বিএনপি রাজপথে বার বার ব্যর্থ!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট গত ২৮ অক্টোবরের পর বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে বড় আকারে জমায়েত হয়ে কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। দফায় দফায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে হরতাল-অবরোধ পালন করে আসছে দলটির নেতাকর্মীরা। কিন্তু দীর্ঘ ৪৩ দিন পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন পালনকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে বড় জমায়েত হওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি ছিলো বর্তমানে যত মামলা-হামলা যাই থাকুক না কেন। আত্মগোপনে থেকে হলে ও কৌশলে মানববন্ধন সফল করা হবে। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ার বার ভবনের সামনে যে মানববন্ধনের আয়োজন করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ তা চোখের পলকেই আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের বাধার মুখে পন্ড হয়ে যায়। তা ছাড়া বিএনপির এই মানববন্ধনকে ঘিরে সকাল থেকেই চাঁনমারী আদালতপাড়ায় ছিলো সকাল থেকেই পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এমনকি আদালতপাড়ার মূল ফটকের গেইট বন্ধ রেখে সেখানে অবস্থান করে পুলিশ। কোন নারীদের আলাদাতপাড়ায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি ছিলো কড়া নিরাপত্তা। এদিকে মানববন্ধন পন্ড হওয়ার পর আদালতপাড়ার বাহিরে থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলাদলের সাধারন সম্পাদক রুমা আক্তার, রূপগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সানজিদা আক্তার, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সালমা আক্তার কাজল, নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলাদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিলা আক্তার এই চারজনকে আটক করে (ডিবি) পুলিশ। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী জানা গেছে, যেহেতু বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলায় জর্জরিত যার কারণে নেতাকর্মীরা থাকবে না কিন্তু ভুক্তভোগীদের ফ্যামিলির অনেকেই থাকবে। কিন্তু এটা ও দেখা যায়নি তা ছাড়া আইনজীবীদের থাকার কথা থাকলে ও শুধু বিএনপির প্যানেলের নয়ন ছাড়া কেউ সেখানে দাড়াঁতে সাহস পায়নি বলে ও জানা গেছে। তাছাড়া বিএনপির দাউদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এড. হেলালকে আদালতপাড়ার আশেপাশে ঘুরাফেরা করতে দেখা গেলে ও মানববন্ধনের ব্যানারের পিছনে আসেনি তিনি। এমনকি পুলিশের কড়া নিরপত্তায় আদালতপাড়া থাকায় দূর থেকেই দেখে অনেকে উধাও হয়ে পরেন। মহানগর বিএনপির সদস্য শিবলীসহ আরো অনেকেকে আলাদাপাড়ায় এসে ঘুরতে দেখা গেলে ও মানববন্ধন যেমন অন্য দলের এমনই ভূমিকা ছিলো তাদের। তাদের লক্ষ্য ছিলো এই মানববন্ধনে তারা নেতাকর্মীদের জমায়েতে তাদের মনোবল আবারো চাঙ্গা করবেন কিন্তু সব কিছুতেই ধূলোস্বাদ। যা দেখে বুঝা গেলো প্রস্তুতি থাকলে ও দিন শেষে ব্যর্থতার বোঝাই মাথায় নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। সূত্র বলছে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে জনমনে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিলো, এই বছর এই ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে আবারো উত্তেজনার দেখা মিললে ও সব শেষে ফলাফল সেই বিগত দিনের মতো শূণ্যই হয়ে রইলো। এদিকে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দাবি, যারা বড় বড়পদ নিয়ে বসে আছে তারা যদি একত্রিত হয়ে রাজপথে নামা শুরু করে একে একে সকলেই নামতে শুরু করবে। কিন্তু সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরাই বর্তমানে পালিয়ে বা আত্মগোপনে রয়েছে। যাকে ঘিরে যতোই মানববন্ধন হোক না কেন বিএনপি বড় জমায়েতে সামনে আরো কর্মী সংকটে পরবে। বিএনপির আরো একাধিক নেতাকর্মীরা বলছে যেহেতু নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিএনপির একাধিক আইনজীবী রয়েছে তারা আজকে এই মানববন্ধনে কেন পালিয়ে আবার অনেকে থাকলে ও তারা কেন আজকে ব্যনারের পিছনে আসতে ভয় পাচ্ছে। এতেই বোঝা যায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন পালনকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার বিএনপি খুন-গুমের পরিবারের স্বজন ও বিএনপির আইনজীবীরা। যাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের বাঁধার মুখে পন্ড করে দেয়। এ সময় মানববন্ধনের ব্যানার ছিনিয়ে নেয় জেলা বারের সভাপতি এড. ফেরদৌস জুয়েল ও সাধারন সম্পাদক এড. মহিসিন মিয়া এছাড়া ও এদের নেতৃত্বে আরো অনেক আওয়ামী লীগপন্থীরা বিএনপির ভুক্তভোগী স্বজন ও আইনজীবীদের ধাক্কিয়ে ধাক্কিয়ে আলাদাপাড়া থেকে বের করতে দেখা গেছে। কিন্তু প্রতিবাদে বিএনপির কাউকে দেখা যায় না। যা বলতে বুঝা যাচ্ছে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ভিতরে ভয় ঢুকে গেছে। তৃণমূল পার্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছে, বিএনপি তাদের ভয়কে ভূলে গিয়ে রাজপথে নামতে না পারলে তাদের যে লক্ষ্য ৭ জানুয়ারী নির্বাচন প্রতিহত করা এটাতে ও তারা ব্যর্থ হবে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার থেকে ৩৬ ঘন্টার বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি চলছে। বর্তমানে অবরোধের নামে ঝটিকা মিছিল ছাড়া বিএনপির বড় জমায়েত করার শক্তি নেই বলছে অনেকেই। তাছাড়া নির্বাচনের আগমুহুর্ত্বে বড় কোন সভা-সমাবেশের আকাঙ্ক্ষা ও পাওয়া যাচ্ছে না।