নির্বাচনেও আ’লীগে মেরুর প্রভাব
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভোটের রাজনীতিতে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের প্রচীনতম দুই মেরু উত্তর-দক্ষিণ মেরুর প্রভাব সব সময় রয়েছে। চলতি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সেই একই চিত্র ফুঁটে উঠেছে। যার কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃত্বও উত্তর-দক্ষিণ মেরুর প্রভাবে দুভাগে বিভক্ত। উত্তর মেরুর নেতাকর্মীরা প্রতীক বরাদ্দের পূর্বেই উত্তর মেরুর রাজনীতির দুই নীতি নির্ধারকের পক্ষে অতিউৎসাহী হয়ে ভোটের মাঠ গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে দক্ষিণ মেরুর নেতাকর্মীরা মনোনয়ন চূড়ান্তের পর দীর্ঘদিন নীরব থেকে দলীয় প্রধানের ভোটের উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশে একীভূত হয়েছেন সাথে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও ছিলেন। কিন্তু আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে উত্তর বলয়ের মত অতিউৎসাহিত হয়ে জাপার কোন প্রার্থীকে সমর্থন নয়, মুখ দেখে দলীয় প্রার্থীর পক্ষেই সমর্থন দিয়ে কাজ করবেন। সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটি আসনেই আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী রয়েছে। চারটি আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে রূপগঞ্জ আসনে গোলাম দস্তাগীর গাজী, আড়াইহাজার আসনে নজরুল ইসলাম বাবু, সোনারগাঁ আসনে আব্দুল্লাহ আল কায়সার, ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে এ কে এম শামীম ওসমান মনোনীত হয়েছেন। তবে একটি আসন সদর-বন্দর আসনে কৌশলগত ভাবে আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়নি। যার কারণে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী সেলিম ওসমানকে নিয়ে প্রতীক বরাদ্দের পূর্বেই উত্তর মেরুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল হয়ে উঠে। তাছাড়া উত্তর মেরুর প্রধান নীতিনির্ধারক ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমানত আছেই। তবে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অন্তরে বরাবরই ঘুরপাক খাচ্ছিল দক্ষিণ মেরুর নেতাকর্মীরা কী করবে। তবে দক্ষিণ মেরুর নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগ-জাতীয় পার্টি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন না করায় সদর-বন্দর আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী সেলিম ওসমানকে নিয়ে ভাবছে না। তাছাড়া উত্তর মেরুর প্রধান নীতি নির্ধারক ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমানের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করার বিষয়টিও এখনো খুলাশা করেননি। গত ২০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসে রুদ্ধদার বৈঠকে এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। রুদ্ধদার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ মেরুর প্রধান নীতি নির্ধারক নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী তার সাথে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান দিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবীব, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত। তবে দক্ষিণ মেরুর প্রধান নীতি নির্ধারকের সাথে রুদ্ধদার বৈঠকে জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের এ সকল নেতারা সকল বিষয়েও একাগ্রতা প্রকাশ করেন। কিন্তু ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসন ও সদর-বন্দর আসন নিয়ে দক্ষিণ মেরুর প্রধান নীতিনির্ধারক ও দক্ষিণ মেরুর জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের নেতারা রুদ্ধদার বৈঠকে সিরিয়াস না থাকলেও রূপগঞ্জ গোলাম দস্তাগীর গাজী, আড়াইহাজার নজরুল ইসলাম বাবু, সোনারগাঁ আব্দুল্লাহ আল কায়সার এ সকল আসনে নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে তারা সমর্থন দিয়ে কাজ করার জন্য একাগ্রতা প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়। কিন্তু দক্ষিণ মেরুর নেতারা অন্যান্য আসনে মুখ দেখে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন করলেও উত্তর মেরুর ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে সমর্থনে এখনো কোন রূপ সিদ্ধান্ত নেননি। তবে সিদ্ধান্ত নিলেও খুব কৌশলের সাথেই সিদ্ধান্ত নিবেন দক্ষিণ মেরুর নেতারা। এছাড়া উত্তর মেরুর আরেক নীতি নির্ধারক সদর-বন্দর আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সমর্থনের বিষয়টি দক্ষিণ মেরুর সমর্থন প্রশ্নেই উঠছে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।