যেকোন মূল্যে ভোটার চায় আ’লীগ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথেই নতুন করে আন্দোলনের ঘোষনা দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। এবার নির্বাচনের আগের দিন হতে টানা ৪৮-ঘন্টার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। একদিকে নির্বাচন বর্জনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি অপরদিকে নির্বাচনের দিন সাধারন মানুষের উপস্তিতি কামনা করছেন আওয়ামীলীগসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা। নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বিএনপির হরতালের ঘোষনা জনসাধারন কতটুকু সমর্থন দিবে এনিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষন। তবে, নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বিএনপির হরতালের ডাক জনমনে নতুন করে উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে কোন ধরনের অরাজকতা মেনে নেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জেলা পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু রাখতে যে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতেও পিছপা হবেন না তারা। ভোটারদের নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটারধিকার প্রয়োগে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলেও জেলা পুলিশ প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় সবার দৃষ্টি এখন ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনের দিকে। সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশন কতৃক ঘোষনা অনুযায়ী আগামি ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে। আর এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো দেশবাসীর মত ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষের এখন নির্বাচনকে ঘিরে। নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রশ্ন কি হতে যাচ্ছে নির্বাচনে? এদিকে নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি নতুন দিকে মোড় নিচ্ছে। একদফা দাবি এবং ভোট বর্জনের আহŸানের পূশাপাশি এবার নির্বাচনের আগের দিন হতে টানা ৪৮ ঘন্টার হরতালের ঘোষনা দিয়েছেন বিএনপি। অপরদিকে ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার জন্য নারায়ণগঞ্জে ক্ষমতাসীনদলের এমপি প্রার্থীসহ তৃনমূল বিএনপি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য আহŸান জানিয়ে তাদের প্রচারনা চালাচ্ছেন। সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপি যে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তাতে কতটা উদ্বুদ্ধ হবে, তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা বিএনপি অবশ্য বলছে, তাদের এই আন্দোলনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। আন্দোলনে তারা ক্রমান্বয়ে জনগণের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছেন। তবে আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপির এই আন্দোলনকে পাত্তা দিচ্ছেন না তারা। একই সাথে জনগণও বিএনপিকে ত্যাগ করেছে বলে আওয়ামী লীগের দাবি। জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে এই আন্দোলন যাতে নামসর্বস্ব হয়ে না পড়ে। বাকিটা দেখা যাক। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ হাই জনজীবন ও অফিস-আদালত এবং মানুষের কর্মজীবন স্বাভাবিক রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, “এখানে কোথায় তারা (বিএনপি) জনগণের সমর্থন পেলো? কোন জনগণের সমর্থন তারা পেয়েছে? এদিকে অপর এক বক্তব্যে গিয়াসউদ্দিন বলেছিলেন, শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে, জনগণকে ভোট দিতে না যাওয়া, কর ও সেবার বিল জমা না দেওয়া এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি ভোট বর্জনের আহŸান জানানো হয়। একই সাথে বিএনপির যেসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদেরকেও আদালতে হাজিরা না দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। “অবৈধ সরকারকে অসহযোগিতার বিকল্প নেই। সাতই জানুয়ারির ডামি নির্বাচন বর্জন করুন। আপনারা ভোট কেন্দ্র যাবেন না, এটা আপনার অধিকার। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকুন,” বলছিলেন গিসাস উদ্দিন। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর গত ২৮শে অক্টোবর সমাবেশের পর থেকে দুই-এক দিনের বিরতিতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি পালন করে আসছে। তারা বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিও জানিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা দলটির হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে বর্তমানে অনেকটাই ঢিলেঢালা ভাব চলে এসেছে। বিশেষ করে গত মধ্য নভেম্বরের পর থেকেই ঢাকার পাশ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ জেলা হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জে হরতাল-অবরোধের প্রভাব কমে আসতে থাকে। অপরদিকে বিএনপির আন্দোলনের নামে অগ্নি সন্ত্রাস করে আসছে বিএনপিসহ তাদের নেতৃবৃন্দ এমনটাই অভিযোগ করেন জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। দলীয় নেতৃবৃন্দর সাথে কথা বললে তারা জানান, বিএনপি যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তার প্রতি আসলে দেশের জনগণের কোন সমর্থন নেই। বরং তারা ওই দলটির আন্দোলনের নামে করা নানা ধরনের কর্মকাÐকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলেই আওয়ামী লীগের দাবি। বিএনপির নতুন ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচিকে আওয়ামী লীগ কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে দলটির সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত বাদল বলেন, বিএনপি কি এখন কোনো রাজনৈতিক দল আছে নাকি? তিনি বলেন, “তারা তো রাজনৈতিক দল থেকে আস্তে আস্তে সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়ে গেছে। এই সন্ত্রাসীদের কর্মকাÐ নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের তো ভাবনার কিছু নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য যেসব রাজনৈতিক দল আছে তাদের সম্পর্কে আওয়ামীলীগ চিন্তাভাবনা করতে পারে। কিন্তু বিএনপিকে নিয়ে ভাবার কিছু নেই। তাদেরকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভাববে। দেশে সন্ত্রাস করে কেউ যাতে জনজীবন বিপর্যস্ত করতে না পারে সেই জন্য তারা পদক্ষেপ নেবে। এটা তো আওয়ামী লীগের কোনও বিষয় না। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে যেসব কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে তাতে জনগণের অংশগ্রহণ নেই। জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাÐকে যে তারা(জনগণ) প্রত্যাখ্যান করেছে তা তো রাস্তার চেহারা দেখলেই বোঝা যায়। তাদের হরতাল-অবরোধের নামে যে কর্মসূচি, এগুলো তো জনগণ কোনওটাই মানছে না। সারাদিন তো রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ি। জনজীবন ও অফিস-আদালত এবং মানুষের কর্মজীবন স্বাভাবিক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখানে কোথায় তারা জনগণের সমর্থন পেলো? কোন জনগণের সমর্থন তারা পেয়েছে? কিছু চোর-ডাকাত আর খুনিদের সমর্থন পেয়েছে। ওদের সমর্থন নিয়ে ওরা জঙ্গি সংগঠন হিসেবেই থাকুক।