আজ বুধবার | ১৩ আগস্ট ২০২৫ | ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৮ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৬:১২

আশার সঞ্চার আ’লীগের তৃণমূলে!

ডান্ডিবার্তা | ১৮ নভেম্বর, ২০২৩ | ১:৩৩ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদীন ধরেই বিভক্তি চলমান। কেউ কাউকে তোয়াক্কা করে না। অনেক সময় সেই দ্বন্দ্ব শিষ্টাচারকেও ছাড়িয়ে যায়। কেন্দ্র থেকে বারবার হুশিয়ারি দিলেও আমলে নেন না কেউ। এমন বাস্তবতায় নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ এসেছে দলের হাইকমান্ড থেকে। এবার ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনীতি দূর করার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্র। তাতেও ব্যর্থ হয়। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নাসিকের ১০টি প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দীর্ঘ দিনের দ্বন্দ্ব ভুলে এক মঞ্চে দুই মেরুর ২ নেতা। তাতে তৃনমূলে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছে। তৃনমূল মনে করে নারায়ণগঞ্জে ২ মেরু যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে নারায়ণগঞ্জে রাজনীতি করে তা হলে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের উপর আঙ্গুল তোলার কেহ সুযোগ পাবে না। বিগত সময় আওয়ামীলীগের দ্বন্দ্ব নিরসনে কেন্দ্র পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর সব কমিটি। বিগত সময়ে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ করেছেন সাংগঠনিক বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তাদের ক্ষমা করেছে কেন্দ্র। বিগত সময় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বেহাল চিত্রের চূড়ান্ত রূপ দেখা দেয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (নাসিক)। দল থেকে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিলেও অন্য একটি গ্রুপ তার পক্ষে কাজ করেনি। বরং তারা নীরবে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন, এমন অভিযোগও রয়েছে। অথচ দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য বিভেদ ভুলে দলের সব নেতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য লাগাতার নির্দেশনা দিলেও অনেকে তা কর্ণপাত করেননি। এটা বুঝতে পেরে নাসিক নির্বাচনের মধ্যেই বিলুপ্ত করা হয় মহানগর ছাত্রলীগ-শ্রমিকলীগসহ একাধিক কমিটি। সেই সঙ্গে দলের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল নেতাদের নতুন কমিটিতে আনা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ ছাড়া যারা দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করেছেন, অপরাধের মাত্রা বুঝে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক বিধি অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এদিকে ঘরের দরজায় কড়া নারছে দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের আগে দলীয় শৃংঙ্খলা ফিরিয়ে আনা না হলে নাসিক নির্বাচনের মতই দ্বাদশ নির্বাচনে রাজনৈনিক বৈরী হওয়ার প্রভাব পড়ার শংকাতেই কেন্দ্র থেকে নারায়ণগরেঞ্জর রাজনীতির দিকে নজর দেয়া হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর আওয়ামীলীগের কাউন্সিলের কথা থাকলেও রহস্যজনক কারনে তা স্থগিত করা হয়। মহানগরে প্রায় ২৫ বছর ধরে কোনো কোনো ওয়ার্ড ও ইউনিট কমিটি নেই। মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির বয়সও প্রায় ১০ বছর। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৩ সালে। সে হিসাবে ওই কমিটির বয়স ১৯ বছর। ওই কমিটির সহসভাপতি নূর হোসেন সাত খুন মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি হয়ে বর্তমানে জেলে আছেন। এ কমিটির ৩০ শতাংশ নেতাই ইতোমধ্যে মারা গেছে বলে জানা যায়। রূপগঞ্জ থানা কমিটিরও মেয়াদ শেষ হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে সোনারগাঁও থানা আওয়ামী লীগ। জেলা, বন্দর, ফতুল্লার কমিটির মেয়াদ থাকলেও সেখানকার রাজনীতিতেও পরিবর্তনের আভাস। অন্যদিকে দলের সহযোগী সংগঠনের মধ্যে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষকলীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের বিষয়ে একই নির্দেশনা আসছে। স্থানীয় নেতাদের ভাষ্য, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে অবস্থা হযবরল। নেই চেইন অব কমান্ড। দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যক্তি ঘুরেফিরে দলের দায়িত্বে আসছেন। অনেক জায়গায় তো কমিটিই নেই। দলের চেয়ে ব্যক্তির প্রাধান্য বেশি। আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহ্যবাহী একটি দলে তো আর এমন অবস্থা থাকতে পারে না। সুতরাং এ অবস্থা থেকে উত্তরণ জরুরি। জেলার দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, নাসিক নির্বাচনের পর উলটপালট হয়েছে অনেক কিছু। অনেকে বলছেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের রাজনীতিতে একক কর্তৃত্ব আর থাকবে না। বিলুপ্ত হওয়া সহযোগী সংগঠনের নেতারা ইতিপূর্বে যে বিশেষ নেতার নির্দেশে চলত তার বলয় থেকেও বের করে আনার ইঙ্গিত পাচ্ছি। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচন দেখভাল করতে নারায়ণগঞ্জে এসে খোঁজখবর নিয়েছেন। সার্বিক দিক বিবেচনা করেই কমিটিগুলো বাতিল করা হয়েছে। নতুন কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রবীণ এ নেতা বলেন, সামনে কেন্দ্রীয় কমিটিরও কাউন্সিল হবে। তার আগে এসব বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ তাদের নিয়েই কমিটি করার সিদ্ধান্ত হবে এবার। দল করতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হবে প্রকৃতভাবে। শেখ হাসিনার কর্মী হতে হবে। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বিভিন্ন থানা কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটিতে এসব বিষয়ে আলোচনা হবে। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটাই করা হবে। আসলে এসব কমিটি অনেক আগে হয়েছে। এখন সময় এসেছে নতুন কমিটি গঠনের। যে কোনো কারণেই হোক কমিটিগুলো করা হয়নি। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এসে কেন্দ্রীয় নেতারা দেখেছেন যে, একপেশে কমিটি করলে কী হয়। এখন দল সার্বিক দিক বিবেচনা করে যা করার সেটাই করবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা