ব্যাকফুটে আ’লীগের কয়েকজন
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার কাজী জাফরউল্লাহ। তিনি গত দুটি নির্বাচনে ফরিদপুরের একটি আসন থেকে পরাজিত হয়েছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, এবার যেহেতু তাকে নির্বাচন পরিচালনার কো-চেয়ার করা হয়েছে, তিনি বোধহয় এবার নির্বাচন করবেন না। এর আরেকটি কারণ ছিল ওই আসনে গত দুটি নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত মজিবুর রহমান চৌধুরী বা নিক্সন চৌধুরী ইতোমধ্যে আওয়ামী যুবলীগে যোগ দিয়েছেন এবং আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য তিনি। সমস্ত হিসাব নিকেশ করেই সকলে ধরে নিয়েছিল এবার নিক্সন চৌধুরী ফরিদপুরের এই আসনটিতে প্রার্থী হবেন। কিন্তু কাজী জাফরউল্লাহ নির্বাচন পরিচালনার কো-চেয়ারই শুধু থাকেননি তিনি নির্বাচনে নিজে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ফরিদপুরের এই আসন থেকে। আর এই প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে গিয়ে শুরুতে তিনি ব্যাকফুটে চলে গেছেন। এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে, তার নির্বাচনী এলাকার মাঠ নিক্সন চৌধুরীর দখলে। নিক্সন চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন এবং কাজী জাফরউল্লাহকে হারানোর ঘোষণা দিয়েই তিনি নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে, জাফরুল্লাহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে তার একান্ত অনুগতদের যে ভাবে জিতিয়েছিলেন, তাতেও নির্বাচনের মাঠে তিনি সুবিধা করতে পারছেন না। একই অবস্থা হয়েছে আওয়ামী লীগের আরেক হেভিওয়েট নেতা আব্দুর রহমানের। আব্দুর রহমান গত নির্বাচনে ফরিদপুর থেকে মনোনয়ন পাননি। এবার তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার আসনে এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছে। আর এই প্রচারণায় আব্দুর রহমান যে কিছুটা আতঙ্কিত, সেটি তার কথাতেই ফুটে উঠেছে। বর্তমান সরকারের পাট এবং বস্ত্র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গাজী গোলাম দস্তগীর। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তিনিও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু এই নির্বাচনে তার কি পরিণতি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে তার নির্বাচনী এলাকায় সংশয় এবং সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এই আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন তৈমুর আলম খন্দকার। তৈমুর আলম খন্দকার ইতোমধ্যেই এই আসনে নিজেকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন এবং আওয়ামী লীগের একটি অংশ যারা নানা কারণে গাজী গোলাম দস্তগীর ওপর ক্ষুব্ধ তারা সমর্থন দিচ্ছেন তৈমুর আলম খন্দকারকে। তাছাড়া তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে অন্যান্য মহলও সমর্থন দিচ্ছে। এর ফলে গাজী গোলাম দস্তগীরের নির্বাচনে জয় এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। একই রকম অবস্থা হয়েছে আরও বেশ কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায়। এখন দেখার বিষয় যে, আওয়ামী লীগের এই সমস্ত হেভিওয়েট প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত ব্যাকফুট থেকে বেরিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারেন কি না। এবারের নির্বাচনে একটি বিশেষত্ব হল কোনো প্রার্থীর পক্ষে এখন পর্যন্ত প্রশাসন বা পুলিশ সহানুভূতি দেখাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা আছে। কাউকেই কোনো ব্যক্তি বা দলের পক্ষে পক্ষপাত দেখানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও এ ব্যাপারে সজাগ। তাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীরই ভোগ্য বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।