আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৯:০৫

অবশেষে লাঙ্গলের পক্ষেই আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সদর-বন্দর আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী না দেয়ার বেদনা ভুলতে খুব বেশি সময় নেননি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। যার ফলে এই আসনে ফুরফুরে মেজাজে আছেন জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রাপ্ত নেতা সেলিম ওসমান। এখনো আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি জোটে কিংবা জোট ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবেন তার সিদ্ধান্ত নেননি। তার আগেই জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানকে নির্বাচনে জয়ী করতে মাঠে নেমেছেন। তবে এখনো কেন্দ্র থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘দলীয়ভাবে কেন্দ্র থেকে লাঙলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার মত কোন নির্দেশনা দেয়া হয় নাই। ১৭ ডিসেম্বরের পরে দল থেকে নির্দেশনভ আসতে পারে। তখন নির্দেশনা পেলে আমার কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মতো কাজ করবো।’ এদিকে নির্দেশনা আসার আগেই জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমে যাওয়ায় ব্যথিত আওয়ামীলীগের অনেক কর্মী। তারা বলছেন, এই আসনে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এড.আনিসুর রহমান দিপুসহ আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সাহস করতে পারেননি। এতে তৃণমূল কর্মীরা অনেক ব্যথিত ছিল। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগেরই আরেকটি অংশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানকে জেতাতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন। গত রোববার বাদ মাগরিব পুরান কোর্ট এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বন্দর ১৯ থেকে ২৭নং ওয়ার্ড পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে মহানগর আওয়ামী লীগ। মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম আরমানের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এড. খোকন সাহা। সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রবিউল ইসলাম। এ সময় সেলিম ওসমানের প্রতি সমর্থণ জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহমুদা মালা, দপ্তর সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার সাহা, মহানগর তাঁতী লীগের আহŸায়ক চৌধুরী এইচ এম শাহেদ, ২৭নং ওর্য়াড আওয়ামী লীগ নেতা ইসলাম বুলু, কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলাম, ২৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন আনু, মোজবা উদ্দিন ২৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম, আলামিন আহমেদ, ফয়েজ মোল্লা। ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ, জনি, ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবুবর রহমান, কুদ্দুস, ২২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সরোয়ার সবুজ, ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান খোকন, সোহেল করিম রিপন, ১৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রবিসহ আরো অনেকে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এড. খোকন সাহা বলেন, আপা আমাকে বলছে আমরা বলবো না, বিচার বিবেচনা আপনাদের। যেই প্রার্থী এলাকার জন্য ভালো, যার মাধ্যমে এলাকায় দলের আরও উন্নয়ন হবে; এরকম প্রার্থী খোঁজেন। আমি অনেকের সাথে আলাপ আলোচনা করেছি, সবাই এক বাক্যে আমাকে বলেছে সেলিম ওসমানের নির্বাচনটা করা উচিত। অনেকে অনেক রকমের চিন্তাভাবনা করেন। চাওয়া পাওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অনেক সম্মান দিছে আমাকে। নেত্রীও অনেক সম্মান দিয়েছে। বাসা থেকে বের হলে একটা সালাম তো পাই। বয়স অনেক হইছে, তাই এখন আর টাকা কামানোর চিন্তা করি না। চাই একটু সম্মান। কোন অভিযোগ কারো বিরুদ্ধে করবেন না, নির্বাচন আসন্ন। রাগ অভিমান আমারও আছে, চাপা দিয়ে ফেলেছি। প্রতিটি কেন্দ্রে ২০০ করে ভোটারের জন্য ২জন করে নেতৃবৃন্দ থাকবেন, একজন পুরুষ একজন মহিলা। যাদের কাজ হবে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত করা। ভোট কিন্তু শতভাগ সুষ্ঠু হবে। সরকার সারা বিশ্বকে দেখাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠ নির্বাচন হয়। সেলিম ভাই আমাদের কি বললো এটা দেখে লাভ নাই। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা তাদের মতো কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করবো। তিনি বলেন, সেলিম ভাই নিজেও দুই নম্বরি করে না, অন্য কাউরেও করতে দেয় না; এটা হচ্ছে সেলিম ওসমান। আমি রশিদ ভাইয়ের সাথে কথা বলবো এবং সদর বন্দরের ১৮টি ওয়ার্ড ও বন্দরের ৫টি ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের নিয়ে এমপি সাহেবের সাথে একটি মিটিং এর ব্যবস্থা আমি অচিরেই করবো। এদিকে গত সোমবার সন্ধ্যায় মসিনাবান্দ সমাজ উন্নয়ন সংসদে আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী নির্বাচনে যাতে ভোটার সংখ্যা কোন ভাবে কম না হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পাঁচ আসনটি খালি রেখেছেন সেলিম ওসমানের জন্য। তাকে জয় লাভ করাতে আমরা কাজ করবো আমাদের প্রতিটি কেন্দ্র যাতে কম পক্ষে ৬০% ভাগ ভোটার উপস্থিতি থাকে সেটার দিকে সকলে খেয়াল করবেন। সেলিম ওসমান লাঙ্গল মার্কা নিলেও তিনি কিন্তু আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান প্রধানমন্ত্রী তাকে এ আসনটি দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজির উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, সদর থানা আওয়ামীলীগ হলো খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি থানা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নৌকা মার্কায় যে প্রার্থী সে আমাদের সাথে কোন ধরনের আলোচনা করেনি। তবে আমাদের বর্তমান এমপি সেলিম ওসমান আমাদের ডাক দিয়েছেন। তাই আমরা সদর থানার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তার পক্ষে আমরা কাজ করবো। তার জন্য কিভাবে কি করা যায় আপনাদের সকলের মতামত দিবেন যে ভাবে ভালো হবে সে ভাবেই করা হবে। সদর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল আল মামুন বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর-বন্দর আসনে আলহাজ্ব একেএম সেলিম ওসমানের পক্ষে আমরা সদর থানা আওয়ামীলীগ কাজ করবো। এবং অন্য সকল ইউনিয়নের মত করে আমরাও এমপি সাহেব এর সাথে আলোচনা করবো। আপনারা আমাকে কিছুদিন সময় দিন আমি আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দিবো তার পরে আপনারা যেভাবে বলবেন সে ভাবেই কমিটি দেওয়া হবে সকলকে যাচাই বাজাই করে। আর এবার নির্বাচনে যে কোন ভাবে ভোটার এর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সেলিম ওসমানের সাথে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা আলোচনায় বসেন। দলীয় সূত্র বলছে, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সেলিম ওসমানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল এড. খোকন সাহা, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রবিউল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, এড. মাহমুদা মালা, দপ্তর সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার সাহা, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. ওয়াজেদ আলি খোকন, বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া সাজনু, আওয়ামী লীগ নেতা আনিস আহাম্মেদ হেনা, ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিয়াজুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, শাফায়েত আলম সানিসহ ১১থেকে ১৮নং ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিনসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা সমর্থন দেন। তবে দক্ষিণ বলয়ের নেতা হিসেবে বিবেচিত জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবীব এ সকল নেতারা রয়েছে নীরব। সেলিম ওসমানকে সমর্থনের বিষয়ে দক্ষিণ বলয়ে যারা আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন এবং জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ পদে রয়েছেন তারা এখনো জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সেলিম ওসমানকে সমর্থনের বিষয়ে কোন রকম সিদ্ধান্ত নেননি। কিন্তু দক্ষিণ বলয়ের নেতাদের সূত্রে জানা যায়, ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে কাকে সমর্থন দিবেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা