হার্ডলাইনে না’গঞ্জ বিএনপি!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছে। তফসিল ঘোষনার পর পরই আন্দোলনের নতুন পরিপল্পনা নিয়ে মাঠে নামবেন মাঠের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ইতিমধ্যে সরকার বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে রাজপথে অবস্থানের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের জাগান দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপিসহ তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এর আগে গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার পর দলের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা দৃশ্যত আত্মগোপনে চলে গেলেও, আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চলমান আন্দোলন জোরদার করতে ফের রাজপথে নামবেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রে জানান, একতরফা নির্বাচন ঠেকাতে তারা ইতোমধ্যে হরতাল, অবরোধ ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও বিভিন্ন সরকারি অফিস ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি দিয়ে বিরতিহীন আন্দোলন করার কৌশল তৈরি করেছেন। সূত্রটির মাধ্যমে জানা যায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে কী করতে হবে সে বিষয়ে তাদের দল সমমনা দলগুলোরও মতামত নিয়েছে এবং অধিকাংশ দল কোনো বিরতি ছাড়াই অবরোধ বা হরতাল কার্যকর করার পরামর্শ দিয়েছে। তাদের কৌশল অনুযায়ী, আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা এবং তফসিল বাতিল করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। ইসি যদি তাদের আল্টিমেটামে কর্ণপাত করে, তাহলে তারা তাদের কর্মসূচি নিয়ে সারাদেশে রাজপথে তাদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করবে। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনকে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। বিএনপি নেতারা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইসি কীভাবে সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে তা তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার বন্ধ এবং গ্রেপ্তার দলের সিনিয়র নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে ইসির ভূমিকাও তারা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানান। জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন বলেন, আন্দোলন জোরদার করতে দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর জন্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেই তারা তাদের গোপন স্থান থেকে বেরিয়ে আসবেন। তিনি বলেন, জেলার মহাসড়ক ও সড়কে পিকেটিং বাড়ানোর মাধ্যমে অবরোধ কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করে সড়কপথ সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে আমাদের দল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাই তফসিল ঘোষণার পর আমাদের নেতা-কর্মীরা রাজপথে নেমে আন্দোলনে নামবেন। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব রাষ্ট্রযন্ত্র কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকলে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আরও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রশ্ন উঠবে। জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, সরকার মনে করতে পারে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে বিএনপি দুর্বল হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটা হবে না। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন বাতিলের উদাহরণ আমরা দেখেছি। বিএনপি রাজপথে থেকে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। জনগণ এবার সরকারকে নির্বাচনের নামে নাটক করতে দেবে না। ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপির আন্দোলন এবার ব্যর্থ হবে না। ‘তফসিল ঘোষণা হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। আমরা তুমুল গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে আমাদের দাবি পূরণে বাধ্য করব। তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলোর মতামত উপেক্ষা করে একতরফা তফসিল ঘোষণা করা হলে তা প্রমাণ করবে সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তরিক নয়।