সরগরম না’গঞ্জের রাজনীতি
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট উত্তাল নারায়ণগঞ্জের রাজপথ। প্রতিদিন হচ্ছে আন্দোলন সংগ্রাম। সরকার পতনের আগে তারা ঘরে ফিরবেনা এমন দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল বিএনপি। বিগত সময় বিএনপি রাজপথে দাঁড়াতে পারেনি। পদে পদে তারা বাধার মুখে পড়েছে। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের আগে তারা বাধাহীন ভাবে রাজনীতির মাঠ দখল করে নিয়েছিল। বিএনপি নেতারা বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের কড়া সমালোচনায় রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত করে তুলেছে। তারা এখন সরকারের বিপক্ষে বক্তব্য দিয়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সামনে নির্বাচন আর নির্বাচনকে বাতিল করতে মাঠে রয়েছে বিএনপি। তবে তারা এখন মাঠে রামতে না পরলেও গোপনে হঠাৎ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতাদের দাবি আমরা শান্তিপূর্ন আন্দোলন করছে। বিগত সময়ও আমাদের শান্তিপূর্ন আন্দোলনে পুলিশ বাধা দিয়েছে। আন্দোলন করা আমাদের রাজনৈতিক অধিকার। বিগত সময় আমাদের অধিকার খর্ব করেছে সরকারের পেটুয়া বাহিনী। এবার যত বাধাই আসুক আমরা পিছু হটব না। সরকার আমাদের বিভিন্ন মামলা দিয়ে দমাতে চেয়েছে। কিন্তু আমরা জনগণের পক্ষে আছি। আগামীতে জনগণকে সাথে নিয়ে সরকারের স্বৈরাচারের জবাব দেব। গত শনিবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অব্যবস্থাপনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবীর রিজভী বলেন, আপনি তো সেনাবাহিনীর ঘাড়ে ভর করে প্রথমবার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসেছেন। দ্বিতীয়বার তো ইলেকশনই হয় নাই। ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালে সরকার গঠন করলেন। আর ২০১৮ সালের নির্বাচন তো এমন হয়েছে যে এমপি সাহেবের বৌ যদি তার দিকে তাকিয়ে একটু হাসে তাহলে সে মনে করে আমার বৌ মনে হয় ধরে ফেলেছে আমি ভোট চুরি করে নির্বাচিত হয়েছি। মধ্যরাতে প্রশাসনকে টাকা দিয়ে ভোট চুরি করে এমপি হলেতো ছেলে, মেয়ে, প্রতিবেশীরা হাসবে এটাই স্বাভাবিক। আর এই এমপিদের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আপনার পিতাও রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তারেক রহমানের পিতাও রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আপনার মাতা গৃহিণী ছিলেন। তারেক সাহেবের মাতা কিন্তু এ দেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী। আপনি আপনার পিতার কথা সার্বক্ষণিক বলেন। তারেক রহমান তো যোগ্য মায়ের যোগ্য সন্তান। আমরা তাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেব। তিনি বলেন, গ্যাস নেই. বিদ্যুৎ নেই, মানুষের ঘরে খাবার নেই এটা কী সহ্য হয়। আমার কেনো জানি মনে হয় এই সরকারের পতন ঘন্টা বেজে উঠেছে। যে সরকার খাবার দিতে পারে না মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারে না, ইজ্জত রক্ষা করতে পারে না। যে সরকার মুসল্লিদের সঙ্গে তামাশা করে। এটা বাংলাদেশ আমরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অধিকার অর্জন করেছি। মানুষ জীবন দিয়েছে তারপর এ দেশ অর্জন করেছি। তিনি বলেন, এ বছর হবে পরিবর্তনের বছর। এ বছর বর্তমান সরকারের শেষ বছর। এ বছর নতুন একটি পতাকা উড়বে। যে পতাকা সাম্যের পতাকা। জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন বলেন, নারায়ণগঞ্জ শ্রমিকের নগরী। উৎপাদনের নগরী। কিন্তু এই নারায়ণগঞ্জ বিশ্বব্যাপি উন্নয়নের নগরী, কারখানার নগরী হিসাবে পরিচিত পায় না। পায় গডফাদার-গডমাদারের নগরী। অত্যন্ত দু:খজনক। এক সময় নারায়ণগঞ্জের ভালো মানুষেরা আর চুপচাপ বসে থাকবে না। এক সময় এখানকার গডফাদার ও গডমাদারের সাম্রাজ্যের পতন ঘটাবে। নারায়ণগঞ্জে অবশ্যই একদিন সন্ত্রাসের বিষবাষ্প ভেদ করে শান্তির ফুল ফুটবেই ফুটবে। নারায়ণগঞ্জে একদিন অবশ্যই শহীদ জিয়ার লড়াকু সৈনিকরা এই নগরীকে সন্ত্রাসের নগরী নয় শান্তির নগরীতে পরিনত করবেই করবে। সোহেল বলেন, শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসের মতো একটা পরিবার বাংলাদেশে আছে। এই পরিবার ৩ বছরে ৫৪ হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে। সুইচ ব্যাংকে এখন আর টাকা রাখার জায়গা হচ্ছে না তাদের। দুর্নীতি শুধু বিদ্যুতে না। সরকার প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে দুর্নীতি করছে। কুইক রেন্টালের নামে কুইক চুরি করছে। নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে তাদের দুর্নীতির প্রমান গিজ গিজ করছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আওয়ামীলীগের লোকদের দুর্নীতির প্রমান রয়েছে। পৃথিবীতে দুর্নীতি করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা এখন মহাকাশের দিকে নজর দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নামে দুর্নীতির স্যাটেলাইট মহাকাশে বিদ্ধমান। তিনি বলেন, এই সরকারের দুর্ণীতির আরেকটি বড় প্রমান হচ্ছে ভোট। দিনের ভোট রাতে হয়। এই সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাও ধংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন যারা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারে না তারা আবার সরকারের পতন করবে কি করে। ওনাকে বলি একটাই প্যাকেজ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে ফিরে আনা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। প্যাকেজ একটাই কত নাম্বারে ডায়েল করলে এই প্যাকেজ লোড হবে আমরা তা জানি। সময় মত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওই নাম্বারে ফোন দিবেন এবং এই প্যাকেজ আদায় হয়ে যাবে তবে আপনাকে একটি বুদ্ধি দেই। কাপড় চোপড় জোগার করে রাইখেন কাপড় চোপড় যেনো থাকে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট কিন্তু পালানোর সময়ে কাপড় পায় নাই। আপনারা পালানোর সময় যেনো গায়ে একটু কাপড় থাকে।সেটা রেডি করে রাইখেন। গিয়াসউদ্দিন আরো বলেন, তারেক রহমানের ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে তত্তাবোধক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার যতদিন পর্যন্ত আমাদের মাঝে উপস্থিত না হবে, ততদিন পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরে যাবে না। তারা এই হাসিনা সরকারকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিয়ে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে, তার পরেই বাড়ি ফিরে যাবে। আজ থেকে এই সরকার ও হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু। আজ থেকে প্রতিদিন মিছিল হবে প্রতিদিন সংগ্রাম হবে, প্রতিদিন মিটিং হবে। এবারের সংগ্রাম হাসিনার বিদায় সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম হাসিনা উৎখাতের সংগ্রাম। আমরা শেখ হানিাকে উৎখাত করেই ঘরে ফিরব।