দুইশ’র বেশি সিট পেয়ে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ২০০’র বেশি সিট পেয়ে শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসবেন বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান। তিনি বলেছেন, ‘ইনশাল্লাহ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে। এক দিন এদিক ওদিক হবে না। ২০০’র বেশি সিট পেয়ে শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় আসবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের খুব শখ ছিল ওদের সাথে খেলবো, কিন্তু খেলার মাঠে কেউ নাই। তারা রাতে চুরি করে, বাসে আগুন দেয় আর মানুষ পুড়িয়ে মারে। এরা মানুষ হতে পারে না।’ গতকাল বুধবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আয়োজিত শান্তি মিছিলের পূর্বে শামীম ওসমান এই মন্তব্য করেন বলেন। জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের শক্তি পরিক্ষার্থে এই শান্তি মিছিলের ডাক দেন শামীম ওসমান। এর আগে, ফতুল্লা অঞ্চলের নেতাকর্মীদের নিয়েও এক বিশাল শান্তি মিছিলের আয়োজন করেছিলেন প্রভাবশালী এই আওয়ামী লীগ নেতা। গতকাল বুধবার দুপুর ২টা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে গোদনাইল বালুর মাঠে এসে জরো হতে শুরু করে নেতাকর্মীরা। এ কপর্যায়ে নেতাকর্মীদের ঢল নামে ওই মাঠে। পরে দুপুর ৩টার দিকে সেখানে উপস্থিত হন শামীম ওসমান। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে শান্তি মিছিল নিয়ে বের হন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি গোদনাইল থেকে শুরু হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে চিটাগাং রোড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের পূর্বে শামীম ওসমান বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় ছিলাম না। আমরা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলাম এই এলাকায়। রাতের বেলায় বাক্স বদলে ৩৪ হাজার ভোটে আমাদেরকে পরাজিত দেখানো হয়। প্রথমে ঘোষণা দেয় বিজয়ী হয়েছি, পরে ঘোষণা দেয় পরাজিত হয়েছি। আমরা তা মেনে নিই। যে অত্যাচার, নীপিড়ন আমাদের উপর চালানো হয়েছে। শুধু এই সিদ্ধিরগঞ্জেই আমদের ১৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী ভয়ে নিজ বাড়ীতে থাকতে পারে নি। আমার পোলিং এজেন্ট হওয়ায় আমার দুই বোনকে, একজন খালা ও তার ভাগ্নিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা যে এত সময় ধরে ক্ষমতায় আছি, জামাত কিংবা বিএনপির কাউকে একটা টোকা দিই নাই।’ শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। নারায়ণগঞ্জে কাজ হচ্ছে, ডিএনডি প্রজেক্ট হচ্ছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড কাজ হচ্ছে। এই রোডের পাশে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল হবে, ইউনিভার্সিটি হবে। আমরা চেষ্টা করেছি মানুষকে খুশি করার জন্য।’ বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে শামীম ওসমান বলেন, ‘১৩,‘১৪,‘১৫ তে মানুষ পুড়িয়েছে, গাড়ি পুরিয়েছে, ট্রেন পুড়িয়েছে। এভাবে কী রাজনীতি করা যায়। তারা আবারো একই কাজ করছে। গতকাল রেল লাইন কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। ট্রেনের লাইনে লোহার পাত বসিয়েছে যাতে ট্রেন পড়ে যায়। সব জায়াগায় এমনটি করা হচ্ছে। মানুষের মৃত্যুর মিছিল দিয়ে তাদের কী লাভ আমি জানতে চাই। লন্ডন থেকে বসে খুনি তারেক রহমান নির্দেশ দিচ্ছে, এমন একটা ভাব দেখাচ্ছে কালই যেন ক্ষমতায় আসবে। আমি আগে বলেছি, ক্ষমতার ৫২ হাজার কিলোমিটারে তারা নাই। এখন বলব, ৫২ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে তারা নাই। কেউ তাদের ক্ষমতায় বসায় নাই। তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই বাচ্চাদের দিয়ে যে কাজ করাচ্ছে। সবকিছুর ভিডিও পুলিশের কাছে আছে। এদের ভবিষ্যৎ কী হবে। কোথাও চাকরি পাবে না। আগুন দেবার ভিডিও ফুটেজ থাকার কারণে সাজা দেওয়া শুরু হয়েছে। এই বাচ্চা ছেলেগুলো কনভিক্ট হয়ে যাবে, তবে তাদের মাঠে নামানো নেতাদের কিছু হবে না। আমি অনুরোধ করবো, আপনারা মিটিং করেন, মিছিল করেন। আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। আপত্তি নাই। তবে অন্যের জীবন নষ্ট করবেন না।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘কেউ কেউ বাংলাদেশকে আফগানিস্তান, গাজার মতো অবস্থায় ফেলতে চায়। শেখ হাসিনা থাকা অবস্থায় এটা হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের কাছে ভুল-ত্রুটি করে থাকলে ক্ষমা চাই। আমরা মানুষ, ফেরেস্তা না। নির্বাচনের আগে একটি মহল পরিকল্পিত ভাবে দ্রব্যমূল্যের উধ্বগতি ঘটাচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, একসময় বলা হতো বঙ্গবন্ধুর বিচার করতে চাইলে গুম হবে, কিন্তু বিচার হয়েছে ফাঁসিও কার্যকর হয়েছে। যারা মজুদদার, দ্রব্যমূলের উধ্বগতি ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের পেটে লাথি দিয়েছেন। আপনার ও যারা বাসে আগুন দিচ্ছে তাদেরকে বলতে চাই, বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না। ৭ তারিখের পর থেকে আপনার দিন গণনা শুরু করেন। জাতির পিতার কন্যা সবকিছু মেনে নিবেন। মানবেন না শুধু একটি কথা। যারা জনগনের পেটে লাথি দেয়, জনগনকে কষ্ট দেয় সে যেই হোক না কেন আমি শামীম ওসমন হলেও আমার বুকে পাড়া দিবেন। এই জন্যেই তাকে ভালোবাসি।’