নির্বাচনী চ্যালেঞ্জের মুখে প্রার্থীরা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বর্তমান পাঁচজন এমপির মাঝে স্বস্তিতে রয়েছেন তিনজন। এরা হলেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের একেএম শামীম ওসমান, সদর-বন্দর আসনের একেএম সেলিম ওসমান এবং আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম বাবু। আর চ্যালেঞ্জে রয়েছেন দুইজন। এরা হলেন রুপগঞ্জের গাজী গোলাম দস্তগীর এবং সোনারগাঁয়ের লিয়াকত হোসেন খোকা। পাঁচটি আসনের মাঝে শামীম ওসমান এবং সেলিম ওসমানের ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ ও সদর-বন্দর আসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা দুই ভাই দুই দল থেকে নির্বাচন করছেন। শামীম ওসমানের প্রতিক নৌকা আর সেলিম ওসমানের প্রতিক লাঙ্গল। আর আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম বাবু নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে এই সময়ে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তবে নারায়ণগঞ্জের বাকী দুটি আসনে নির্বাচনের কিছুটা আমেজ থাকলেও এই তিনটি আসনে তেমন কোনো আমেজ নেই। কারন এই তিন প্রার্থীর কারো সাথেই গুরুত্বপূর্ণ বা শক্ত কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী নেই। যারা আছেন তাদের সাথে জনগনের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের ভোটাররা মনে করছেন এখানে আগামী ৭ জানুয়ারী যে ভোট হচ্ছে তাতে যে পরিমান বা যতো কম ভোটই কাষ্ট হোকনা কেনো জিতবেন এই তিন প্রার্থী। কারন এই তিনজনেররই যে কর্মী বাহিনী রয়েছে তাতে কর্মীরা ভোট দিলেই জিতে যাবেন এরা তিনজন। উল্লেখিত তিন আসনের ভোটারদের সাথে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে। এ বিষয়ে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের ফতুল্লা থানা এলাকার মাসদাইর এলাকার ভোটার শরীফ হোসেন মোল্লা বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের দুই সন্তান একেএম সেলিম ওসমান এবং একেএম শামীম ওসমানকে বরন করে নিতে প্রস্তুত রয়েছি। ৭ জানুয়ারী আমরা ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে আমাদের দলের প্রার্থী শামীম ওসমানকেই ভোট দেবো। তবে আমি মনে করি শামীম ওসমান সাহেব এরই মাঝে এমপি হয়ে গেছেন। কারন তারতো কোনো শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী নেই। এখানে শামীম ওসমানের প্রতিদ্ব›দ্বী কারা আছেন সেটাও জানি না। কারো নামও শুনি নাই। তবে এটা শুনেছি জাতীয় পার্টির আর তৃনমূলের নাকি প্রার্থী আছে। কিন্তু তারা কারা আমরা চিনি না। এসব প্রার্থী কোনো ভোট পাবে না। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসতো তাহলে প্রতিদ্ব›দ্বীতা হতো। এখন আমরা নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। শামীম ভাই আমাদের এমপি ছিলেন তিনিই থাকবেন। একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন বক্তবলীর আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে আসতো তাহলে আমি বিএনপিকে ভোট দিতাম। কিন্তু এখন আর ভোট কেন্দ্রেই যাবো না। নির্বাচন হবে এক তরফা। আওয়ামী লীগের ভোটাররা যদি ভোট কেন্দ্রে যায় তাহলে অন্তত এক লাখ ভোট পেয়ে শামীম ওসমানই নির্বাচিত হবেন। তাই আমরা মনে করি যদি ৭ জানুয়ারী র্বিাচন হয় তাহলে শামীম ওসমানই এমপি হবেন। অপরদিকে একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন সদর-বন্দর আসনের ভোটাররা। এ বিষয়ে শহরের আমলা পাড়ার বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বলেন, সেলিম ওসমানই এমপি থাকবেন। এখানেতো আওয়ামীলীগ তার বিপক্ষে কোনো প্রার্থী দেন নাই আর বিএনপিতো নির্বাচনেই আসছে না। তাই এবারও তিনিই এমপি হচ্ছেন। তবে এখানে যদি বিএনপির অথবা নৌকার কোনো প্রার্থী থাকতো তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো, প্রতিদ্ব›দ্বীতা হতো। এখন সেলিম ওসমান ঘুমিয়ে থাকলেও তিনি জযী হবেন। তাই সদর-বন্দর আসনে কোনো প্রতিদ্ব›দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে না। সেলিম ওসমানকেই বিজয়ী ধরে নেয়া যায়। অন্য প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন তিনি জানেন না সেলিম ওসমানের বিপক্ষে কেউ নির্বাচন করছেন কিনা। কেউ নির্বাচনে দাড়িয়ে থাকলে তিনি তাদের নামও শোনেনি। তিনি চিনেন শুধু সেলিম ওসমানকে। তাই তিনি মনে করেন এবারও সেলিম ওসমানই এমপি হচ্ছেন। এমন কি তারা দুইজনই জিতবেন বিপুল ভোটের ব্যাবধানে। একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন আড়াইহাজারের ভোটাররা। তাদের মতে নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশ নিতো তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। মানুষ ভোট দিতে পারলে লড়াই হতো নৌকা আর ধানের শীষের মাঝে। তখন কে জিততো বলা যায় না। কিন্তু এখন যে নৌকার প্রার্থী জিতে যাবে এতে কারোই কোনো সন্দেহ নেই। মূলত এভাবেই এখন নারায়ণগঞ্জের এই তিনটি আসনের মানুষ মনে করেন আবারও শামীম ওসমান আর সেলিম ওসমানই এমপি হচ্ছেন বলে মনে করেন সর্ব স্থরের সাধারন মানুষ। তাদের প্রতিদ্ব›দ্বী কোনো প্রার্থীকে তারা চিনেন না। তবে রুপগঞ্জ আর সোনারগাঁ আসনে নৌকার প্রার্থীরা বহাল থাকলে তাদের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং লাঙ্গলের প্রার্থীর তীব্র লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে রূপগঞ্জ আসনে গাজী গোলাম দস্তগীরের সঙ্গে স্বতন্ত্র শাজাহান ভুইয়ার এবং সোনারগাঁয়ে নৌকার কায়সার হাসনাতের সাথে লাঙ্গলের লেয়াকত হোসেন খোকার তীব্র প্রতিদ্ব›দ্বীতা হতে পারে বলে ওই দুই এলাকার ভোটাররা জানিয়েছেন। ফলে নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনে প্রায় বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় তিন এমপি নির্বাচিত হবেন আর দুটি আসনে বর্তমান এমপিরা প্রতিদ্ব›দ্বীতার মুখে পড়বেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।