আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৬:৩০

সোনারগাঁবাসীর দৃষ্টি ১৭ ডিসেম্বর

ডান্ডিবার্তা | ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ৯:৪২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ই জানুয়ারী। নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগ, জাতীয়পার্টি, তৃনমুল বিএনপিসহ সমামনা দলগুলো তাদের দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগের শরীক দলগুলোকে আসন বন্টন নিয়ে আলোচনা চলছে। এরমধ্যে সোনারগাঁ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দিয়েছেন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতকে অপরদিকে জাতীয়পার্টিকে দুই দলই মনোনয়ন দিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে। গত দুটি নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী দেয়নি দলটি। এবার এ আসনটিতে প্রার্থী দেয়ায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে ভিন্ন সমিকরন। এবারও কি এ আসনটি জাতীয়পার্টিকে দেয়া হবে নাকি আওয়ামীলীগই রেখে দিবে? নাকি নির্বাচনের মাধ্যমে মাঠে ফয়সালা হবে এ নিয়ে চলছে সর্বত্র আলোচনা। আবার অনেকে মনে করছেন আগামী ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন সেই দিনে হয়ত একটা ফয়সালা আসতে পারে। সেজন্য উপজেলার সকল রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ সাথে তাকিয়ে আছে ১৭ তারিখের দিকে। জানা গেছে, নির্বাচন তফসিল ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ৭ই জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী আওয়ামীলীগ জাতীয়পার্টিসহ অন্যান্য দলগুলো নির্বাচনের জন্য সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মীদের মনোনয়ন দেয়। এদিকে গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয়পার্টির সাথে জোট করার আওয়ামীলীগ সোনারগাঁয়ে কোন দলীয় প্রার্থী দেয়নি। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সোনারগাঁ থেকে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতকে দলীয় মনোনয়ন দেয়। এদিকে জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকেও জাতীয়পার্টির মনোনয়ন দিয়েছে। বিগত দিনে এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী না থাকায় খুব সহজেই এমপি নির্বাচিত হোন খোকা। এবার আওয়ামীলীগের প্রার্থী থাকায় দুশ্চিতায় রয়েছে জাতীয়পার্টির কর্মীরা। এদিকে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা ভাবছে লিয়াকত হোসেন খোকা যেহেতু জাতীয়পার্টির একজন শক্তিশালী নেতা সে জন্য জাতীয়পার্টিকে সারা দেশে যদি ১০ আসনে ছাড় দেয় আওয়ামীলীগ তার মধ্যে লিয়াকত হোসেন খোকার আসন একটি। সে জন্য তারা মনে করছেন আগামী ১৭ তারিখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে কায়সার হাসনাতের মনোনয়নপত্রটি প্রত্যাহার করে নিতে হতে পারে। এর ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবে জাতীয়পার্টি। আবার আওয়ামীলীগ নেতারা মনে করছেন গত ১০ বছর ধরে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের এমপি না থাকায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে দলটি। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি সোনারগাঁ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহমান বিধায় আন্দোলন সংগ্রামে সোনারগাঁ উপজেলার গুরুত্ব অনেক বেশী। বিএনপি জামায়েতকে প্রতিহত করতে সোনারগাঁ উপজেলায় আওয়ামীলীগ দরকার। সেজন্য শেখ হাসিনা সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতকে মনোনয়ন দিয়েছেন এখানে এবার কায়সার হাসনাতই শেষ পর্যন্ত থাকবে। জাতীয় পার্টি (জাপা) নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও দলটির সঙ্গে সমঝোতা করবে আওয়ামী লীগ। তবে ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলের জন্য কয়টি আসন ছাড়বে, তা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি। জাপা গতকাল পর্যন্ত আসনের তালিকা কমিয়ে ৫০টিতে নেমেছে। আজ শুক্রবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এরপর আসন সংখ্যার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। সুত্রমতে, আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের জন্য যেসব আসনে ছাড় দিচ্ছে, সেখানেও জাতীয় পার্টিকে ভোটে থাকতে বলছে। যেমন বরিশাল-৩ আসন শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে দিচ্ছে; একই আসনে জাপাকেও ছাড় দেওয়ার কথা বলেছে। সাতক্ষীরা-১ আসনেও একই অবস্থা। এতে ক্ষমতাসীনদের শরিকদের সঙ্গেই লাঙ্গলকে লড়াই করতে হবে। এমন প্রেক্ষাপটে গতকালও জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু আগের মতো দাবি করেছেন, কোনো দলের কাছে আসন চাওয়া হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে বড় দল এবং তারা নির্বাচন করছে; জাতীয় পার্টিও নির্বাচন করছে। দু’দলের মূল প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে। তাই একটি সম্পর্ক তৈরি করা হচ্ছে। মাঠে প্রতিযোগিতা হলেও কিছু বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এক থাকতে চাইছে। এদিকে জাপা সূত্র জানিয়েছে, জি এম কাদের, জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক চুন্নু একটি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ জন্য তাদের কেউ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি। এ সূত্রটি জানিয়েছে, জাপা নেতারা নিশ্চয়তা দিয়েছেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক, তারা নির্বাচন থেকে সরবেন না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোট করবেন। কিন্তু জাপাকে আগামী সংসদে বিরোধী দল হওয়ার মতো ‘সম্মানজনক সংখ্যক’ আসনে জয়ের নিশ্চয়তা দিতে হবে। জাপার এক কো-চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তপশিল ঘোষণার পরও আওয়ামী লীগের ভাবনা ছিল, কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিত দলগুলোকে আগামী সংসদে বিরোধী দল বানানো হবে। দলগুলো বিএনপি নেতাদের নির্বাচনে আনতে না পারায় সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী লীগ জাপাকে নির্বাচনে চাইলেও নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকাদের যারা এমপি হবেন, তাদের নিয়ে আগামী সংসদে বিরোধী দল বানাতে পারে– এমন আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই জাপা কিছুটা অনিশ্চয়তায় ভুগছে। গতকালের বৈঠকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, জাপাই হবে বিরোধী দল। তবে এতে জাপার শীর্ষ নেতৃত্ব আশ্বস্ত কিনা, তা জানাতে পারেননি ওই নেতা। জাপার আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের প্রস্তাব ছিল নির্বাচনকে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ দেখাতে সব আসনেই নৌকার বিরুদ্ধে ভোটে লড়বেন লাঙ্গলের প্রার্থীরা। পরাজয় নিশ্চিত হওয়ায় এ প্রস্তাবে রাজি নন তারা। শুধু নৌকার নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার দাবি করে জাপা। নির্বাচনকে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ দেখাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কোনো অবস্থাতেই সরানো হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তুলে নিলে জাপা ৩৫ আসন পেলেই সন্তুষ্ট। স্বতন্ত্র থাকলে ৬০ আসন চেয়েছিল। জাপা সূত্র জানিয়েছে, আগের অবস্থান থেকে সরে এখন ৫০ আসন চাওয়া হয়েছে। জাপা সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের হয়ে প্রতিশ্রæতি দেওয়া হয়েছে, যেসব আসন জাপাকে ছাড়া হবে, সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সহায়তা করবে না ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবেন লাঙ্গলের প্রার্থী। আরেকটি সূত্রের ভাষ্য, কিছু আসনে নৌকা প্রার্থীকে নিষ্ক্রিয় রেখে জাপাকে জেতানোর প্রতিশ্রæতি রয়েছে। তবে এতে আশ্বস্ত হতে পারছে না জাপা। আসন সমঝোতার কথা অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলনে মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে দুই দল দৃষ্টান্ত স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উভয়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে। তবুও ভোটারদের আসা, ভোটাধিকার প্রয়োগ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে যাতে ঘাটতি না থাকে, সে বিষয়ে দুই দল মতবিনিময় করে যাচ্ছি; ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত করব। জাপাকে ২০০৮ সালে ২৯, ২০১৪ সালে ৪২ ও ২০১৮ সালে ২৭ আসন ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ। সেখানে নৌকার প্রার্থী ছিল না। এবার কতটি আসন চেয়েছেন প্রশ্নে জাপা মহাসচিব বলেছেন, আসন জনগণের কাছে চাই, কোনো দলের কাছে নয়। আগামী নির্বাচনে ১৫১ আসনের বেশি পাব। কাজেই কেন কোনো দলের কাছে আসন চাইতে যাব? জাতীয় পার্টির ওপর আওয়ামী লীগের আস্থা কমেছে কিনা– প্রশ্নে তিনি বলেন, মঙ্গলবারও আলোচনা হয়েছে দুই ঘণ্টা। এ সময়ে তাদের আচরণে সামান্যতমও আস্থার ঘাটতি বুঝিনি। নির্বাচন করতে এসেছি, নির্বাচন করব; পিছপা হওয়ার জন্য আসিনি। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রশ্নে জাপা মহাসচিব বলেছেন, তাঁর দল তত্ত¡াবধায়ক সরকারে বিশ্বাস করে না। আর সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে না। নির্বাচন হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা