কে হচ্ছেন বলির পাঠা?
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে আপাতত আলোচনায় রূপগঞ্জ আসন। চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবৃন্দুতে শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছেন বলির পাঠা বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক নাকি তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার। নির্বাচন ঘিরে গোলাম দস্তগীর গাজীর বিপক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সক্রীয় রয়েছেন। তারা চাচ্ছেন যে কোন উপায়ে গাজীকে ঠেকাতে হবে। তারা এ নিয়ে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। আবার তৈমূরকে ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বিএনপি ও সহযোগিসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারপরও কোটি টাকার যে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তা হলো-শেষ পর্যন্ত তৈমূর আলম না গোলাম দস্তগীর গাজী। কে হবেন মহাজোটের প্রার্থী। যেহেতু তৃণমূল বিএনপি আওয়ামীলীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই ক্ষেত্রে তৈমূর আলম জোটের প্রার্থী হলে গোলাম দস্তগীর গাজীর কি হবে। তাছাড়া তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে শুধু মাত্র নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন তাই নির্বাচন করলে তাকে এই আসনেই করতে হবে। এবং তিনি নিজেও মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার আগে বলেছেন তিনি তার পৈত্রিক বাড়ি রূপগঞ্জেই নির্বাচন করবেন। এছাড়া একটি টেলিফোন আলাপে তৈমূর আলমকে বলতে শোনা গেছে ‘না আমি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন কিনবো না। আমি রূপগঞ্জে নির্বাচন করবো। আমি প্রধানমন্ত্রীর সামনেও এই কথা বলেছি।’ কিন্তু গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী এবং পরপর তিনবারের সংসদ সদস্য। আওয়ামীলীগের হাইকমান্ড তৈমূর আলম তথা তৃণমূল বিএনপিকে আসনটি ছেড়ে দিলে কপাল পুড়বে গোলাম দস্তগীর গাজীর। আর গোলাম দস্তগীর গাজীকে বহাল রাখলে কপাল পড়–বে তৈমূল আলমের। রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে, তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব। একটি কমিটমেন্টের উপর ভর করে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। এবং গ্রিণসিগন্যাল পেয়েই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন তৈমূর। আওয়ামীলীগ নিজের স্বার্থেই তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতায় রাখবে। তৈমূর আলম খন্দকার রূপগঞ্জ আসনে ছাড় না পেলে তৃণমূল বিএনপি বিকল্প কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যে সিদ্ধান্ত ক্ষমতাসীনদের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হতে পারে। তাই একটি আসনের চেয়ে একটি দলকে সাথে রাখার বিষয়ে আওয়ামীলীগ বেশী গুরুত্ব দিবে। সেক্ষেত্রে গোলাম দস্তগীর গাজীর বলিরপাঠা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে রূপগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মতে, শেষ পর্যন্ত এমনও হতে পারে তৈমূর আলম তৃণমূল থেকে এবং গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামীলীগ থেকে প্রতিদ্বন্ধি¦তা করবে। সেই ক্ষেত্রে গাজী ঠেকাও গ্রæপটি সক্রীয় হলে তৈমূরের শাপে বর হবে। যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান ভুইয়া। তিনি গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে বক্তব্যও দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তে তিনি বসে পড়লেও পরোক্ষভাবে গোলাম দস্তগীর গাজীর বিপক্ষে থাকবে তার অবস্থান। আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করলে সে নৌকার ভোট কাটবে। সেই ক্ষেত্রে তৈমূর আলমের পাল্লা ভারী। এদিকে আরেকটি সূত্র জানায়, গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে ও রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি গোলাম মর্তুজা পাপ্পাও মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। গোলাম দস্তগীর গাজী সরে দাঁড়ালে পাপ্পা গাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যেতে পারেন। মোটকথা কঠিন এক সমীকরণে রূপগঞ্জ আসন। তবে জটিল এই সমীকরণের সমাধান পেতে অপেক্ষা করতে হবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ওইদিন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।