশে বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের ব্যানারে আর মদনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আয়োজনে অনুষ্ঠানগুলো সফলভাবে শেষ হয়েছে। হঠাৎ পরিবর্তন আমার বোধগম্য নয়। মদনপুর ইউনিয়ন আথলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ কোন নেতাকর্মীরাই জানে না।