আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৬:০৮

ভোটার ঠেকাতে জনমত তৈরীতে মাঠে বিএনপি

ডান্ডিবার্তা | ০৬ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনের বাকি রয়েছে আর মাত্র ৩ দিন যাকে ঘিরে এই নির্বাচনকে প্রহসনমূলক ও একতরফা দাবি করে নির্বাচন রুখতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে দেশের সব থেকে বড় বিরোধী দল বিএনপি। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘অসহযোগ’ আন্দোলনের ঘোষণা দিলে ও নির্বাচনের আগমুহুর্ত পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা ‘অসহযোগ’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশের সাধারণ জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে এখন ভোটবিরোধী লিফলেট বিতরণ করছে দলগুলো। এর মাধ্যমে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিকে নতুন বছরে নতুন রূপে ১ জানুয়ারি থেকে কঠোর কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি। তবে শেষ পর্যন্ত সেটির বাস্তবতা মেলেনি। ফের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি বাড়িয়েছে দলটি। ভোটের আগে বিএনপি কী কর্মসূচি দেবে- বিষয়টি এখন পর্যন্ত দলটির নেতাকর্মীদের কাছে স্পষ্ট নয়। কর্মসূচি নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা এখনো ধোঁয়াশায়। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী জানা গেছে, এটি যে পুরোপুরি একটি পাতানো নির্বাচন- সেটি প্রমাণে সবকিছু করবেন তারা। নিজস্ব কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি বিশ্বের গণতান্ত্রিক সব শক্তিকে পাশে পেতে চায় বিএনপি। কর্মসূটি চলমান, নতুন কর্মসূচিও আসবে। তাছাড়া নির্বাচনের বাকি আর মাত্র তিনদিন। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এরই মধ্যে ভোট বর্জন করে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে যাচ্ছে। গত ২০ ডিসেম্বর দলটি নির্বাচনকে ১ তরফা উল্লেখ করে তা বর্জনের ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে দলটি সরকারকে সব ধরনের অসহযোগিতা করতে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে জনসাধারণের প্রতি আহŸান জানিয়েছে। এরপর থেকে বিএনপি নির্বাচন বয়কটের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করছে। তাদের দাবি এই লিফলেট বিতরণের মাধ্যমেই এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটানো হবে। কিন্তু বহু নেতাকর্মী বলছে, দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন রয়েছে বিএনপি যাকে ঘিরে এক পলকও কঠোর আন্দোলণ করতে রাজপথে দেখা যায়নি নারায়ণগঞ্জ বিএনপি হেবিওয়েটের বহু নেতাকে যা নিয়ে চলমান আলোচনা রয়েছে কর্মী সমর্থকদের মাঝে। শেষ পর্যন্ত কি হবে তা নিয়ে হতশাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাছাড়া আজ শনিবার গণমিছিল এবং রবি সোমবার হরতাল ঘোষণা করে বিএনপি। দলীয় সূত্র বলছে, গত ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। প্রতিহত করতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ভোটের মাঠে উত্তাপও ছড়িয়েছিল। ১০ বছর পর এবার দলটি নির্বাচন বর্জন করলেও প্রতিহতের ঘোষণায় যেতে চায় না। জানা গেছে, তাদের ভাবনায় আছে, উত্তাপ না ছড়িয়েই ভোটারদের উপস্থিতি কমানো। নেতাকর্মীরা বলছে, বিএনপি এবার নির্বাচন ঠেকানোর চেয়ে ভোটারদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। রবিবার ভোটের দিনে সরকারবিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি সাধারণ ভোটাররাও যাতে কেন্দ্রে না যায়, সে বিষয়ে জনমত তৈরিকে প্রাধান্য বেশি দেওয়া হচ্ছে। চলমান গণসংযোগে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে দলের সাবেক এমপি ও সিনিয়র নেতাদের এলাকায় গিয়ে গণসংযোগ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য গণসংযোগের কর্মসূচির মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে মূল বড় বড় পদে থাকা নেতারা রাজপথে নেমে আসতে অনীহা প্রকাশ করছে। তাছাড়া ও গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশ পন্ড হয়ে যাওয়ার পর চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল এবং ১২ দফায় ২৪ দিন অবরোধ কর্মসূচি করে বিএনপি। এরপর ভোট ঠেকাতে জনগণকে ভোট বর্জনের পাশাপাশি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। যদিও অসহযোগ আন্দোলনের কার্যকারিতা নিয়ে এরই মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জনগণকে ভোট প্রদানে নিরুৎসাহিত করতে সোমবার পর্যন্ত সারা দেশে ১১ দিন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করে বিএনপি। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের থেকে আলোচনা করে জানা গেছে, জোর কর্মসূচি থেকে সরে আসতে। কারণ মাঠ পর্যায়ের কর্মসূচি বাস্তবায়নকারীরা আর তেমনভাবে সাড়া দিচ্ছে না। এর যৌক্তিক কারণও আছে। তা হচ্ছে, গত দুই মাসের কর্মসূচিতে বেশিরভাগ নেতাকর্মী ঘরছাড়া, হয়রানিতে আছে তাদের পরিবার।
এ অবস্থায় নেতাকর্মীদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ কম। তাই কর্মসূচি দলেও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলে তৃণমূল নেতারা কেন্দ্রে জানিয়েছে। এরপরও জোর করে কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করলেও নির্বাচন ঠেকানো না সম্ভব হবে না বলে দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী মনে করেন। এজন্যই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটারদের কেন্দ্র থেকে নিরুৎসাহিত করার আহŸানের কর্মসূচিই বেছে নিয়েছে বিএনপি। আর নির্বাচনের আগমুর্হুত্ব পর্যন্ত নির্বাচন বর্জনের লিফলেট সকল কর্মসূচিতেই মূল অংশ হিসেবে থাকবেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহŸায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বর্তমানে আমরা দলীয় কর্মসূচি নির্বাচন বর্জনের আহŸান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। আর বর্তমানে ভোটারকে কেন্দ্রমূখী না করতে এটা সব থেকে উর্ধ্বে। আর নির্বাচনের আগমুর্হুত্বে কি ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে সে বিষয়ে নেই আমাদের জানা নেই। কিন্তু যেহেতু এই অবৈধ সরকার তাদের নির্বাচন চালিয়ে যাবে সেই ক্ষেত্রে আরো কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে বলে জানা গেছে। জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, আমরা রাজপথে নিরব আন্দোলণ চালিয়ে যাচ্ছি। যার ফল বর্তমানে দেশের মানুষ ধীরে ধীরে বোঝা শুরু করেছে। তা ছাড়া ও এই নির্বাচন নিয়ে এই সরকারের মনে ভয় সৃষ্টি হয়েছে। যা এখন সাধারন মানুষ বুঝতে পারছে। এই সরকার নির্বাচন করে ও পাড় পেয়ে যাবে না। কারণ আমাদের নেতাকর্মীরা বর্তমানে যাদের ধারেই যাচ্ছে সেখান থেকে ভালো ফিটবেক আসছে। সকলকে ভোট বর্জনের আহŸানে সাড়া দিচ্ছে সাধারন জনগণ। ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, আমাদের ফতুল্লা থানা এলাকায় আমাদের নির্দেশনায় বহু নেতাকর্মী নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ করে আসছে। আর তারা যাদের সাথেই গণসংযোগ করছে তারাই বলছে, মন থেকে বললাম আমরা ভোট দিতে কখনোই যাবো না। বর্তমানে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে ‘অসহযোগ’ আন্দোলনের মূল চাবি কাঠি লাড়া চাড়া দেওয়া হয়েছে। মহানগর যুবদলের আহŸায়ক মনিরুল ইসলাম সজল বলেন, বিএনপি সব সময় দেশের জনগণদের নিয়ে ভাবে সেই ধারবাহিকতায় নির্বাচনের আগে দেশের মানুষ একটি দুরে‌্যাগে পরুক এটা বিএনপি চায় না। যার কারণে ‘অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দিয়ে ও নিরব আন্দোলন নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ। যার ফলাফল অতি শীগ্রই দেশের জনগণ দিয়ে দিবে। জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, এই সরকার বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো করে আরেকটি পাতানো নির্বাচনের দিকে ঝুঁকছে। যার মাধ্যমে এই সরকার বিপদের দিকে ঝুঁকছে, তারা কোনভাবেই নির্বাচন করে পাড় পেয়ে যাবে না। আগামী ৪ বা ৫ জানুয়ারীর মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আরো অনেক কিছু বুঝা যাবে। তা ছাড়া ও এমন ও একটা অবস্থা হতে পারে যে। আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী বলবে আমি শেখ হাসিনাকে চিনি না, আমরা কখনো আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত ছিলাম না এমন বক্তব্যে ও কিছুদিন পর দেশের মানুষ শূনতে পারবে। বর্তমানে আমরা নির্বাচন বর্জন করে লিফলেট বিতরণ করে আসছি সামনে যদি কেন্দ্র আরো কঠিন কর্মসূচি দেয় সেটা ও পালন করবো আমরা রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে। মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহম্মেদ বলেন, এই সরকার এই অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারো ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে কিন্তু এবার দেশের জনগণ অনেকটাই সচেতন কেউ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে নির্বাচিত করবে না। আর বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীরা যাদের কাছেই যাচ্ছে সকলেই বলছে এবার ভোট দিবো না। ভোট না দিয়েই সাধারন জনগণ নিরব আন্দোলনে পরিনত করবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা