স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য গ্রীন সিগনাল আ’লীগের
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে যে কোন মুহুর্ত্বে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে। সেই সাথে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বেশ কিছু নেতাও গ্রেফতার হয়ে জেলে আছেন। আর হরতাল-অবরোধে দেশের প্রায় সব জায়গাতেই মামলা দায়েরের পর গা ঢাকা দিয়ে আছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এমন সময় বিএনপি নির্বাচনের আগে কী করবে এটি নিয়ে নানা কথাবার্তা হচ্ছে। অনেকে বলছেন, বিএনপি ভেঙে যেতে পারে। একটি অংশ চাইছে এবারের নির্বাচনে তারা অংশ নিতে। আরেকটি অংশ চাইছে যে কোন উপায়ে নির্বাচন ঠেকিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে। বিএনপি-আওয়ামীলীগের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ নারায়ণগঞ্জের নেতাদের দিকেও দৃষ্টি সবার। বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বহিষ্কার হওয়ার পর তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেয়। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের সবকটি আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী খুঁজছেন তৈমূর আলম খন্দকার। নির্বাচনের আগে দোদুল্যমান পরিস্থিতিতে এখন প্রশ্ন জেগেছে, বিএনপি যদি সত্যিই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ডাক সাইটের নেতাদের মধ্যে এই বিভক্তি ছড়িয়ে পড়বে কিনা। সাম্প্রতিক সময়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ, মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুন মাহমুদ, আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনির, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর উপর ভর করে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে শক্ত ভূমিকা রাখতে পেরেছে বিএনপি। যদিও বিএনপির একটি অংশ মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এড. আবুল কালাম, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শাহ-আলম, মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী গ্রুপের সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পরবর্তীতে বহিষ্কৃত এটিএম কামাল, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম রবি, জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মাকছুদুল আলম খোরশেদ, জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাসিরউদ্দিনসহ আরো বেশ কিছু নেতা বিএনপির বর্তমান আন্দোলন সংগ্রামে একেবারেই নীরব ভূমিকায় রয়েছেন। আর নির্বাচনের আগে বর্তমান সরব থাকা এবং নীরব থাকা নেতাদের মধ্যে কারা নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেন সেটিই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নির্বাচনের কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। গণভবনে বিকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানামুখী চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্রের কথা আলোচনা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারে, নাও আসতে পারে। বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় যদি কেউ স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হয়ে দাঁড়ায় তাদের স্বাগত জানাতে হবে। তাদের বসিয়ে দেওয়া যাবে না। তাছাড়া নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকার জন্য তিনি সবাইকে নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের লোকজন এসে অবৈধভাবে সিল মারা এবং নির্বাচনে কারচুপি করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এটিও বলেন যে, যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন মোকাবিলা করতে হবে। আর বিএনপি যদি না আসে তাহলে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। নির্বাচন বানচালের অতীতেও ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু এসব ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। ভবিষ্যতেও ষড়যন্ত্র সফল হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া নির্বাচনে ভোটগ্রহণ থেকে শুরু করে নির্বাচন পরবর্তী সময় পর্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। কেউ যেন অবৈধ ভোট প্রয়োগ বা ভোটে কারচুপি করে দলকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে সে ব্যাপারেও সতর্ক করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।