আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | রাত ২:৫৯

বছরজুড়ে নৌকা চেয়ে এখন তারা নিশ্চুপ

ডান্ডিবার্তা | ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ সদর-বন্দর নিয়ে গঠিত সদর-বন্দর সংসদীয় আসন। জেলার গুরুত্বপূর্ণ আসনটি গত ১৫ বছর ধরে জাতীয় পাটির দখলে। কারণ জাতীয় পাটি আওয়ামীলীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পার করে আসছে। ফলে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে এখানে জাতীয় পাটি লাঙ্গল ছাড়াও নৌকার ভোটে বিজীয় হয়ে আসছেন। কিন্তু জাতীয় পাটি মহাজোটের অংশীদার হলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতারা সদর-বন্দর আসনে নৌকার প্রার্থী দেয়ার জন্য বছরের পর বছর দলের হাইকমান্ডের কাছে দাবী জানিয়ে আসছেন। এমনকি সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে গত এক বছর ধরে ব্যাপকভাবে তারা সক্রীয় হয়েছেন যেন এই আসনটি জাতীয় পাটিকে না দেয়া হয়। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নেতারা তাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে বাঘের মতো গর্জন দিয়ে বলেছেন, সদর-বন্দর আসনে এবার নৌকার প্রার্থী দিতে হবে। এ লক্ষ্যে দলের মনোনয়ন পেতে বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা দলীয় নানা কর্মসূচিতে শহর-বন্দরে ব্যাপক সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়েছেন। এক পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করলে উৎসবমুখোর পরিবেশ তৈরী হয় আওয়ামীলীগ শিবিরে। তফসিল অনুযায়ী আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ড কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে। এতে করে সদর-বন্দর আসনে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেন ৬জন। তারা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ বাদল, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত ও মহানগন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল। ৫০ হাজার টাকা করে দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনার পর এই ৬ নেতা নানাভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি চালিয়েছেন এলাকায়। এবং আশাবাদী ছিলেন, তাদের মধ্যে যে কাউকে এবার নৌকার মনোনীত প্রার্থী করবেন আওয়ামীলীগের হাকমান্ড। কিন্তু ২৬ নভেম্বর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ২৯৮টি সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। বাকী রাখা হয় সদর-বন্দর ও কুষ্টিয়া-২ আসনটি। একইদিন সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কেউ বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় প্রার্থীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় কেউ পাশ করে আসতে পারবেন না। প্রত্যেক প্রার্থীকেই একজন করে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখতে হবে। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন। কারণ নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে হবে। ফলে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করার পরও দেশের বহু সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সাহস করেননি দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী ৬ নেতার কেউ। যদিও এই আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই বলছেন, আব্দুল হাই, আনোয়ার হোসেন, আবু হাসনাত শহীদ বাদল, আনিসুর রহমান দিপু, জিএম আরাফাত ও আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল দলীয় ফরম কিনেছেন, আবার তা পুরণ করে জমাও দিয়েছেন পাটি অফিসে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বিধি নিষেধ না থাকলেও এই নেতাদের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী না হওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। অথচ বছর জুড়ে তারা বাঘের মতো তর্জন-গর্জন করেছে, এই আসনে নৌকার প্রার্থী দিতে হবে এবং নৌকার প্রার্থী এখানে নির্বাচন করবে। কিন্তু দিন শেষে তারা কেউ-ই স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হয়নি। তাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বাঘের গর্জন মিউ মিউতে রূপ নিয়েছে। ঘরে বাইরে সভা-সমাবেশে লম্বা লম্বা কথা বলে। কাজের বেলায় ঠন ঠন। আবার কেউ কেউ বলছেন, হয়তো ভয়ে না হয় আর্থিক সুবিধা নিয়ে সেলিম ওসমানের বিপক্ষে প্রার্থী হওয়ার সাহস করেননি কেউ। এদিকে ৩০ নভেম্বর ছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। গতকাল সোমবার মনোনয়ন পত্র যাছাই-বাছাইয়ে সদর-বন্দর আসনে ৫জন প্রার্থীর সকলের মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষিত হয়েছে। এরমধ্যে বর্তমান জাতীয় পাটির এমপি সেলিম ওসমান হেভিওয়েট প্রার্থী। বাকী ৪জন তার সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ধারে কাছেও ভিড়তে পারবে না বলে মনে করছেন সদর ও বন্দরের মানুষ। ফলে সবকিছু ঠিক থাকলে তৃতীয়ভারের মতো সংসদ সদস্য হওয়ার দিকে এগিয়ে রয়েছেন সেলিম ওসমান।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা